১৯৮০ সালে ১২ তম পরীক্ষায় ৮০০ এর মধ্যে ৫৪৭ নম্বর পেয়েছিলেন যুবক। স্বপ্ন ছিল এমবিবিএস হওয়ার। দিয়ে ফেলেন স্বপ্ন উড়ান। সিট পেয়ে যান কলেজে। এরপরই, প্রকাশ্যে আসে বিস্ফোরক তথ্য। জানা গিয়েছে, দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষার জাল মার্কশিট তৈরি করে এমবিবিএসে ভর্তি হয়েছিলেন যুবক। হয়েছিলেন ডাক্তার। প্রায় ৪৪ বছর পর মিথ্যা পরিচয়ের শাস্তি পেলেন তিনি। জেলে যেতে হবে এবার। এটিকে সমাজের বিরুদ্ধে অপরাধ আখ্যা দিয়ে আদালত ওই ডাক্তারকে তিন বছরের জন্য কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে বলে খবর।
সূত্রের খবর, আহমেদাবাদের পালদি এলাকায় থাকেন ওই জাল ডাক্তার। নাম উৎপল প্যাটেল। আহমেদাবাদের উৎপল ১৯৮০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৮০০ এর মধ্যে ৩৯৪ নম্বর পেয়েছিলেন। কিন্তু, এই নাম্বার নিয়ে তো আর ডাক্তারি পড়া যেত না। তাই তিনি ৮০০ এর মধ্যে ৫৪৭ নম্বরের স্কোর করা একটি জাল মার্কশিট তৈরি করেন এবং আহমেদাবাদের বিজে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। অন্যদিকে গুজরাট সেকেন্ডারি এডুকেশন বোর্ড প্যাটেলের মার্কশিট সম্পর্কে জানতে পেরে কলেজকে চিঠি দিয়ে বলেছে যে প্যাটেলের মার্কশিটে কোনও পরিবর্তন হয়নি।
অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর মেডিক্যাল কলেজ মার্কশিট সার্টিফাই করে। গুজরাট মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল সত্যিটা। তখন বোর্ড জানায় যে উৎপল নিজের ক্লাস ১২ এর উত্তরপত্র পুনরায় যাচাইয়ের জন্য আবেদন করেছিলেন, কিন্তু ফলাফলে কোনও পরিবর্তন হয়নি। এরপর জাল মার্কশিটের ভিত্তিতে উৎপল এমবিবিএসে ভর্তি হয়েছেন বলে জানিয়েছে বোর্ড।
উল্লেখ্য, কলেজটি ১৯৯১ সালে শাহবাগ থানায় ওই ডাক্তারের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছিল। মেট্রোপলিটন আদালত ২০২৪ সালে প্যাটেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে তাঁকে বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি এবং চুরির জন্য বিচারের অধীনে ফেলা হয়। প্যাটেলের আইনজীবী আবেদন করেছিলেন যে তাকে কারাগারে সাজা দেওয়া উচিত নয়, অপরাধীদের প্রবেশাধিকার আইনের অধীনে নমনীয়তা এবং সুবিধা দেওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, প্যাটেল একজন চিকিৎসক এবং শহরে একটি ক্লিনিক চালিয়ে সমাজের সেবা করেন। মাত্র ১৭ বছর বয়সে এই অপরাধটি সংঘটিত হয়েছিল তাঁর দ্বারা। এখন তিনি ৬০, পরিবার রয়েছে।
এরপর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পিএন নবীন এই শুনানির সময়, জালিয়াতি ও প্রতারণার জন্য ডাক্তার উৎপল প্যাটেলকে তিন বছরের কারাদণ্ড এবং ৩০,০০০ টাকা জরিমানা করেন এবং চুরির অভিযোগ থেকে মুক্তি দেন। এছাড়াও উৎপলের এই কাজ সমাজের বিরুদ্ধে এবং অন্যরা যাতে এই ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি না করে তা নিশ্চিত করা আদালতের কর্তব্য। আদালত প্যাটেলের জামিনের বন্ডও বাতিল করেছে।