বিতর্কিত নাগরিক সংশোধনী বিল নিয়ে উত্তাল উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি। বিলের প্রতিবাদে নর্থ ইস্ট স্টুডেন্টস অর্গ্যানাইজেশনের (নেসো) ডাকা ১১ ঘণ্টার সাধারণ ধর্মঘট সমর্থন করেছে অধিকাংশ নাগরিক সমাজ সংগঠন এবং স্থানীয় সংগঠন।
ধর্মঘটের জেরে মঙ্গলবার সকাল পাঁচটা থেকে সাত রাজ্যজুড়ে ব্যাহত হচ্ছে জনজীবন। গুয়াহাটি-সহ অসমের বিভিন্ন জায়গায় পথ অবরোধ করে টায়ার পোড়ানো চলেছে। আপার অসমের কয়েক জায়গায় যানবাহন ভাঙচুরের খবরও পাওয়া গিয়েছে। বন্ধ রয়েছে বেশিরভাগ দোকান-বাজার ও ব্যবসায়ী সংস্থার দফতর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বাতিল করা হয়েছে পরীক্ষা। একাধিক জায়গায় রেল অবরোধ করেছেন বিক্ষোভকারীরা।
বেশ কিছু জায়গায় প্রতিবাদীরা রাস্তায় মিছিল করে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়ালের সমালোচনা করে স্লোগান দিয়েছেন। তাঁদের রোষ থেকে বাদ পড়েননি হেভিওয়েট মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এবং বিজেপি সরকারও।
সোমবার সোনোওয়াল টুইট করেন, ‘বোঝা উচিত যে সিএবি শুধুমাত্র অসম নয়, গোটা ভারতের জন্যই প্রযোজ্য। কিন্তু বিরোধীদের একাংশ ভুল বোঝাচ্ছে যে এর জেরে ফের শুধুমাত্র অসমকেই অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বোঝা বইতে হবে।’
উল্লেখ্য, এ দিনই অসমে অবৈধ অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে ছয় বছরব্যাপী বিক্ষোভে ৮৫৫ জন শহিদের স্মৃতিতে শহিদ দিবস পালিত হয়।
শুধু অসমই নয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও অরুণাচল প্রদেশেও এ দিন বিক্ষোভ প্রদর্শিত হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও ইনার লাইন পারমিটের আওতায় থাকা এই তিন রাজ্য নাগরিক সংশোধনী বিলের এক্তিয়ার থেকে বাদ রাখা হয়েছে।
এ ছাড়াও সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অধীনে থাকা মেঘালয়, ত্রিপুরা ও অসমের স্বায়ত্তশাসিত জেলাগুলিকে বিলের আওতা থেকে বাদ রাখা হয়েছে। এর জেরেই সিএবির কোপ থেকে বাদ পড়েছে অসমের কার্বি আংলং, বোড়োল্যান্ড টেরিটোরিয়াল এরিয়া ডিস্ট্রিক্টস (বিটিএডি) এবং ডিমা হাসাও জেলাগুলি।
বাঙালি অধ্যুষিত অসমের বরাক উপত্যকা অঞ্চল সিএবিকে স্বাগত জানালেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা অঞ্চলে, যা নাগরিক সংশোধনী বিলের আওতায় পড়ছে।
বিলের আওতা থেকে বাদ পড়লেও বিক্ষোভে সক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করেছে মিজোরামের বৃহত্তম ছাত্র সংগঠন মিজো জিরলাই পল। সমগ্র উত্তর পূর্বের সঙ্গে সহমর্মিতার কারণেই এই সিদ্ধান্ত, সোমবার তা জানিয়েন ছাত্র সংগঠনের নেতারা।
বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার বিষয়টি আপাতত স্থগিত রেখেছে মণিপুর পিপল এগেইনস্ট সিএবি। তবে নেসো-এর ডাকে সাড়া দিয়ে ধর্মঘটে শামিল হয়েছে অল মণিপুর স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (আমসু)।