স্রেফ প্রতিশ্রুতিতে চিঁড়ে ভিজবে না। যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে, কার্যক্ষেত্রে তা করে দেখাতে হবে। মঙ্গলবার তালিবানের উদ্দেশে এমনই বার্তা দিল জি৭ গোষ্ঠীর নেতারা। সেইসঙ্গে স্পষ্টভাবে জানানো হল, মহিলা ও সংখ্যালঘুদের অধিকার লঙ্ঘন হলে বা সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বাড়লে তালিবানকেই দায়ী করা হবে।
আফগানিস্তানের উদ্বেগজনক পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক করেন জি৭ গোষ্ঠীর রাষ্ট্রনেতারা। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের পৌরহিত্যে সেই বৈঠকের পর জি৭ গোষ্ঠীর তরফে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, আফগানিস্তান নিয়ে রাষ্ট্রসংঘ, প্রতিবেশী দেশ, জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশ এবং আন্তর্জাতিক মহলের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করার বিষয়ে একমত হয়েছেন সাত দেশের রাষ্ট্রনেতা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মুখের কথা দিয়ে নয়, আমরা কাজের মাধ্যমে আফগান পক্ষকে (তালিবান) বিবেচনা করব। নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবাদ রোখা; মহিলা, তরুণী ও সংখ্যালঘুদের অধিকার-সহ মানবাধিকার থাকা এবং সার্বিকভাবে রাজনৈতিক সমাধান সূত্র সংক্রান্ত কাজের ক্ষেত্রে তালিবানকে জবাবদিহি করতে হবে।’
গত ১৫ অগস্ট আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর থেকে মুখে নিজেদের পরিবর্তিত রূপ তুলে ধরতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তালিবান। মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদকে উদ্ধৃত করে আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যমে টোলো নিউজ বলেছে, ‘শরিয়তি আইনের উপর ভিত্তি করে মহিলাদের অধিকার প্রদানের বিষয়ে তালিবান প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য যে সকল ক্ষেত্রে মহিলাদের প্রয়োজন হবে, সেখানে তাঁরা কাজ করতে পারবেন। মহিলাদের বিরুদ্ধে কোনওরকম বৈষম্য হবে না।’ যদিও কার্যক্ষেত্রে ইতিমধ্যে ছেলে-মেয়েদের একসঙ্গে পড়াশোনা করা, আফগান সরকারের মহিলা কর্মীদের আপাতত বাড়িতে থাকার মতো ফতোয়া জারি করে দিয়েছে তালিবান।
সেই পরিস্থিতিতে জি৭ গোষ্ঠীর তরফে জানানো হয়েছে, তালিবান যে ‘পালটে’ গিয়েছে, তা বাস্তবে দেখাতে হবে। তার উপরেই নির্ভর করবে ভবিষ্যতে তালিবান সরকারকে স্বীকৃতির বিষয়টি। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘স্থিতিশীল আফগানিস্তানের জন্য আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতা এবং প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে তারা কী পদক্ষেপ করে, তার উপর ভবিষ্যতের কোনও সরকারের বৈধতার বিষয়টি নির্ভর করছে।’