বিলকিস মামলার শুনানি চলাকালীন বৃহস্পতিবার গুজরাট সরকারকে সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন করল, 'কেন বেছে বেছে এই ১১ জনের সাজা মুকুব করা হল?' প্রসঙ্গত, বিলকিস বানোর গণধর্ষকদের গত ১৫ অগস্ট মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে বিতর্ক চরমে। অপরাধীদের মুক্তির বিরোধিতায় একাধিক মামলা দায়ের হয় শীর্ষ আদালতে। সেই প্রেক্ষিতেই দৈনিক শুনানি হচ্ছে এই মামলার। এই আবহে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়ল গুজরাট সরকার। এদিকে গুজরাট সরকারের পক্ষ থেকে আদালতে হাজির হওয়া অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু অবশ্য এই মামলায় যুক্তি দিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের এক মামলার রায়দানের প্রেক্ষিতেই গুজরাট সরকার এহেন পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছিল।
গতকাল এই মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি বিভি নাগারত্না বলেন, 'অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন করা হয়েছে। ১৪ বছর জেল খাটার পর তাঁদের কী ভাবে ছেড়ে দেওয়া হল? অন্য বন্দিদের কেন ছাড়া হল না?' এই প্রশ্নের জবাবে গুজরাট সরকারের তরফে বলা হয়, 'যারা এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়, তাদের সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।' এর জবাবে শীর্ষ আদালত পালটা প্রশ্ন করে, 'এই নীতি কি বাকি বন্দিদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য? কতজনকে এই ধরনের সুযোগ দিয়েছে গুজরাট সরকার। সেই সংক্রান্ত পরিসংখ্যান আদলতে পেশ করা হোক।'
এর আগে বিলকিস বানোর অপরাধীদের আগাম মুক্তি নিয়ে নিজেদের সিদ্ধান্তকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে সুপ্রিম কোর্ট। উল্লেখ্য, শীর্ষ আদালতে করা এক রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে অপরাধীদের আগাম মুক্তির বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে সেই রিট পিটিশনের আগে গুজরাট হাই কোর্টে অপরাধীদের আবেদন নাকচ হয়ে গিয়েছিল। এই আবহে নিয়ম মাফিক, সুপ্রিম কোর্টে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আবেদন করা যেত। বদলে রিট পিটিশন করা হয়েছিল এবং তা গ্রহণ করেই শীর্ষ আদালতে মামলা চলে। এবং সেই মামলার প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে পদক্ষেপ করে অপরাধীদের মুক্তি দেয় গুজরাট সরকার।
প্রসঙ্গত, বিলকিস বানোর গণধর্ষকদের গত ১৫ অগস্ট মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে বিতর্ক চরমে। সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য সুভাষিণী আলি, তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র এবং অন্য একজন আদালতে এই ১১ জনের মুক্তিকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করে বিলকিসও দাবি করেছিলেন, শীর্ষ আদালতের নিয়ম লঙ্ঘন করে ওই ১১ জন ধর্ষককে ছেড়ে দিয়েছে গুজরাট সরকার।