এতদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভিটেয় ফেরার জন্য মরিয়া ছিলেন পরিযায়ীরা। এবার আবারও নিজের রাজ্য থেকে কর্মক্ষেত্রে ফিরছেন তাঁরা। এমনটাই মনে করছেন রেল কর্তারা।
শুক্রবার একটি ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান ভি কে যাদব জানিয়েছেন, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গের মতো যে রাজ্যগুলিতে পরিযায়ী জনসংখ্যা বেশি, সেখান থেকে ছাড়া বিশেষ ট্রেনগুলির ট্রেন্ড অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। যা দেশের অর্থনৈতিক কাজকর্মের ক্রমশ উর্ধ্বমুখী হওয়ার ইঙ্গিতবাহী বলে দাবি তাঁর।
রেলের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যে রাজ্যগুলিতে সবথেকে বেশি সংখ্যক পরিযায়ীরা ফিরেছিলেন, গত ২৬ জুন থেকে আগামিকাল (৩০ জুন) পর্যন্ত সেখান থেকে ছাড়া ট্রেনগুলির আসন ১০০ শতাংশের বেশি ভরতি। বিহার, উত্তরপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গ থেকে মুম্বই, আমদাবাদ এবং বেঙ্গালুরুগামী ট্রেনগুলিতে একটা আসনও ফাঁকা পড়ে নেই।
রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘এটা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক যে কয়েকটি ট্রেন, যেগুলি উলটো পথে উত্তরপ্রদেশ থেকে মুম্বই, বিহার থেকে মুম্বই বা উত্তরপ্রদেশ থেকে গুজরাত বা পশ্চিমবঙ্গ থেকে গুজরাতগামী ট্রেনগুলিতে যাত্রী সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। অর্থনৈতিক পরিস্থিতি যে চাঙ্গা হচ্ছে, তার ইঙ্গিত এটা। আমরা রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে কথা বলছি এবং আগামিদিনে যাত্রী সংখ্যার ভিত্তিতে আমরা আরও বিশেষ ট্রেনের ঘোষণা করব।’
বর্তমানে দিল্লি থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ১৫ জোড়া বিশেষ রাজধানী এক্সপ্রেস চালাচ্ছে রেল। একইসঙ্গে ১০০ জোড়া দূরপাল্লার ট্রেন চালানো হচ্ছে। যে ট্রেনগুলি গত ১ জুন অর্থাৎ আনলকের প্রথম দিন থেকে চলাচল শুরু করেছে। রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান জানান, ওই ট্রেনগুলিতে করেই শ্রমিকরা বেশি নিজেদের কর্মক্ষেত্রের রাজ্যে ফিরছেন।
রেল মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গোরখপুর-বান্দ্রা অবধ এক্সপ্রেস-সহ উত্তরপ্রদেশ থেকে ছাড়া ট্রেনে আগামিকাল পর্যন্ত আসন ভরতির হার ১২১.৬ শতাংশ। গোরখপুর-মুম্বই খুশিনগর এক্সপ্রেসে সেই হার ১০৭.৮ শতাংশ এবং গোরখপুর-আমদাবাদ এক্সপ্রেসে তা ১২১ শতাংশ।
একইভাবে মুজফ্ফরপুর-আমদাবাদ-সহ বিহার থেকে ছাড়া ট্রেনগুলির আসন ভরতির হার ১২৭.৮ শতাংশের বেশি। মুজফ্ফরপুর-বান্দ্রা টার্মিনাল ট্রেনে সেই হার ১১৫ শতাংশ। বিহার থেকে মুম্বই, দিল্লি এবং আমদাবাদগামী অধিকাংশ ট্রেনেই যাত্রীসংখ্যা ১০০ শতাংশেরও বেশি। পশ্চিমবঙ্গের ছবিটাও এক। হাওড়া থেকে দিল্লি, আমদাবাদ, যোধপুর এবং সেকেন্দ্রাবাদগামী ট্রেনগুলির সব আসন ভরতি।
রেলের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখন যে ২৩০ টি স্পেশ্যাল ট্রেন চলছে, তার মধ্যে ৪৩ টির আসন আপাতত (গত ২৬ জুন পর্যন্ত)( ৭৫-১০০ শতাংশ ভরতি, ২৭ টি ট্রেনের ৫০-৭৫ শতাংশ ভরতি হয়ে গিয়েছে এবং ৭৮ টি ট্রেনের সব টিকিট নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে।