তিনটি প্রস্তাবিত ফৌজদারি আইনের নাম হিন্দিতে দেওয়া অসংবিধানিক নয়, বেশ কয়েকটি বিরোধী রাজনৈতিক দলের বিরোধিতা খারিজ করে দিয়ে এই কথা জানিয়েছে, সংসদীয় প্যানেল। বিজেপি সাংসদ ব্রিজলালের নেতৃত্বে স্বরাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় কমিটি সংবিধানের ৩৪৮ অনুচ্ছেদের উল্লেখ করে বলেছে, সুপ্রিম ও হাইকোর্ট এবং অন্যান্য আইন, বিলের নথির ভাষা হবে ইংরাজি।
সংসদীয় প্যানেল ইতিমধ্যে রাজ্যসভায় তাদের রিপোর্টটি পেশ করেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, সংহিতার (আইনগুলির) টেক্সট ইংরাজিতে রয়েছে, যা সংবিধানের ৩৪৮ অনুচ্ছেদকে লঙ্ঘন করে না। এই কমিটি আরও জানিয়েছে, এই আইনগুলির জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রস্তাবিত নামও সংবাধিনাকে লঙ্ঘন করছে না।
ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম, এই তিন আইন গত ১১ আগস্ট লোকসভায় পেশ করা হয়।
প্রস্তাবিত আইনগুলি যথাক্রমে ভারতীয় দণ্ডবিধি, ১৮৬০, ফৌজদারি কার্যবিধি আইন, ১৮৯৮ এবং ভারতীয় সাক্ষ্য আইন, ১৮৯২-কে প্রতিস্থাপন করবে।
এই নাম পরিবর্তনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা পি চিদম্বরম। তিনি বলেন, ‘আমি বলছি না হিন্দি নাম দেওয়া উচিত নয়। ইংরাজিতে ব্যবহার করা হলে এর একটি ইংরাজি নাম দেওয়া যেতে পারে। আবার হিন্দি ব্যবহার করা হলে, এর একটি হিন্দি নাম দেওয়া যেতে পারে। যখন আইনের খসড়া তৈরি হয়, তখন তা ইংরাজিতে করা হয়। পরে তা হিন্দিতে অনুবাদ করা হয়। কিন্তু কেন্দ্র ইংরাজিতে নথি তৈরি করে তার হিন্দি নাম দিয়েছে যা উচ্চারণ করাও বেশ কঠিন।’
তামিলনাড়ুর শাসকদল ডিএমকে প্রস্তাবিত ফৌজদারি আইনের হিন্দি নাম ব্যবহারের বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি জানিয়েছিল।
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন একে ‘ভাষা সাম্রাজ্যবাদ’ মন্তব্য করেছেন। ‘মাদ্রাজ বার অ্যাসোসিয়েশন’ হিন্দিতে তিনটি বিলের নামকরণের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের পদক্ষেপকে সংবিধানের বিরোধী বলেছে। এ ব্যাপারে সমিতি একটি প্রস্তাবও পাস করেছে।
ডিএমকে সাংসদ দয়ানিধি মারান সংসদীয় প্যানেলের চেয়ারম্যান ব্রিজলালকে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। তিনি বিলগুলির হিন্দি নামে আপত্তি জানিয়ে বলেন, এই নামকরণের মধ্যে দিয়ে দেশে বাস্তবতাকে অস্বীকার করা হচ্ছে। যেখানে নাগরিকরা হিন্দি ছাড়া বিভিন্ন ভাষায় কথা বলে।
তবে, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান স্টালিনের বক্তব্যকে ‘তুচ্ছ রাজনীতি’ বলে অভিহিত করেছেন।