সোমশুভ্র লাহা
ভারত-পাক ম্যাচের আগের দিন এমসিজিতে রীতিমত কার্নিভাল বসেছিল। ভাংড়া, ঢোল বাজছে, দুই দেশের সমর্থকরাই ট্রাম, গাড়ি ও ট্রেনে করে এসেছিলেন। অনেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূর থেকেও এসেছিলেন মূলত বিরাট কোহলিকে দেখতে। সাধারণত নিরাপত্তার চাদরের জেরে তারকাদের নাগাল পান না ভক্তরা। কিন্তু এখানে কিছুটা হলেও পরিস্থিতি আলাদা ছিল, অন্তত প্রথমের দিকে। এমসিজির আউটডোর ট্রেনিং স্পটে চারটে প্র্যাকটিস পিচ ঘিরে তখন শয়ে শয়ে দর্শকের জমায়েত।
শুরুতে পাশাপাশি নেটে ব্যাটিং করলেন কেএল রাহুল ও বিরাট কোহলি। বোলিংয়ের দায়িত্বে ভুবি, হার্দিক, সিরাজ, অশ্বিন ও যুজি। ব্যাস ভক্তদের আর পায় কে। শুধু ছবিই নয়, অনেকে তখন লাইভস্ট্রিম করতে শুরু করেছেন প্র্যাকটিস সেশন। তবে শুধু ভারত ও পাকিস্তান নয়, বাংলাদেশের লোকজনও এসেছিলেন প্র্যাকটিস দেখতে। বলাই বাহুল্য, সবারই প্রায় টার্গেট কোহলিকে দেখা। মাঝে মাঝে তাই একসঙ্গে কোহলি কোহলি কোহলি স্লোগানে মুখরিত হচ্ছিল প্র্যাকটিস এরিয়া।
একদিকে স্লোগান তুলছিলেন ভারতীয় সমর্থকরা, অন্যদিকে উৎসাহে কমতি ছিল না পাক সমর্থকদের গলাতেও। এই এমসিজি-তেই পাকিস্তান ৯২-এর বিশ্বকাপ জিতেছিল। তার ওপর গতবারই ভারতের বিরুদ্ধে জিতেছে পাকিস্তান। তাই পাক ফ্যানরা স্বভাবতই ভারতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে স্লোগান তুলছিলেন। তবে বিরাট কোহলি ছাড়াও ঋষভ পন্তকে নিয়েও মানুষের মধ্যে উদ্দীপনা ছিল তুঙ্গে। কার্যত রেলিংয়ের ওপর উঠে গিয়ে অনেকেই লাইভ কমেন্ট্রি দিচ্ছিলেন প্র্যাকটিস নিয়ে।
নেটে হার্দিকের বলে রাহুল বিট হতেই সমর্থকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছিল দেখার মতো। তারপরই ভুবির বলে কোহলি এজ লাগাতেই ভারতীয়দের সমবেত দীর্ঘশ্বাস যাবতীয় আওয়াজকে ছাপিয়ে গেল। তারপরেই অবশ্য ভুবিকে একেবারে সোজা ছক্কা মারলেন তিনি। এরপরেই পাকিস্তানি সমর্থকদের মুখ থেকে শোনা গেল, বাবরের মতো স্ট্রেট ড্রাইভ মেরে দেখা। কোহলি শুনেছেন কিনা সেটা জানা নেই কিন্তু তারপরে আরো যেন ক্ষুরধার হল তাঁর শটের জোর। যত শট মারছিলেন কোহলি ততই জোর হচ্ছিল সমবেত মানুষের উচ্ছ্বাস।
প্রাথমিক ভাবে কোহলির কাছে কিছুটা হলেও যাওয়ার সুযোগ ছিল ভক্তদের। তবে লোকজন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই কড়াকড়ি শুরু হয়ে যায় নিরাপত্তার। তাতে অবশ্য উৎসাহে কোনও ঘাটতি পড়েনি। ভুভুজেলা, হর্ন ও মেগাফোন নিয়ে যারা হাজির হয়েছিলেন তারা নিরাপত্তারক্ষীরা সরিয়ে দেওয়ার আগে অবধি প্লেয়ারদের উৎসাহ দিয়ে গেলেন।
ভারতের দুপুরের প্র্যাকটিসের পর পাকিস্তানের বিকালে অনুশীলন করার কথা ছিল। সেটা দেখার জন্য ধীরে ধীরে জড়ো হয়েছিলেন পাকিস্তানের ভক্তকুল। একদিকে ভারতীয়রা বলছিলেন জিতেগা ভাই জিতেগা, ইন্ডিয়া জিতেগা এবং ভারত মাতা কি জয়, অন্যদিকে পাকিস্তানিরা বলতে শুরু করেন পাকিস্তান জিন্দাবাদ। তবে মাঝে মাঝেই দুই তরফ থেকে উঠতে থাকে মওকা মওকা ধ্বনি। সবমিলিয়ে হাসি ঠাট্টায় কেটে গেল শনিবারের প্র্যাকটিস। এবার অপেক্ষা সুপার সানডে-র।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।