মেইতেই পতাকা জড়িয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের পদক নেওয়ায় বিতর্কে জড়ালেন জিকসন সিং। পুরো বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একাংশের সমালোচনার মুখে পড়েছেন। তা সত্ত্বেও নিজের অবস্থান অনড় রয়েছেন ভারতীয় ডিফেন্ডার। তিনি দাবি করেছেন, কারও ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল না। বরং গত দু'মাস ধরে মণিপুরে যে হিংসা চলছে, তা নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের পর বেঙ্গালুরুর মাঠে মেইতেই পতাকা নিয়ে পদক নিতে যান। উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যে শান্তি ফেরানোর আর্জি জানাতেই সেই পথে হেঁটেছেন বলে দাবি করেছেন জিকসন।
মঙ্গলবার ম্যাচের পর মিক্সড জোনে জিকসন বলেন, 'এটা আমার মণিপুরি পতাকা ছিল। আমি মণিপুর এবং পুরো ভারতকে স্রেফ এটা বলতে চাইছিলাম শান্তি বজায় রাখতে হবে এবং মণিপুরকে বাঁচাতে হবে। আমি শান্তির পক্ষে সওয়াল করছি। দু'মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও লড়াই চলছে। শান্তি ফিরিয়ে আনতে আমি স্রেফ সরকার এবং বাকি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছিলাম। (আমার) পরিবার সুরক্ষিত আছে। কিন্তু প্রচুর পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, নিজেদের ভিটেমাটি হারিয়েছে।'
পরে গভীর রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় জ্যাকসন লেখেন, ‘প্রিয় সমর্থকরা, এই পতাকা নিয়ে (সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ) জয়ের উচ্ছ্বাস প্রকাশ আমি কারও ভাবাবেগে করতে চাইনি। আমার রাজ্য মণিপুরে এখন যে পরিস্থিতি চলছে, তা নিয়ে (সকলের) দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছিলাম। এই জয়টা প্রত্যেক ভারতীয়কে উৎসর্গ করছি।’ সঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করছি যে আমার রাজ্য মণিপুরে শান্তি ফিরে আসবে।’
জিকসনের রাজ্য মণিপুরে কী হচ্ছে?
বর্তমানে ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম স্লাপাই লাইন মণিপুরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি একেবারেই ভালো নয়। মাসদুয়েক আগে মেইতেই এবং কুকি গোষ্ঠীর মধ্যে যে সংঘর্ষ শুরু হয়, তা এখনও থামার লক্ষণ নেই। মণিপুরের মোট জনসংখ্যার ৫৩ শতাংশ মানুষ হলেন মেইতেই গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। যাঁরা মূলত মণিপুর সমতল এলাকায় বসবাস করেন। রাজনীতিতও তাঁর প্রভাব বেশি। অন্যদিকে, আদিবাসী কুকি গোষ্ঠীর মানুষরা মূলত পাহাড়ি এলাকায় থাকেন। তফসিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের মর্যাদা দেওয়া নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্য়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। তার জেরে দু'মাসে ১২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ৩১০ জনের বেশি। ৫০,০০০-র বেশি মানুষ ভিটেমাটি হারিয়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার একাধিক পদক্ষেপ করলেও এখনও সমাধানসূত্র মেলেনি। ৪ মে ভারতীয় সেনা মোতায়েন করা হলেও বিভিন্ন প্রতিকূলতার মুখে পড়তে হচ্ছে। ইতিমধ্যে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও বিরোধীদের দাবি, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার যে পদক্ষেপ করছে, তাতে কোনও লাভ হবে না। বরং মণিপুরে গিয়ে মেইতেই এবং কুকি গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসা উচিত। সেইসঙ্গে মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে জনসমক্ষে একটিও শব্দ উচ্চারণ না করায় বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।