মোহন রাজপুত ও কল্যাণ দাস
এতদিন বিভিন্ন সীমান্তে নিজেদের জোর ফলানোর চেষ্টা করছে নেপাল। আর এবার উত্তরাখণ্ডের ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’-এ রীতিমতো কাঠামো বানিয়ে ফেলল সেদেশের মানুষ। ১০০-১৫০ মিটারের ওই এলাকাটি নিজেদের দাবি করে তারা ভারত-বিরোধী স্লোগান তোলা হয় বলে অভিযোগ করেছেন ভারতীয় আধিকারিকরা।
তনকপুরের এক প্রশাসনিক আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই বিতর্কিত জায়গাটি কার এবং সীমান্ত নির্ধারণের জন্য ভারত ও নেপালের যৌথ দল গঠন করা হয়েছিল। সেই দলটি এলাকার জরিপ করত। কিন্তু তার আগেই করোনাভাইরাস মহামারীর প্রকোপে সেই পরিকল্পনা স্থগিত হয়ে যায়।
তারইমধ্যে গত বুধবার তার লাগানোর জন্য ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’-এ ১৫-১৮ টি কাঠামো পুঁতে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় প্রশাসনের আধিকারিকরা। কিন্তু নেপালের বাসিন্দারা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। ভারত বিরোধী স্লোগানও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। উত্তেজনা প্রশমনে পরে দু'দেশের সুরক্ষা বাহিনীরআধিকারিকরা বৈঠকে বসেন।
তনকপুরের মহকুমা শাসক দয়ানন্দ সরস্বতী জানান, কাঠামো লাগানোর খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান সশস্ত্র সীমা বলের (এসএসবি) আধিকারিকরা। খবর দেওয়া হয় জেলা প্রশাসনকে। মহকুমা শাসক বলেন, ‘চম্পাবত জেলার তনকপুর ব্যারেজ এবং ৮১১ পিলারের কাছে কয়েকটি কাঠামো বানিয়ে নেপালের বাসিন্দারা নো ম্যানস ল্যান্ডে জবরদখল করেছে বলে দেখা যায় এবং নিজেদের এলাকা বলে দাবি করে। ওই এলাকাটি নেপালের ব্রক্ষ্মদেব এলাকার কাছে। যেখানে একটি ছোটো বাজার আছে।’
এসএসবি কমান্ড্যান্ট আর কে ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, কাঠামোগুলি স্থায়ী নয়। সেগুলি সাধারণ কংক্রিট এবং কাঠের। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সেগুলি তুলে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে নেপালের সশস্ত্র বাহিনী। যদিও বৈঠকে উপস্থিত এক এসএসবি আধিকারিক জানান, মুখে কাঠামো সরিয়ে নেওয়ার কথা বললেও আদতে কোনও কাজ করা হয়নি। শুক্রবারও নেপালের লোকজনদের পিলারের উপর তার বসাতে দেখা গিয়েছে। 'নো ম্যানস ল্যান্ড' থেকে কাঠামোর তুলে নেওয়ার কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন ওই আধিকারিক।
এক বক্তব্য স্থানীয় এক পুলিশ আধিকারিকের। তিনি বলেন, ‘পুলিশ এবং প্রশাসনের সমর্থনেই নেপালের স্থানীয় বাসিন্দারা কাঠামো তোলার সম্ভাবনা রয়েছে। এসএসবি জওয়ানদের প্রতি ওদের (স্থানীয়দের) উত্তেজিত ভাব দেখে মনে হচ্ছে, তাদের পিছনে প্রশাসনের সমর্থন রয়েছে। এমনকী যখন নেপালের সশস্ত্র বাহিনী আমাদের আশ্বাস দিচ্ছিল যে কয়েকদিনের সেই কাঠামো তুলে নেওয়া হবে, ওরা (স্থানীয়রা) কাঠামো লাগাতে ব্যস্ত ছিল।’
চম্পাবতের পুলিশ সুপার লোকেশ্বর সিং জানিয়েছেন, শুক্রবার দু'পক্ষ আলোচনায় বসেনি। বিষয়টি আপাতত এসএসবির হাতে রয়েছে। কিন্তু আশ্বাস মতো কাঠামো সরানো না হলে দু'দেশের আধিকারিকরা কথা বলবেন।