বাজেট অধিবেশনের শুরু থেকেই সরকারের বিরুদ্ধে সরব হলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র। যে ভোটাররা বিজেপির উপর ভরসা রেখেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বলে অভিযোগ করলেন তিনি। তাঁর দাবি, কেউই 'আমরা বনাম ওরা'-র মধ্যে থাকতে চান না।
রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের বক্তৃতার ধন্যবাদ জ্ঞাপন প্রস্তাবের বিতর্ক চলাকালীন সোমবার কৃষ্ণনগরের সাংসদ বলেন, 'একজন বিরোধী সদস্য হিসেবে সন্দেহাতীতভাবে আমার এটা বলার অধিকার আছে যে, সরকার হিসেবে আপনাদের (বিজেপির) মনুষ্যত্বের অভাব আছে।'
মহুয়া দাবি করেন, ২০১৪ সাল ও ২০১৯ সালে তিনি বিজেপিকে ভোট দেননি। কারণ বিজেপির মতাদর্শ, প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রথম থেকেই তাঁর মনে সন্দেহ জেগেছিল। মহুয়ার কথায়, 'সত্যিটা হল, যে ভোটাররা আপনাদের ভোট দিয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গেই আপনারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন।'
গত দুটি লোকসভা ভোটে বিজেপির পক্ষে যে ভোট পড়েছিল, তার পুরোটাই মোটেই হিন্দুত্ববাদীদের ভোট ছিল না বলে দাবি তৃণমূল সাংসদের। বরং ২০১৪ সালে যে ৩১ শতাংশ ও ২০১৯ সালে ৩৭ শতাংশ মানুষ গেরুয়া বিজেপির পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন, তাঁদের বড় অংশ সাধারণ মানুষ ছিলেন। ছিলেন মধ্যবিত্তরাও। মহুয়ার দাবি, বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক মনোভাব থাকলেও তা দূরে সরিয়ে রেখে তাঁরা বিজেপির 'সবকা সাথ, সবকা বিকাশ' স্লোগানে ভরসা রেখেছিলেন। কট্টর হিন্দুর সমর্থক না হয়েও বিজেপির উপর ভরসা রেখেছিলেন।
একইভাবে যুব সম্প্রদায়, ছোটো ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও নরেন্দ্র মোদী সরকার বিশ্বাসঘাতকতা করেছে বলে অভিযোগ করেন মহুয়া। তিনি বলেন, 'যে যুব ভোটাররা নিজেদের প্রথম চাকরির খোঁজে ছিলেন, তাঁদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা হয়েছে। নোটবাতিলের মাধ্যমে বাজার ধ্বংস করে দিয়ে ছোটো ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও বিশ্বাসঘাতকতা করেছে সরকার।'
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) নিয়েও বিজেপি সরকারকে তোপ দাগেন মহুয়া। তিনি বলেন, 'ম্যাকিইউভেলিউন ধাঁচে প্রথমে চিহ্নিত, তারপর বঞ্চিত ও পরে নির্মূল করার পন্থা হল সিএএ,এনআরসি ও এনপিআর। যাঁরা আপনাদের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গে এটা সবথেকে বড় বিশ্বাসঘাতকতা। কেউই এই আমরা বনাম ওরা বিতর্ক জড়াতে চান না। আপনাদের নজরদারিতে তাঁদের নামে যা হচ্ছে তাতে আমার যে বন্ধুরা ২০১৪ সালে বিজেপির পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন, তাঁরাও সন্ত্রস্ত।'