টানা আটটি ডার্বিতে হার। জেসন কামিন্স, আর্মান্দো সাদিকু, দিমিত্রি পেত্রাতোসের মতো বিশ্বকাপার, ইউরো কাপারদের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে ধারেভারে কিছুটা যেন পিছিয়েই ছিল ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু নন্দকুমারের একটি গোলই সব রং বদলে দিল। বৃষ্টিস্নাত যুবভারতীতে সাড়ে চার বছর পর ডার্বিতে জ্বলল মশাল। উড়ল লাল-হলুদ পতাকা।
ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজা মাত্র অঝোর বৃষ্টির মধ্যে মাঠে ছুটে গেলেন রিজার্ভ বেঞ্চের ফুটবলাররা। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে সেলিব্রেশনে মেতে উঠল লাল হলুদ। সবচেয়ে বেশি উচ্ছ্বাস ছিল চেন্নাইয়ের ফুটবলারকে ঘিরে। আর হবে নাই বা কেন! তিনি যে এদিন শাপমুক্ত করেছেন ইস্টবেঙ্গলকে। চার বছরের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিয়েছেন।
গ্যালারি টপকে মাঠে ঢুকে পড়েন লাল-হলুদ সমর্থকেরাও। কেউ নন্দকুমারকে কোলে তুলে নিচ্ছিলেন, আবার কেউ চুমু খাচ্ছিলেন, তো কেউ পায়ে পড়ছিলেন। মুষলধারে বৃষ্টির মাঝেও, লাল-হলুদের এমন উচ্ছ্বাসের কোলাজ বহুকাল বাদে দেখল যুবভারতী। আর সেটা নন্দের গোলের সৌজন্যে।
মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে ফ্ল্যাঙ্ক ধরে দৌড়ে তড়তড়িয়ে উপরে ওঠেন নন্দকুমার। বক্সের মধ্যে ঢুকে অনিরুদ্ধ থাপাকে ডজ দিয়ে বাঁ-পায়ের দুরন্ত শট আছড়ে পড়ে দ্বিতীয় পোস্টে। বাগান কিপার বিশাল কাইথের দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া, আর কিছু করারই ছিল না। একক দক্ষতায় একেবারে দৃষ্টিনন্দন গোল। যে গোল সত্যিই মনে করে রাখার মতোই।
ম্যাচ শেষে তাঁকে ঘিরে সমর্থকদের উচ্ছ্বাসে রোমাঞ্চিত হয়েছিলেন। সাংবাদিক সম্মেলনে এসে সেই রোমাঞ্চের ছোঁয়া ছিল তাঁর গলাতেও। লাল-হলুদের ডার্বি জয়ের নায়ক উচ্ছ্বসিত হয়ে বলছিলেন, ‘বলে বোঝাতে পারব না। এখানে আসার পর থেকেই সমর্থকদের উৎসাহ চোখে পড়ছে। আর আজকের মত পরিবেশে খেলা তো যে কোনও ফুটবলারের স্বপ্ন।’ সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘আমি খুব খুশি মোহনবাগানের বিরুদ্ধে গোল করতে পেরে। আমার কেরিয়ারে এটা প্রথম ডার্বি আর প্রথম ডার্বিতে গোল করতে পেরে খুশি। আমার গোলে দল জিতেছে।’
নিজের গোল সম্পর্কে আবার নন্দ বলেন, ‘আমি ডান পায়ে খেলতে বেশি স্বচ্ছন্দ। তবে বিশাল কাইথ কিছুটা এগিয়ে এসেছিল, আর বলের প্লেসমেন্টটাও ভালো জায়গায় ছিল।’ তিনি আরও খোলসা করে বলেন, ‘আমাদের টার্গেট থাকে, ডি বক্সে গেলে শট নেওয়ার। সামনে কে থাকছে, সেটা বড় কথা নয়। আমার সামনে অনিরুদ্ধ, গোলে বিশাল ছিল, সে সব মাথায় আসেনি। আমার লক্ষ্য ছিল, শট নেওয়া। পছন্দ ডান পা হলেও, বাঁ পায়ে শট নিয়েছিলাম।’
২৭ বছরের নন্দকুমারের পেশদার ফুটবল শুরু হয়েছিল চেন্নাইয়িন এফসি-র জার্সিতে। গত বছর তিনি ওড়িশা এফসি-তে যোগ দেন তিনি। সেখান থেকেই এবার তাঁকে তিন বছরের চুক্তিতে দলে নিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। আর অভিষেক ডার্বিতে গোল করেই লাল-হলুদের নয়নের মণি হয়ে উঠলেন নন্দ।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।