কম করে সমুদ্রপৃষ্ঠের প্রায় ১১,০০০ ফুট উপরে অবস্থিত। বইছে হাড় কাঁপানো ঠান্ডা হাওয়া, শীতল মরুভূমিতে ঠিকরে পড়ছে সূর্যের রশ্মি - লাদাখের সেই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিতে একজন সুস্থ মানুষের কমপক্ষে দু'দিন সময় লাগে। কিন্তু সেই শারীরিক প্রতিকূলতাকে জয় করে লেহ'র কুশক বাকুলা রিমপোচী বিমানবন্দরে নামেন ৬৯ বছরের নরেন্দ্র মোদী। বাকি সময়টা দাপিয়ে বেড়ালেন।
চিনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ভারতের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে বিমানবন্দর থেকে নেমে সোজা লেহ'র কাছে ১৪ কোরের সদর দফতর নিমুতে চলে আসেন তিনি। যেখান গালওয়ান উপত্যকার দূরত্ব মোটামুটি ২৫০ কিলোমিটার। মোদীর সঙ্গে ছিলেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) জেনারেল বিপিন রাওয়াত এবং সেনাপ্রধান এম এম নারাভানে। প্রধানমন্ত্রীকে লাদাখে চিনের আগ্রাসী মনোভাব বোঝান কোর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরিন্দর সিং। যিনি চিনের সঙ্গে কোর কমান্ডার বৈঠকে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। মোদীকে পরিস্থিতির বিষয়ে অবহিত করার সময়ে সেখানে ছিলেন নর্দান আর্মি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াই কে জোশীও।
তবে মোদীর লেহ সফরের খবর নয়াদিল্লির অন্দরেও বেশি কেউ জানতেন না। কার্যত কেন্দ্রের কয়েকজন শীর্ষ কর্তা শুধুমাত্র মোদীর লেহ সফরের বিষয়ে জানতেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং জেনারেল বিপিন রাওয়াতের সঙ্গে বৈঠকে মোদীর সফর নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেইমতো শুক্রবার সাতসকালে লেহ পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, লাদাখ এলাকায় গিয়ে চিনকে স্পষ্ট বার্তা দিলেন মোদী। বুঝিয়ে দিলেন, ভারতের ভূখণ্ডের এক ইঞ্চিও ছাড়া হবে না। মোদীর এই সফরে আশ্বস্ত হবে স্থানীয় প্রশাসনও। পাশাপাশি, মোদীর সফরে তিন বাহিনীর মনোবলও অনেক বৃদ্ধি পাবে। যা সীমান্তে চিনা আগ্রাসন রুখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্ট মহলের।
শুধু তাই নয়, ‘দোলনা নীতি’ ছেড়ে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে মোদী স্পষ্ট বার্তা দিলেন, নিজের আগ্রাসী ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডার ঝাও জঙ্গকিকে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় পূর্বাবস্থা ফিরিয়ে আনার কথা বোঝান বা চিনা সেনার আগ্রাসনের ভুগতে হবে।