সংসদে বিরোধীরা একত্রিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। আর তাতে চাপে পড়েছে বিজেপি। ইস্যু মণিপুরকে নিয়ে আজ, সোমবার সকাল থেকে সংসদের বাইরে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্লোগান তোলা হয়। স্লোগান সপ্তমে তোলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অন্যান্য সাংসদরা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন অন্যান্য বিরোধী দলের সাংসদরা। ফলে সরগরম হয়ে ওঠে জাতীয় রাজনীতি। এই অবস্থা দেখে বিজেপি রাজস্থান, বাংলা এবং ছত্তিশগড় নিয়ে পাল্টা সোচ্চার হন। আজ বিরোধীরা যখন সংসদে মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে ধরনা দিচ্ছেন, তখন দেখা যায় বিজেপি সাংসদরা রাজস্থানে মহিলা অত্যাচারের বিরুদ্ধে গান্ধী মূর্তির তলায় স্লোগান দিচ্ছেন। বাংলা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা।
এদিকে মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে আসার জন্য স্লোগান তোলা শুরু হয়। এই আবহে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আক্রমণের সুরে বলেন, ‘আমরা যে ভিজ্যুয়ালগুলি দেখেছি সেটা অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। ১৫০০ কোটি টাকা খরচ করে নয়া সংসদ ভবন গড়েছে এই সরকার। আপনারা সাধারণ মানুষের টাকা আটকে রাখেন। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) সংসদে আলোচনা চান না। সরকার দৃষ্টি অন্যদিকে সরানোর চেষ্টা করছে। ডাবল ইঞ্জিন সরকার অযোগ্য।’ বিরোধী সাংসদদের ধরনায় দেখতে পাওয়া পোস্টারগুলিতে লেখা রয়েছে, ‘ইন্ডিয়া মণিপুরে সুবিচার চায়’। উল্লেখযোগ্য দৃশ্য দেখা যায়, বিরোধীদের ধরনায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, অধীররঞ্জন চৌধুরীকেও।
অন্যদিকে আজ, সোমবার মণিপুর নিয়ে আলোচনার দাবিতে সংসদের দুই কক্ষেই নোটিশ দেন বিরোধীরা। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের সঙ্গে বাক–বিতণ্ডার পর রাজ্যসভার অধিবেশন স্থগিত করে দেন চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়। লোকসভা চললেও সেখানে মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির দাবিতে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিরোধী সাংসদরা। এমন দৃশ্য লোকসভা নির্বাচনের আগে সত্যি চাপের। বিজেপি এই চাপ কেমন করে কাটাবে সেটা দেখার বিষয়। কোনও ইস্যুই বিজেপির ধোপে টিকছে না।
আরও পড়ুন: লোকাল ট্রেনের দেরি সংস্কৃতিতে ক্ষুব্ধ যাত্রীরা, প্রতিবাদে খড়গপুরে রেল অবরোধ
আর কে, কি বলেছেন? মণিপুর ইস্যু নিয়ে আজ বিজেপিকে চেপে ধরেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘মণিপুর যদি শান্তই হবে, তবে সেখানে ইন্টারনেট বন্ধ রাখতে হয়েছে কেন? আপনাদের যদি মনে হয়, মণিপুরের অবস্থা বাংলার থেকে ভাল, তাহলে ইন্টারনেট চালিয়ে দিন। সিঙ্গল ইঞ্জিন সরকারের রাজ্যে ইন্টারনেট দিব্যি চলছে। ডবল ইঞ্জিন সরকারের রাজ্যে ইন্টারনেট চলছে না কেন?’ অধীর টৌধুরীর কথায়, ‘প্রধানমন্ত্রী সংসদের ভিতরে মণিপুর নিয়ে মুখ খুলুন।’ প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, ‘আমরা সংসদে আলোচনার জন্য প্রস্তুত। কিন্তু বিরোধীরা শুধু প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করছেন।’ চাপে পড়ে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী বলেন, ‘আমরা বিরোধীদের অনুরোধ করছি, আপনারা সংসদে আসুন।’ আর বাইরে স্লোগান উঠেছে, ‘প্রধানমন্ত্রী সদন মে আও’।