কেন্দ্রের বিরোধী দলের সঙ্গে চরম সংঘাতের আবহের মধ্যেই সরিয়ে দেওয়া হল টুইটার ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর মণীশ মহেশ্বরীকে। তাঁকে সামাজিক মাধ্যম সংস্থা তাদের সানফ্রান্সিস্কোর সদর দফতরে বরিষ্ঠ ম্যানেজার হিসাবে বদলি করে দিয়েছে। কংগ্রেসের সঙ্গে সংঘাতের কারণেই টুইটার তাঁকে ডিরেক্টর পদ থেকে অপসারণ করে মার্কিন মুলুকে বদলি করে দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগেই কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে একাধিক ইস্যুতে সংঘাত বেঁধেছিল টুইটারের ভারতীয় প্রধানের। পরে মণীশের সঙ্গে রাজনৈতিক সংঘাত তখন চরমে ওঠে যখন, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী-সহ একাধিক কংগ্রেস নেতার টুইটার অ্যাকাউন্ট লক করে দেওয়া হয়। গতকালই সংস্থার তরফ থেকে কংগ্রেস নেতাদের টুইটার অ্যাকাউন্ট লক করা নিয়ে টুইটার-কংগ্রেসের সংঘাত চরমে উঠে। সবমিলিয়ে মণীশের জমানায় বিতর্কে জড়িয়েছে টুইটার। সেই কারণেই হয়তো তাঁকে সরে যেতে হল।
চলতি বছরের জুন মাস থেকেই বারবার বিতর্কে জড়িয়েছেন টুইটারের ভারতীয় প্রধান। ওই মাসে গাজিয়াবাদ পুলিশ তাঁকে সমন পাঠিয়েছিল। পুলিশের পাঠানো সমনের বিরুদ্ধে কর্ণাটক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা মণীশ। সেই মামলায় মণীশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ না-করার জন্য পুলিশকে অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেয় আদালত। সেই মামলায় স্বস্তি পেলেও একাধিকবার কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে টুইটার চালানোর নীতি নিয়ে সংঘাতের আবহ তৈরি হয়। শুধু তাই নয়, এর মধ্যেই একাধিক রাজনৈতিক নেতাদের টুইটার অ্যাকাউন্টের ‘ব্লু টিক’ বা ভেরিফিকেশন তুলে নেওয়া নিয়েও বিস্তর জল ঘোলা হয়।
তবে রাজনৈতিক সংঘাত তখন চরমে ওঠে যখন, কংগ্রেসের অফিশিয়াল টুইটার হ্যান্ডেলের পাশাপাশি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ছাড়াও অন্যদের অ্যাকাউন্ট লক করে দেয় টুইটার।সামাজিক মাধ্যম সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয় যে, ওই অ্যাকাউন্টগুলোতে এমন একটি পোস্ট করা হয়েছে, যা তাদের নীতি লঙ্ঘন করেছে। ব্যক্তির গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থেই তাঁদের অ্যাকাউন্ট ব্লক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই রাহুল গান্ধীর টুইটার অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে সাসপেন্ড করেছিল সংস্থা। সেই সময় দিল্লিতে ধর্ষণের শিকার নাবালিকার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎপর্বের পর তাঁদের একটি ছবি টুইটারে পোস্ট করেছিলেন রাহুল। তার জেরেই ব্যবস্থা গ্রহণ করে টুইটার কর্তৃপক্ষ। সেই ঘটনার পরেই কংগ্রেস-টুইটারের মধ্যে সংঘাত চরমে ওঠে। রাহুল গান্ধী অভিযোগ তোলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কাজে হস্তক্ষেপ করছে টুইটার। এই চরম সংঘাতের আবহে বারবার টুইটার ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর মণীশের নাম জড়ায়। সেকারণেই সামাজিক মাধ্যম সংস্থা তাঁকে ডিরেক্টর পদ থেকে অপসারণ করে মার্কিন মুলুকে বদলি করে দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।