এমন একটা পৃথিবীর কথা ভাবুন তো, যেখানে সব কাজ করছে রোবটেরা, চাষাবাদ থেকে শুরু করে রান্নাঘরের কাজ পর্যন্ত৷ খাদ্য শিল্পে রোবটের ব্যবহার নতুন কিছু নয়৷ তারা গাছ থেকে বাদাম পাড়ে, খারাপ ফল বাছাই করে, এমনকি খাবারও তৈরি করে৷
রোবট কি সব দায়িত্ব নিয়ে নেবে? এদেরকে আরও বেশি কর্মক্ষম করে তোলা হচ্ছে৷ কিন্তু তারা কি মানুষের মতো পারদর্শী? আর মানুষের প্রয়োজনে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে? রোবট বিজ্ঞানী মারভিন বেকার বলেন, ‘এটা নির্ভর করে কী করানো হচ্ছে তাদের দিয়ে তার ওপর, মানে এমন অনেক দিক আছে, যেগুলোতে রোবট মানুষের চেয়ে উন্নত৷ অর্থাৎ তারা ক্লান্ত হয় না এবং ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে পারে৷ এদিক থেকে রোবট অনেক এগিয়ে৷ এছাড়া অনেক কাজেও রোবট মানুষের চেয়ে ভালো৷ যেমন, কারখানায় একটা জিনিস তুলে আরেক জায়গায় রাখার ক্ষেত্রে৷ তারা দ্রুততর ও বেশি নিখুঁত৷''
খাদ্যশিল্পে রোবট অনেক কাজ করে, যেমন ফসল তোলা থেকে শুরু করে খাবার বানানো এবং তা আপনার টেবিল পর্যন্ত এনে দেওয়া পর্যন্ত৷ এক রকমের স্বকর্মক রোবট বাদামের বাগানে ঘুরে ঘুরে ক্যামেরা দিয়ে কীটআক্রান্ত বাদাম চিহ্নিত করতে পারে৷ এরপর তা একটা বন্দুক দিয়ে তাকে নষ্ট করে দেয়৷ রোভারটিকে আলমন্ড বাদাম চাষকে উন্নত করার জন্য তৈরি করা হয়৷ আগে বাদাম গাছে আঘাত করে অথবা একে জোরে জোরে ঝাঁকিয়ে নষ্ট ফল পাড়া হত৷
‘কৃষিতে রোবটের ব্যবহার এমন একটা ক্ষেত্র, যেখানে আরো উন্নতির সুযোগ রয়েছে৷ রোবটগুলো মানুষের চমৎকার সহযোগী হতে পারে৷ বিশেষ করে এমন কাজগুলো, যা করতে গিয়ে আপনি হাঁপিয়ে ওঠেন৷ রোবট সেখানে খুব সহজে তা করে দিতে পারে' বলেন মারভিন৷
একরকমের রোবট দেখতে কতগুলো কলার মতো৷ সেন্সর ও বাতাসের চাপ ব্যবহার করে এটা কোনেও বস্তু ধরে রাখতে এবং তাদের আকারে পরিবর্তিত হতে পারে৷ এটা গ্লাভসের মতো পরা যায়৷ তাতে আঙুল নাড়াতে সুবিধা হয় ও পেশির কাজ কমে৷ আঘাতপ্রাপ্ত বা আঙুল নড়াচড়া করতে পারেন না এমন মানুষদের জন্য এটা খুব উপকারে আসতে পারে৷
এছাড়া কখনও ভেবেছেন কি রোবট আপনার বাড়িতে একটা পুরো রান্না তৈরি করে খাওয়াবে? এটা এখন বাস্তব, যদি আপনার ঘরে একটা পূর্ণাঙ্গ রোবটিক রান্নাঘর থাকে৷ একেবারে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ৫ হাজারের বেশি রেসিপি তৈরি করতে পারে এই রোবট কিচেন৷ চাইলে নিজের মতো করে কাস্টমাইজও করে নিতে পারেন৷ বাজারে এখনই রোবটিক কিচেন পাওয়া যাচ্ছে৷ এর আপনার থালাবাসনও ধুয়ে দেবে৷ তবে অদূর ভবিষ্যতে ঘরে ঘরে পৌঁছানো অনেক খরচের ব্যাপার হবে৷