স্বাধীনতার ৭৫ বছরের উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই বড় ধাক্কা খেয়েছে ভারতীয় ফুটবল। ভারতীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থাকে শেষ পর্যন্ত নির্বাসিত করেছে ফিফা। আর ফিফার এই পদক্ষেপকে খুবই কড়া সিদ্ধান্ত বলে দাবি করেছেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক বাইচুং ভুটিয়া।
বাইচুং বলছেন, ‘ফিফা ভারতীয় ফুটবলকে নির্বাসিত করেছে। খুবই দুর্ভাগ্যজনক। একই সময়, আমার মনে হয় ফিফা অত্যন্ত কড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ এর পরই বাইচুং যোগ করেন, ‘এর মধ্যে আমি অবশ্য একটি সম্ভাবনাও দেখতে পাচ্ছি। আমার মনে হয়, এর ঘটনার হাত ধরেই আমরা ভারতীয় ফুটবলকে সঠিক রাস্তায় ফেরানোর সুযোগ পাব। ভারতীয় ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত সকলের কাছে এই সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফেডারেশন, রাজ্য ফুটবল সংস্থা সকলে মিলে ভারতীয় ফুটবলের স্বার্থে, দেশের ফুটবলের উন্নতিতে যা প্রয়োজন সেটা করুক। সকলে এক জোট হয়ে ভারতীয় ফুটবলকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনুক।’
আরও পড়ুন: কেন নির্বাসিত AIFF? এর জন্য কী সমস্যায় পড়বেন ছেত্রীরা? কতটা সঙ্কটে EB-MB?
ফিফার এই শাস্তির ফলে ভারতীয় ফুটবলে নিঃসন্দেহে অন্ধকার নেমে এসেছে। এই নির্বাসন থেকে গেলে অনূর্ধ্ব -১৭ মহিলাদের বিশ্বকাপ হওয়া কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। সিনিয়র হোক কিংবা জুনিয়র, ভারতের কোনও জাতীয় দলই কোনও রকম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে পারবে না। আন্তর্জাতিক মানের কোনও ম্যাচই খেলতে পারবেন না সুনীল ছেত্রীরা। এমন কী এশিয়ান কাপও খেলতে পারবে না ভারত।
এই নির্বাসনের ধাক্কায় যেন কয়েক যুগ পিছিয়ে গেল ভারতীয় ফুটবল। কারণ ভারতীয় ফুটবলের ব়্যাঙ্ক ফের শূন্য থেকে শুরু হবে। ফের শূন্য থেকে লড়াই শুরু করতে হবে সুনীলদের।
আরও পড়ুন: আশঙ্কাই সত্যি হল, AIFF-কে নির্বাসিত করল ফিফা, ভারত থেকে সরছে U-17 মহিলা WC
এ দিকে আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ঘরের মাঠে এএফসি কাপের ইন্টারজোনাল সেমিফাইনালে খেলার কথা এটিকে মোহনবাগানের। কিন্তু নির্বাসন বহাল থাকলে, সেই ম্যাচ খেলতে পারবে না জুয়ান ফেরান্দোর টিম। পাশাপাশি যত দিন পর্যন্ত না সাসপেনশন উঠছে, নতুন করে কোনও বিদেশি ফুটবলার সই করানো যাবে না। এর অর্থ, ইস্টবেঙ্গলের ষষ্ঠ বিদেশি ফুটবলার সই করানোর পরিকল্পনা আপাতত বিশ বাঁও জলে। একই রকম ভাবে ভারতীয় ক্লাবে খেলা কোনও বিদেশি এখন অন্য দেশেও যেতে পারবেন না।
ভারতীয় সময় রাত ২টোর পর ফিফা এক ই-মেলে প্রেস বিবৃতি জানায়, তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের কারণে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনে নির্বাসিত করার বিষয়ে। ৮৫ বছরের ইতিহাসে প্রথম ফিফার নির্বাসনের মুখে পড়ল সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থা। ফেডারেশনের এই পরিস্থিতির কারণ হিসেবে দায়ী করা হচ্ছে প্রাক্তন সভাপতি প্রফুল্ল প্যাটেলকে। বছরের পর বছর সভাপতির পদ আঁকড়ে বসেছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে হয় দেশের শীর্ষ আদালতকে। সুপ্রিম কোর্টের তরফে প্রশাসকদের একটি কমিটি গঠন করা হয়। সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের দায়িত্বে এখন প্রশাসকদের কমিটির হাতে। নির্বাচনের মাধ্যমে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের যতক্ষণ না নতুন এক্সিকিউটিভ কমিটি গঠিত হচ্ছে এবং সমস্ত নিয়ন্ত্রণ ফিরে আসছে, ফিফার এই নির্বাসন বহাল থাকবে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।