জয়দীপ ঠাকুর, রংপো
ওদিকে যাবেন না একদম। ওর নীচে বিস্ফোরক থাকতে পারে। পূর্ব সিকিমের বাসিন্দা ভারত মোহান্তি কার্যত চিৎকার করে সাবধান করে দেন। তিস্তা নদীর ধারেই ফাঁকা একটা জায়গা। সেদিকে তাকিয়ে সাবধান করলেন ওই ব্যক্তি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, খেলার মাঠের মতো যেটা দেখছেন ওখানে আসলে কিছুদিন আগে পর্যন্ত ওখানে বাড়িঘর ছিল। চার পাঁচতলা বাড়ি ছিল ওখানে। তার পাশ দিয়েই তিস্তা নদী বয়ে যেত। আর এখন সেখানেই চড়া পড়ে গিয়েছে।
কোথাও ইলেকট্রিক নেই। ১০-১২ ফুট পলির নীচে চলে গিয়েছে গোটা এলাকা। বহু বাড়ির মধ্য়ে সেই পলি ঢুকে গিয়েছে। কয়েকটা গাড়ির মাথা পলির মধ্যে জেগে রয়েছে।
সিদ্ধান্ত ছেত্রী নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, রাত ২টো নাগাদ কে যেন দরজায় ধাক্কা দিচছিল। খুলতেই দেখি নীচের তলায় জল।এক প্রতিবেশী চিৎকার করে বলতে থাকেন, বন্যা আসছে। দ্রুত আমরা রাস্তায় চলে আসি। তার মধ্য়েই চারদিক থেকে জল আর জল।
এদিকে সেনা ছাউনি জলে ভেসে গিয়েছে। ১৭জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্য়ে ৮জন সেনা জওয়ান রয়েছেন। সিকিম সরকার সতর্ক করে দিয়েছে তিস্তায় গোলাবারুদ ভেসে গিয়েছে। তাই সাবধান। স্থানীয় এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, সেনা এসে একটা মর্টারকে নিষ্ক্রিয় করেছে। মঙ্গন থেকে গোটা এলাকা কার্যত বিচ্ছিন্ন।
চুংথাংয়ের ৮০ শতাংশ ক্ষতির মুখে পড়েছে। আবর্জনায় চাপা পড়ে গিয়েছে বহু দোকান , বাড়ি। এসডিআরএফ বহু রাস্তা পেরিয়ে তবে ঘটনাস্থলে যায়। মঙ্গনের এক আইএএস জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত মৃত্যুর কোনও খবর নেই। দু-তিনদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি।
বাগডোগরা ও লাচেন থেকে চপারের মাধ্য়মে উদ্ধারকাজের চেষ্টা চলছে।
পূর্ব সিকিমের একটা রেল প্রকল্পে কাজ করেন দীনেশ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, রংপোতে তিনদিন ধরে স্ত্রী, মেয়েকে নিয়ে আটকে রয়েছি। বাড়ি পুরো জলে ভর্তি। হোটেলে আশ্রয় নিয়েছিলাম। সেই রাতটা ছিল ভয়াবহ।
এদিকে রংপো থেকে শিলিগুড়ি পৌঁছতে সাধারণ সময়ে ঘণ্টা দুয়েক সময় লাগে। তবে বর্তমানে গরুবাথান আর লাভা হয়ে ঘুরপথে যেতে দ্বিগুণ সময় লেগে যাচ্ছে।