Asian Games: মানসিক স্থিতি ঠিক ছিল না- ট্রান্সজেন্ডার মন্তব্যের জন্য সতীর্থ নন্দিনীর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন স্বপ্না

হ্যাংঝু গেমসে অল্পের জন্য পদক হাতছাড়া করে নিজের হতাশা নিংড়ে দিতে গিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন ভারতের তারকা অ্যাথলিট স্বপ্না বর্মন। তাও আবার নিজের সতীর্থের বিরুদ্ধেই। যা নিয়ে এখনও জলঘোলা চলছে। বিপাকে পড়ে এবার ক্ষমা চাইলেন স্বপ্না।

স্বপ্না বর্মন।

সতীর্থ নন্দিনী আগাসারা তাঁর ইভেন্টেই ব্রোঞ্জ জেতার পর চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলে বিতর্ক জড়ান স্বপ্না বর্মন। তবে বিতর্ক জোরদার হতেই, বিপাকে পড়ে সেই টুইট স্বপ্না পরে মুছেও ফেলেন। কিন্তু তাতেও রক্ষা পাননি স্বপ্না। তাঁর এই কাণ্ড নজর এড়ায়নি ভারতীয় অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের কর্তাদের। তাঁরা রীতিমতো ক্ষুব্ধ। ফেডারেশনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা স্বপ্নার অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে, ভারতে পৌঁছানোর পর স্বপ্না তাঁর আচরণের ব্যাখ্যা দিতে হবে। এর মাঝেই স্বপ্নার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রমাণ দিতে বলেছেন নন্দিনী।

সব মিলিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছেন স্বপ্না। অবস্থা বেগতিক দেখে পাল্টি খেলেন বাংলার তারকা অ্যাথলিট। সোশ্যাল মিডিয়া সাইট X-এ স্বপ্না নতুন করে টুইটে লিখেছেন, ‘আমি সেই দিন যে টুইট করেছিলাম, তার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করছি। বিশেষত আমার সহ-অ্যাথলিটের কাছে। নিছক হতাশা এবং মানসিক স্থিতি ঠিক না থাকার ফলে আমি খেলাধুলার নীতির বিরুদ্ধে এই ভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ফেলেছিলাম। এবং ওই ভাবে আমার মানসিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার জন্য প্রত্যেকের কাছে গভীর ভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।’

আসলে এশিয়ান গেমসের হেপ্টাথলন ফাইনালে একটা সময় পর্যন্ত নন্দিনীর থেকে এগিয়ে ছিলেন স্বপ্না। কিন্তু শেষ ইভেন্টে এক নম্বরে শেষ করেন নন্দিনী। ফলে স্বপ্নাকে টপকে ব্রোঞ্জ জিতে যান তেলেঙ্গানার অ্যাথলিট। স্বপ্না প্রত্যাশা মতো পারফরম্যান্সও করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত নন্দিনীর পয়েন্ট ছিল ৫৭১২। চার পয়েন্ট কম পান স্বপ্না। তিনি ৫৭০৮ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে শেষ করেন।

এর পরেই স্বপ্না ক্ষুব্ধ হয়ে একটি টুইট করেন। যেখানে লেখা ছিল, ‘আমি এক জন ট্রান্সজেন্ডার মহিলার কাছে এশিয়ান গেমসে ব্রোঞ্জ পদক হেরেছি। অ্যাথলেটিক্সের নিয়ম ভাঙা হয়েছে। তাই আমি আমার পদক চাই। দয়া করে আমাকে সবাই সমর্থন করুন।’ এই টুইট করার কয়ের ঘণ্টার মধ্যেই অবশ্য স্বপ্না তা মুছে দেন। কিন্তু ততক্ষণে বিতর্ক যা তৈরি হওয়ার হয়ে গিয়েছে। এর পাশাপাশি স্বপ্ন টাইমস অফ ইন্ডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘আমি ১৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রশিক্ষণ নিচ্ছি এবং আমি জানি যে, আজ যেখানে আছি, সেখানে পৌঁছতে কতটা পরিশ্রম করতে হয়। মাত্র চার মাস আগে প্রশিক্ষণ শুরু করে নন্দিনী। কী ভাবে ও একটি পদক জিততে পারে, তাও এশিয়ান গেমসের স্তরে? আমি ওর লিঙ্গ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছি এবং চাই, ফেডারেশন বিষয়টি খতিয়ে দেখুক।’

নন্দিনীও এই বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ চেপে রাখেননি। স্বপ্নার এই দাবির বিরুদ্ধে তিনি প্রশ্ন তোলেন। তিনি ক্ষোভ উগরে বলেন, ‘এটা দেশের ভাবমূর্তির জন্য একেবারেই ভালো বিষয় নয়। একজন ভারতীয় তার সতীর্থকে ট্রান্সজেন্ডার অ্যাথলেট হিসেবে অভিযুক্ত করছেন। তার কৃতিত্বের প্রশংসা না করে, তিনি ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন। স্বপ্নাকে তাঁর আচরণ ব্যাখ্যা করতে হবে।’ সঙ্গে তেলেঙ্গানার অ্যাথলিট আরও যোগ করেছেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না ওর (স্বপ্না) সমস্যা কি? কেন ও আগে এই অভিযোগ করেনি? আমার কঠোর পরিশ্রম এবং উৎসর্গের পর যখন আমি ব্রোঞ্জ জিতলাম, তখনই ও এই ট্রান্সজেন্ডার বিষয়টি টেনে এনেছে। এই বিষয়টি একেবারেই অন্যায্য। আমার পাশে দাঁড়িয়ে আমাকে সমর্থন করার জন্য, আমি সরকার এবং আমার ফেডারেশনকে ধন্যবাদ জানাই।’