ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে ড্র করায় এটিকে মোহনবাগানের ধারাবাহিকতায় কিছুটা হলেও ধাক্কা খেয়েছে। আসলে কোনও ক্রমে লিগের অর্ধেকটা শেষ করার পর, জুয়ান ফেরান্দোর দল এখন ছোটখাটো হাসপাতাল। এ কথা স্বীকারই করে নিয়েছেন এটিকে মোহনবাগানের স্প্যানিশ কোচ ফেরান্দো। বৃহস্পতিবার ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে গোলশূন্য ম্যাচের পর দলের অন্দরমহলের একাধিক চাঞ্চল্যকর খবর দিলেন কোচ নিজেই। সাংবাদিক বৈঠকে এসে তিনি ঠিক কী কী বললেন, জেনে নিন বিস্তারিত।
প্রশ্ন: ওড়িশার ঘরের মাঠে খেলার অভিজ্ঞতা কেমন হল আপনার?
ফেরান্দো: এই প্রথম এলাম এখানে। ভারতের বিভিন্ন শহরে, বিভিন্ন স্টেডিয়ামে খেলার অভিজ্ঞতা ভালো। এখন যেহেতু পরিস্থিতি স্বাভাবিক, তাই ঘরে-বাইরে খেলার সুযোগ পাচ্ছি আমরা। খেলোয়াড়দের পক্ষেও ভাল। অ্যাওয়ে ম্যাচে কঠিন লড়াই করতে হচ্ছে তাদের। প্রতিপক্ষ কোন পরিবেশে খেলে, সেটাও জানা হচ্ছে।
প্রশ্ন: এখানে কী ধরনের সমস্যার মুখে পড়তে হল আপনাদের?
ফেরান্দো: যথেষ্ট খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়েছে এখানে। কারণ, দলের অনেকেরই চোট-আঘাত রয়েছে। তিন জনের বেশি বিদেশি খেলাতে পারিনি। স্থানীয় খেলোয়াড়দেরও অনেকের চোট রয়েছে। মনবীর, ইংসনদের মনে হচ্ছে দু-এক মাসের জন্য মাঠের বাইরে থাকতে হবে। দলের অন্যদের উপর যে ভরসা নেই, তা নয়। সমস্যা হয়েছে অনুশীলনে। ১০-১২ জনের বেশি খেলোয়াড়কে পাওয়া যাচ্ছে না অনুশীলনে। তবে এগুলো কোনও অজুহাত নয়, এগুলো ফুটবলেরই অঙ্গ। আমরা তিন পয়েন্ট অর্জন করার মানসিকতা নিয়েই নেমেছিলাম। কিন্তু প্রথমার্ধে ওড়িশা আমাদের চেয়ে ভালো খেলেছে। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা জায়গা তৈরির চেষ্টা করি। কিন্তু ওড়িশা দ্রুত ওঠানামা করে ৩-৪টে ভালো সুযোগ তৈরি করে নেয়।
আরও পড়ুন: গোলশূন্য ড্র, ওডিশা থেকে এক পয়েন্ট নিয়ে ফিরল সবুজ মেরুন
প্রশ্ন: হুগো বৌমাসকে ৭৮ মিনিটে মাঠে নামতে দেখা যায়। এর কারণ কী?
ফেরান্দো: ওর চোট ছিল। কাঁধ নাড়াতে পারছিল না। শেষ দশ মিনিটে দলকে সাহায্য করার জন্যই বড় ঝুঁকিটা নিতে হয়েছিল। ওই সময়ে হুগোর একটা টোকা লাগলেও পুরো মরশুমের জন্য হয়তো ছিটকে যেত। জনি কাউকো, পোগবা, মনবীরদের তালিকায় চলে যেত হতো। পরের ম্যাচে হয়তো কোচিং স্টাফের কাউকে নামাতে হবে। তবে বৌমাসকে না নামানোর কারণ এটাই।
প্রশ্ন: এই পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার জন্য এখন করবেন বলে ঠিক করেছেন?
ফেরান্দো: দ্রুত চোট-আঘাত সেরে যাবে, এই আশা করা ছাড়া আর কোনও উপায় আমার নেই। আমাদের দলে ২৭জন খেলোয়াড় থাকলেও মাত্র ১৫জন ফিট রয়েছে। কল্পনা করুন পরিস্থিতিটা। চার জনের হাঁটুর লিগামেন্টে চোট। দু'জনের গোড়ালির লিগামেন্টে সমস্যা। হয়তো তারা আর এই মরশুমে খেলতেই পারবে না।
প্রশ্ন: এই জন্যই কি যুবভারতীর মতো আক্রমণাত্মক মেজাজে এখানে পাওয়া গেল না আপনাদের?
ফেরান্দো: এগারো জনের দলে তিন জনের চোট ছিল, যারা কোনও সংঘাতে বা সঙ্ঘর্ষে যেতে চাইছিল না। প্রথমার্ধে ফারদিনকে নামালেও ওর চোট ছিল। ওকে ৪৫ মিনিট খেলানোর পরে কিয়ানকে নামাই। সত্যি বলতে ওড়িশার বিরুদ্ধে আমরা সাত জনকে নিয়ে মাঠে নেমেছিলাম। তবু এটা আমাদের অজুহাত নয়। ওড়িশা আমাদের চেয়ে ভাল খেলেছে। এই অবস্থায় পরিস্থিতি অনুযায়ী পরিকল্পনা তৈরি করাটা খুবই জরুরি। পরের ম্যাচের আগে হাতে পাঁচ দিন রয়েছে। আশা করি, তার মধ্যে কয়েক জন সুস্থ হয়ে উঠবে।
আরও পড়ুন: লিভারপুল নয়, ছেলের পছন্দের আর্সেনাল কিনতে আগ্রহী মুকেশ আম্বানি- রিপোর্ট
প্রশ্ন: এক পয়েন্ট নিয়ে কি আপনি সন্তুষ্ট?
ফেরান্দো: অবশ্যই না। আমরা সব সময়ই তিন পয়েন্ট পাওয়ার মানসিকতা নিয়ে খেলতে নামি। তবে এই পরিস্থিতির মধ্যে দল অনেক লড়াই করেছে। সেই জন্য কিছুটা হলেও খুশি। কিন্তু তিন পয়েন্ট না পাওয়ায় খুশি হতে পারছি না।
প্রশ্ন: জানুয়ারির দলবদলে আপনি কি নতুন কোনও ফুটবলার আনতে চান?
ফেরান্দো: অবশ্যই চাই। ক্লাব এই ব্যাপারে কাজকর্ম শুরু করে দিয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব তারা দলের সঙ্গে যোগ দিক, এটাই চাইব। কারণ, দলের এই খেলোয়াড়দের প্রয়োজন। গত এক মাস ধরে ক্লাব কর্তারা অনেক পরিশ্রম করেছেন। চুক্তি, ভিসা এ সব ঠিকঠাক থাকলে তারা শীঘ্রই চলে আসবে।
প্রশ্ন: কারও নাম বলবেন? অন্তত তারা কী ধরনের খেলোয়াড়, তা যদি বলেন।
ফেরান্দো: দু’জন খুব গুরুত্বপূর্ণ পজিশনের খেলোয়াড় আসছে। একজন সেন্টার ব্যাককে (ফ্লোরেন্তিন পোগবার জায়গায়) আনতেই হবে। কেন বুঝতেই পারছেন। জনি কাউকোর জায়গাতেও একজনকে আনা হবে, যে নাম্বার নাইন বা নাম্বার টেন হিসেবে খেলতে পারে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।