এজবাস্টনে ১৮ বছরের পুরনো স্মৃতি ফিরবে না তো? তীরে এসেও মাত্র কয়েক রানের ব্যবধানে হেরে যেতে হবে না তো (২০০৫ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দু'রানে হেরে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া)? অ্যাশেজের প্রথম টেস্টের শেষ কয়েকটা মুহূর্ত অস্ট্রেলিয়ার সেরকমভাবেই কাটছিল। তারইমধ্যে ওলি রবিনসনের শর্ট বলটা ডিপ থার্ডের দিকে ঠেলে দেন প্যাট কামিন্স। দৌড়ে দু'রান নিতে থাকেন। কিন্তু দ্বিতীয় রান নেওয়ার সময় পিচের ১৫ গজের কাছে এসেই অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক দেখতে পান যে মিসফিল্ড হয়ে বলটা বাউন্ডারিতে চলে গিয়েছে। তারপরই হাত তুলে দৌড়াতে থাকেন কামিন্স। ফেলে দেন হেলমেট। ছুড়ে দেন ব্যাট। বাঁধনহীন উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক। যিনি জীবনে সম্ভবত ক্রিকেট মাঠে এত উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেননি। কিন্তু রুদ্ধশ্বাস জয়ের পর তাঁর অ্যাড্রিনালিনও যেন প্রবলভাবে ছুটতে থেকে।
আর সেই রুদ্ধশ্বাস জয়ের দিনে বিশেষ নজিরও তৈরি হয়েছে। টেস্টের ইতিহাসে এই নিয়ে মাত্র তিনবার এরকম ঘটনা ঘটল, যখন প্রথমদিনে ডিক্লেয়ার করে দেওয়ার পরও টেস্ট হারল সংশ্লিষ্ট দল। সোমবার এজবাস্টনে সেই নজির তৈরি হওয়ার আগে ২০১৩ সাল এবং ২০১৬ সালে সেই ঘটনা ঘটেছিল। প্রথম দু'বারও অস্ট্রেলিয়া যুক্ত ছিল। একবার পক্ষে ফল গিয়েছিল, একবার বিপক্ষে। আর এজবাস্টনেও অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে গেল ফল।
টেস্টের প্রথমদিনে ডিক্লেয়ারের পর হার
১) অস্ট্রেলিয়া বনাম ভারত: ২০১৩ সালে হায়দরাবাদে প্রথম ইনিংসে নয় উইকেটে ২৩৭ রানে ডিক্লেয়ার করে দিয়েছিল মাইকেল ক্লার্কের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়া। তারপর ব্যাট করতে নেমে ৫০৩ রান করেছিল ভারত। চেতেশ্বর পূজারা একাই ২০৪ রান করেছিলেন। জবাবে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৩১ রানে অল-আউট হয়ে গিয়েছিলেন অজিরা। ইনিংস ও ১৩৫ রানে জিতেছিল ভারত।
২) দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম অস্ট্রেলিয়া: ২০১৬ সালে অ্যাডিলেডে দিনরাতের টেস্টে প্রথমে ব্যাটিং করে নয় উইকেটে ২৫৯ রানে ডিক্লেয়ার করে দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। অপরাজিত ১১৮ রান করেছিলেন তৎকালীন প্রোটিয়া অধিনায়ক ফ্যাফ ডু'প্লেসি। জবাবে উসমান খোয়াজার ১৪৫ রানের উপর ভর করে ৩৮৩ রান তুলেছিল অস্ট্রেলিয়া।
আরও পড়ুন: ENG vs AUS: উইকেটের পিছনে নয়, সামনেই ৬ ‘স্লিপ’ ফিল্ডার, স্টোকসের উদ্ভট ফিল্ডিংয়ে আউট খোয়াজা- ভিডিয়ো
দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫০ রানেই অল-আউট হয়ে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। চতুর্থ ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২৭ রান। ডেভিড ওয়ার্নারের ৪৭ রান এবং অধিনায়ক স্টিভ স্মিথের ৪০ রানের হাত ধরে সাত উইকেটে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া।
৩) ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়া: ২০২৩ সালে এজবাস্টনে একই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হল ইংল্যান্ড। অ্যাশেজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিসে আট উইকেটে ৩৯৩ রান ওঠার পর ডিক্লেয়ার করে দেন বেন স্টোকস। ১১৮ রান করেন জো রুট। জবাবে খোয়াজার ১৪১ রানের দুরন্ত ইনিংসের উপর ভর করে ৩৮৬ রানে অল-আউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
আরও পড়ুন: ENG vs AUS: অবিশ্বাস্য কামিন্স! নবম উইকেটের অবিস্মরণীয় জুটিতে প্রথম অ্যাশেজ টেস্টে জয় অজিদের
দ্বিতীয় ইনিংসে ২৭৩ রান তোলে ইংল্যান্ড। অর্থাৎ অস্ট্রেলিয়ার সামনে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৮১ রান। নবম উইকেটে কামিন্স এবং লিয়নের ৫৫ রানের জুটিতে জিতে যায় অস্ট্রেলিয়া। অপরাজিত ৪৪ রান করেন অজি অধিনায়ক কামিন্স। যিনি ২০১৩ সাল এবং ২০১৬ সালের ওই দুটি টেস্টে খেলেননি।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।