মার্কিন কংগ্রেসে দাঁড়িয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, 'সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে কিন্তু-পরন্তু নয়'। পরে সন্ত্রাসবাদ ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছিল মোদী ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনেরও। স্বভাবতই পাকিস্তানের মদতে চলতে থাকা সন্ত্রাবাদের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে। পরে যৌথ বিবৃতিতে দুই নেতাই পাকিস্তানকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, 'সেদেশের মাটি যেন সন্ত্রাসবাদের জন্য ব্যবহার না করা হয়। এবং তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব পাক সরকারেরই।' আর এরপরই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠল ইসলামাবাদ। মোদী-বাইডেনের যৌথ বিবৃতির বিরোধিতা করে পালটা তোপ দাগে পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক। (আরও পড়ুন: ‘আওয়ামি লিগ থাকতে ভারত ভাঙতে দেব না’, বাংলাদেশের সংসদে বললেন হাসিনার দলের সাংসদ)
মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে পার বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, 'এই বিবৃতি অযৌক্তিক, একতরফা এবং বিভ্রান্তিকর। এই বিবৃতি কূটনৈতিক নীতির পরিপন্থী।' এদিকে আমেরিকাকে তোপ দেগে পাকিস্তানের তরফে বলা হয়, 'আমরা আমেরিকাকে সন্ত্রাস দমনে সহযোগিতা করি।' এর আগে মোদী-বাইডেনের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়ছিল, 'তাঁরা সীমান্তপার সন্ত্রাসবাদ, প্রক্সি জঙ্গিদের ব্যবহারের নিন্দা জানিয়েছেন কঠোরভাবে। পাকিস্তানকে অবিলম্বে এই ক্ষেত্রে পদক্ষেপ করা উচিত। তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন কোনও অঞ্চল যাতে সন্ত্রাসী হামলার জন্য ব্যবহার করা না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে দুই রাষ্ট্রপ্রধান।'
আরও পড়ুন: '...ভাগ হয়ে যেতে পারে ভারত', মোদীর মার্কিন সফরকালে বিস্ফোরক ওবামা
উল্লেখ্য, ঐতিহাসিক ভাবে ১৯৬০-এর দশক থেকেই ভারতের থেকে পাকিস্তানেরই বেশি ঘনিষ্ঠ ছিল আমেরিক। তবে চলতি শতাব্দীর গোড়ার দিক থেকে আস্তে আস্তে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। ওবামা জমানা থেকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর হয় আমেরিকার। সেই সম্পর্ক বিগত কয়েক বছরে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। এদিকে পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রমেই দূরত্ব বেড়েছে আমেরিকার। এই আবহে পাকিস্তান সমর্থিত সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ভারত-আমেরিকার যৌথ বিবৃতি প্রকাশে অস্বস্তিতে পড়েছে ইসলামাবাদ।
এর আগে মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে মোদী সন্ত্রাসবাদ নিয়ে সরব হয়েছিলেন। ভাষণে আমেরিকার ৯/১১ থেকে মুম্বইয়ের ২৬/১১ হামলার উল্লেখ করেন মোদী। তিনি বলেন, 'কট্টরপন্থা এবং সন্ত্রাসবাদ এই বিশ্বের জন্য এক বড় হুমকি। ধর্মীয় কট্টরপন্থার এই নীতি নতুন মোড়কে সামনে আসছে। তবে এদের উদ্দেশ্য একটাই। সন্ত্রাসবাদ মানবজাতির শত্রু। এই ইস্যু মোকাবিলার ক্ষেত্রে কোনও কিন্তু-পরন্তু চলে না। যে যে শক্তি সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে এবং সন্ত্রাসবাদের রফতানি করে তাদের দমন করতে হবে।'