নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন হল আজ। আজকের অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতিকে আমন্ত্রণ না জানানোর প্রতিবাদে বয়কটের ডাক দিয়েছে বিরোধী দলগুলি। তবে তারই মাঝে ভারতীয় রীতি ও ঐতিহ্য মেনে অনুষ্ঠান হয় নয়া সংসদ ভবনে।
নির্মাণকর্মীদের সম্মান জানিয়ে ডিজিটাল গ্যালারি
মোদী বলেন, ‘এই সংসদ ভবনটিকে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা এবং অত্যাধুনিক গ্যাজেট দিয়ে সাজানো হয়েছে। এই ভবন নির্মাণে ৬০ হাজারেরও বেশি শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। তাদের কঠোর পরিশ্রমকে সম্মান জানাতে আমরা একটি ডিজিটাল গ্যালারি তৈরি করেছি।’
‘বাড়বে সাংসদ সংখ্যা’
মোদী বলেন, 'নতুন সংসদের প্রয়োজন ছিল। আগামী সময়ে সাংসদদের সংখ্যা বাড়বে। সেটাও দেখতে হবে আমাদের। সেজন্য এখনই নতুন সংসদ তৈরি করতে হত।'
'জনগণের উন্নয়নই আমাদের অনুপ্রেরণা'
মোদী বলেন, ‘পঞ্চায়েত ভবন থেকে সংসদ ভবন পর্যন্ত, আমাদের দেশ এবং এর জনগণের উন্নয়নই আমাদের অনুপ্রেরণা। আজ এই নতুন সংসদের নির্মাণে আমরা গর্বিত। আবার গত ৯ বছরে দেশের ৪ কোটি দরিদ্র মানুষের জন্য বাড়ি এবং ১১ কোটি টয়লেট নির্মাণের কথা ভাবলেও আমি অপরিসীম তৃপ্তি পাই। আমরা যখন নতুন সংসদে আধুনিক সুযোগ-সুবিধার কথা বলি, তখন আমি সন্তুষ্ট বোধ করি। আূাপ আমি এটা ভেবেও সন্তুষ্ট যে আমরা দেশের গ্রামগুলোকে সংযুক্ত করতে ৪ লাখ কিলোমিটারের বেশি রাস্তা তৈরি করেছে এই সরকার।’
'ঔপনিবেশিক মানসিকতাকে পেছনে ফেলেছে ভারত'
নতুন সংসদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘বেশ কয়েক বছরের বিদেশি শাসন আমাদের থেকে আমাদের গর্ব কেড়ে নিয়েছিল। আজ ভারত সেই ঔপনিবেশিক মানসিকতাকে পেছনে ফেলে এসেছে।’
‘ভারতের গণতন্ত্রকে দেওয়া দেশবাসীর উপহার’
মোদী বলেন, ‘স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে অমৃত মহোৎসব পালন করছি আমরা। এই অমৃতকালে ভারতের জনগণ দেশের গণতন্ত্রকে এই সংসদ ভবন উপহার দিয়েছেন। স্বনির্ভর ভারতের উত্থানের সাক্ষী হবে এই নতুন সংসদ ভবন।’
লোকসভায় প্রবেশ মোদীর
বেলা ১২টার পর নয়া সংসদ ভবনের লোকসভা কক্ষে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তখন তাঁর সঙ্গে ছিলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। নিজেদের আসনে বসেছিলেন সাংসদরা। মোদী অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করতেই ওঠে ‘মোদী মোদী’ রব।
'মন কি বাতের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির সূচনা'
মন কি বাত অনুষ্ঠানের ১০১তম পর্বে আজ প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, ‘আজকের পর্ব মন কি বাত অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় সেঞ্চুরির সূচনা।’ আজকে অনুষ্ঠানের শুরুতেই অরুণাচলপ্রদেশ এবং বিহারের দু'জন যুবকের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
‘ক্ষমতায়নের আঁতুড়ঘর হয়ে উঠুক এই সংসদ ভবন’
আজ নয়া সংসদ ভবনের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘ক্ষমতায়নের আঁতুড়ঘর হয়ে উঠুক এই নয়া সংসদ ভবন। আশা করছি এই সংসদ ভবন দেশের স্বপ্নকে প্রজ্বলিত করবে এবং সেগুলিকে বাস্তবে রূপ দেবে।’
নয়া সংসদ ভবন উদ্বোধন মোদীর
লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে পাশে নিয়ে নয়া সংসদ ভবনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ৬৪,৫০০ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে তৈরি হয়েছে। ভবনটি চারতলা।
সর্বধর্ম প্রার্থনায় মোদী
প্রধানমন্ত্রী মোদী, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এবং বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা যোগ দিলেন সর্বধর্ম প্রার্থনায়।
লোকসভায় সেঙ্গল প্রতিষ্ঠা করলেন মোদী
আজকে সংসদ ভনের উদ্বোধনের আগে সেঙ্গলের সামনে সাষ্ঠাঙ্গে প্রণাম করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরে লোকসভার স্পিকারের আসনের পাশে সেই সেঙ্গল প্রতিষ্ঠিত করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এতদিন প্রয়াগরাজের জাদুঘরে রাখা ছিল একটি সোনার রাজদণ্ড।
যজ্ঞে বসেছেন মোদী
শুরু হয়ে গেল নয়া সংসদ ভবনের উদ্বোধনের আচার অনুষ্ঠান। শুরুতেই যজ্ঞ ও পুজো করা হচ্ছে। সেখানে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার সঙ্গে উপস্থিত রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
দুপুর আড়াইটের সময় ভাষণ দেবেন মোদী
আজকের অনুষ্ঠান শেষ হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণের মাধ্যমে। দুপুর আড়াইটে নাগাদ প্রধানমন্ত্রী মোদী নতুন সংসদ ভবনে ভাষণ রাখতে পারেন বলে জানা যাচ্ছে।
নয়া কয়েন ও স্ট্যাম্প উন্মোচন
এরপর লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা বক্তৃতা পেশ করবেন। সংসদ ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে একটি কয়েন এবং একটি স্ট্যাম্প উন্মোচন করা হবে।
রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতির বার্তা পাঠ করা হবে
তথ্যচিত্র প্রদর্শনীর পর রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতির বার্তা পাঠ করবেন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতারও এই সময় বক্তৃতা দেওয়ার কথা। তবে কংগ্রেস এই অনুষ্ঠান বয়কট করায় তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
তথ্যচিত্র প্রদর্শনী
এরপর দুপুর ১২টার সময় আজকের অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় ভাগের সূচনা হবে। সেই সময় দু'টি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হবে।
সকাল সাড়ে ৯টার সময় শুরু হবে প্রার্থনা
সকাল সাড়ে ৯টার সময় শুরু হবে প্রার্থনা। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন আদি শঙ্করাচার্য, বিভিন্ন মঠের সাধু এবং পণ্ডিতরা। এই প্রার্থনা অনুষ্ঠানে আদি শিব এবং আদি শঙ্করাচার্যের পুজো করা হতে পারে।
নয়া সংসদ ভবনের আসন সংখ্যা
নতুন সংসদ ভবনে লোকসভায় ৮৮৮ জন এবং রাজ্যসভায় ৩০০ জন সদস্য বসতে পারবেন। উভয় কক্ষের যৌথ সভার ক্ষেত্রে, মোট ১ হাজার ২৮০ জন সদস্যকে স্থান দেওয়া যাবে লোকসভাতেই।
কেন বিতর্ক?
কয়েকদিন আগে লোকসভার সচিবালয় থেকে সংসদ ভবন উদ্বোধন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে অনুরোধ পাঠানো হয়। এরপরই রাহুল গান্ধী দাবি তোলেন, প্রধানমন্ত্রী নয়, বরং রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে সংসদ ভবনের উদ্বোধন করানো উচিত। তারপর অন্যান্য বিরোধী নেতারাও এই একই দাবি তোলেন। এর আগে সংসদ ভবনের ওপরে থাকা অশোকস্তম্ভ নিয়েও জোর বিতর্ক হয়েছিল। সেই স্তম্ভের সিংহগুলি 'হিংস্র' বলে অভিযোগ করা হয়। এই নিয়ে মামলা করা হয় আদালতে। তবে আদালতের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, সংসদভবনের মাথায় বসানো অশোক স্তম্ভের সিংহ বেআইনি নয়। এই সিংহের আত্মপ্রকাশ হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরেই।
আজকের অনুষ্ঠান বয়কট ১৯টি দলের
আজকে নয়া সংসদ ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠান বয়কটের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল, আম আদমি পার্টি সহ ১৯টি বিরোধী দল। কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি, তৃণমূল কংগ্রেস, দ্রাবিড় মুন্নেত্র কাজগম (ডিএমকে), বামদলগুলি, রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি), জনতা দল-ইউনাইটেড (জেডিইউ), জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি), সমাজবাদী পার্টি, উদ্ধব ঠাকরের শিব সেনা যৌথভাবে এক বিবৃতি পেশ করে বয়কটের ঘোষণা করে।
সেঙ্গল তৈরি হয় তামিলনাড়ুতে
এই রাজদণ্ডটি তৈরি তৈরি করা হয়েছিল তামিলনাড়ুতেই। রাজাগোপালচারী এই সেঙ্গল তৈরির জন্য ‘তিরুভাদুথুরাই আথিনাম’ মঠের গুরুর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। পরে ভুমিদি বঙ্গারু চেট্টার নামক এক জহুরিকে এই সেঙ্গল তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় মঠের তরফে। এই সেঙ্গলটি পাঁচ ফুট উঁচু। এর মাথায় আছে ন্যায়বিচারের প্রতীক তথা শিবের বাহন ‘নন্দী’।
‘সেঙ্গল’ শব্দটি তামিল শব্দ ‘সেম্মাই’ থেকে এসেছে, যার অর্থ ‘ন্যায়’
উল্লেখ্য, ‘সেঙ্গল’ শব্দটি তামিল শব্দ ‘সেম্মাই’ থেকে এসেছে, যার অর্থ ‘ন্যায়’। এর আগে দক্ষিণের চোলা রাজবংশে এভাবে রাজদণ্ড প্রদান করে রাজ্যাভিষেক হত বা ক্ষমতা হস্তান্তর হত। লর্ড মাউন্টব্যাটেন যখন নেহরুকে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রকীক নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন, তখন এই সেঙ্গল হস্তান্তরের কথা ওঠে। নেহরু এই নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন সি রাজাগোপালচারীকে। তখন এই তামিল ঐতিহ্যের কথা নেহরুকে জানিয়েছিলেন 'রাজাজি'। সেই প্রথা মেনেই পরে ভারতের ক্ষমতার ভার ব্রিটিশদের থেকে নেহরুর হাতে তুলে দিয়েছিলেন মাউন্টব্যাটেন।
সেঙ্গল প্রতিষ্ঠার আচার-অনুষ্ঠান
জানা গিয়েছে, যখন প্রধানমন্ত্রী মোদী নতুন সংসদ ভবনে এই সেঙ্গল প্রতিষ্ঠিত করবেন, তখন বেশ কয়েকজন তামিল সঙ্গীতজ্ঞ 'নদস্বরম' নামক এক বাদ্যযন্ত্র বাজাবেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীর হাতে সেই রাজদণ্ড থাকবে, তখন মোদীর পাশাপাশে সেই সঙ্গীতজ্ঞরাও হাঁটবেন। সেই সময় লোকসভায় উপস্থিত থাকবেন তামিল শৈব মঠের পুরোহিতরা। সেই পুরোহিতরা পবিত্র জল ছিটিয়ে দেবেন সেঙ্গলের ওপর। সেই সময় তামিল গায়করাও রীতি মেনে গান গাইবেন।
স্বাধীনতার প্রতীক: সেঙ্গল
১৯৪৭ সালে যখন ভারত স্বাধীনতা লাভ করে, তখন স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে এই সেঙ্গল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহলরলাল নেহরুর হাতে তুলে দিয়েছিলেন ভারতের শেষ ভাইসরয় লর্ড মাউন্টব্যাটেন। এই সোনার রাজদণ্ডটি এতদিন রাখা ছিল এলাহাবাদ জাদুঘরে। তবে আজ এই রাজদণ্ডটি নতুন সংসদভবনে প্রতিষ্ঠিত করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
মোদীর হাতে সেঙ্গল প্রতিষ্ঠা
এতদিন প্রয়াগরাজের জাদুঘরে রাখা ছিল একটি সোনার রাজদণ্ড। সেই রাজদণ্ডই এবার প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হবে দেশের নতুন সংসদভবনে। এই সোনার রাজদণ্ডের একটি ইতিহাস রয়েছে। ভারতের স্বাধীনার অধ্যায়ে এই রাজদণ্ডের এক বিশাল বড় ভূমিকা রয়েছে।
সেঙ্গল কখন প্রতিষ্ঠা করা হবে?
যজ্ঞ এবং পুজো সম্পন্ন হওয়ার পর সকাল সাড়ে আটটা থেকে শুরু হবে সংসদ ভবনে 'সেঙ্গল' প্রতিষ্ঠা করার আচার অনুষ্ঠান। সকাল সাড়ে আটটায় শুরু হবে সেঙ্গল প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠান। চলবে ৯টা পর্যন্ত।
আজকে উদ্বোধন করা হবে ভারতের নতুন সংসদ ভবনে
আজকে উদ্বোধন করা হবে ভারতের নতুন সংসদ ভবনের। সকাল সাড়ে সাতটা থেকেই শুরু হবে আচার অনুষ্ঠান। সংসদ ভবনের সামনে অবস্থিত গান্ধী মূর্তির পাদদেশে যজ্ঞ এবং পুজোর মাধ্যমে আজকের অনুষ্ঠান শুরু হবে। এই সময়ে সেখানে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা, রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান এবং অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা।