সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশ হয়ে ভারত। এই রুটেই তৈরি করা হয়েছিল হিন্দুদের নিকেশ করার ব্লু–প্রিন্ট। সে নিজের নাম লিখিয়েছিল জঙ্গি সংগঠনে। আর তারপরই সন্ত্রাসবাদে জড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে ফেরার পর হিন্দুদের উপর আক্রমণের ছক কষেছিল সে। এমনকী ভারতে ঢুকে কাশ্মীরে গিয়ে জঙ্গিদের সঙ্গে ‘জেহাদ’ করারও পরিকল্পনা ছিল তাঁর। শেষপর্যন্ত তা সফল হয়নি। কারণ ২৬ বছরের ওই বাংলাদেশি নির্মাণ শ্রমিককে গ্রেফতার করল সিঙ্গাপুর সরকার। ধৃতের নাম আহমেদ ফয়সাল।
পুলিশ সূত্রে খবর, সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে বাংলাদেশি যুবক আহমেদ ফয়সালকে। নভেম্বরের শুরুর দিকে ফয়সালকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিঙ্গাপুরের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা আইনে (আইএসএ) তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপর শুরু হয়েছে বিচার। সে কেন এখানে গা ঢাকা দিয়েছিল, কীভাবে এখানে প্রবেশ করল, কার কার সঙ্গে এখানে তার যোগাযোগ রয়েছে, এমনকী কোথায় কোথায তার নাশকতার ছক ছিল তা জানতে চলছে জেরা।
উল্লেখ্য, ফ্রান্সবিরোধী মনোভাব প্রকাশ এবং সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা বা হিংসা উস্কে দিতে উগ্রবাদী মন্তব্য প্রচারের অভিযোগে ১৬ জন বিদেশিকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে সিঙ্গাপুর সরকার। সেই ১৬ জনের মধ্যে ১৫ জনই বাংলাদেশি। অপরজন মালয়েশিয়ার নাগরিক। মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আহমেদ ফয়সালের বিরুদ্ধে তদন্ত করে দেখা গিয়েছে সে আইসিস–এর মতাদর্শে বিশ্বাসী। বাংলাদেশে এসে সশস্ত্র হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল। ফয়সাল ২০১৭ সালে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরে যায়।’
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় সশস্ত্র হিংসার পক্ষে পোস্ট দিতে শুরু করেছিল ফয়সাল। তার কাছ থেকে একটি ফোল্ডেবল ছুরিও কিনেছিল। দফায় দফায় জেরা করার পর সে স্বীকার করেছে, ওই ছুরি দিয়ে বাংলাদেশে এসে হিন্দুদের উপর হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছিল সে। তবে সিঙ্গাপুরে হামলা চালানোর পরিকল্পনা তার ছিল না।
সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, অক্টোবরে ফ্রান্সে হওয়া হামলাগুলির সঙ্গে ফয়সালের কোনও যোগ ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে সে আইএস জঙ্গি গোষ্ঠীর হয়ে যুদ্ধ করতে সিরিয়াও যেতে চেয়েছিল। ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে হায়াত তাহরির আল–শাম (এইচটিএস) নামে একটি জঙ্গিগোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ হয় সে। ফয়সাল ওই সংগঠনে অর্থ দিয়েছিল বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন।