আরও একটি দিন। শেয়ার বাজারে এই নিয়ে টানা তিনটি সেশনে ধরাশায়ী বিনিয়োগকারীরা। মঙ্গলবার একধাক্কায় পতন হয়েছে বেঞ্চমার্ক সূচকে। BSE সেনসেক্স 844 পয়েন্ট কমে 57,147-এ ক্লোজ হয়েছে। অন্যদিকে, নিফটি 50 এদিনে 257 পয়েন্ট কমে 16,983-এ ক্লোজ হয়েছে।
সব মিলিয়ে এদিন দালাল স্ট্রিটের বিনিয়োগকারীরা ৪.৩ লক্ষ কোটি টাকা হারিয়েছেন। BSE- তালিকাভুক্ত সংস্থাগুলির বাজার মূলধন থেকে এক লাফে ২৭০ লক্ষ কোটি টাকা হাওয়া হয়ে গিয়েছে।
সেনসেক্স-এর স্টকগুলির মধ্যে, ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক, নেসলে, টাটা স্টিল, টেক মাহিন্দ্রা এবং ইনফোসিস আজকের ট্রেডিং সেশনে সবচেয়ে 'পিছলে' গিয়েছে। প্রায় ২-৩.৫ শতাংশ কমেছে এই জনপ্রিয় শেয়ারগুলি। অন্যদিকে টাইটান, রিলায়েন্স, মারুতি, এইচইউএল এবং উইপ্রোর শেয়ারও নিম্নমুখী হয়েছে।
তবে, এর মধ্যেও অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক এবং এশিয়ান পেইন্টস-এর শেয়ারে লাভের মুখ দেখেছেন বিনিয়োগকারীরা।
নিফটি রিয়েলটি-র সূচক এদিন সবচেয়ে খারাপ ছিল। এক সেশনেই 3.07 শতাংশ পতন হয়েছে। নিফটি মেটাল, মিডিয়া আইটি, কনজিউমার ডিউরেবলস এবং অটো সূচকগুলিতেও এদিন শেয়ার দর কমেছে। নিফটি মিডক্যাপ 50 এবং স্মলক্যাপ 50 যথাক্রমে ১.৬৮ শতাংশ এবং ১.৫৭ শতাংশ কমেছে।
কিন্তু বাজারের হঠাত্ এমন বেহাল দশার কারণ কী?
বিশ্ব বাজারের পরিস্থিতি
ইউএস ফেডের সুদের হার বৃদ্ধির উদ্বেগের প্রভাব পড়ছে এশিয়ার শেয়ার বাজারগুলিতে। মঙ্গলবার বেশিরভাগ শেয়ারেই সেটা লক্ষ্য করা গিয়েছে। তাই শুধু ভারতেই এমনটি হচ্ছে, তা ভাবলে ভুল করবেন। উদাহরণস্বরূপ, জাপানের Nikkei225 ২.৬৪% কমে ক্লোজ হয়েছে। একইভাবে দক্ষিণ কোরিয়ার Kospi সূচকও ১.৮৩% কমেছে। হংকংয়ের Hang Seng ২.২% কমেছে।
শুধুমাত্র এশিয়াই নয়। ইউরোপের বাজারেও, ব্লু-চিপ FTSE 100 ১.১% কমে গিয়েছে। এই নিয়ে সেখানে টানা ৫ সেশন ধরে সূচক নিচের দিকে নেমে চলেছে।
ভারতীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন
এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, ভারতীয় মুদ্রা এদিন মার্কিন ডলারের প্রেক্ষিতে ৫ পয়সা বেড়ে ৮২.৩৫ টাকায় পৌঁছেছে। তবে, গ্রিনব্যাকের প্রেক্ষিতে রুপি এখনও পর্যন্ত প্রায় ১১% দুর্বল রয়েছে। মার্কিন ডলার সূচক আজ 113 মার্কের উপরেই ছিল।
এর পাশাপাশি ইউএস ট্রেজারি নোটের উচ্চ রিটার্ন, আগামী ৬-৯ মাসের মধ্যে মন্দার সম্ভাবনার দিকে তাকিয়ে আপাতত ভয়ে বিশ্ব। ফলে বিনিয়োগকারীদের অনেকেই 'সময় থাকতে' টাকা তুলে নিতে চাইছেন। আর সেই প্রভাব দেখা দিয়েছে ভারতেও।