বিরাট কোহলি কি আউট ছিলেন? এই নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। ব্যাট না প্যাড- বল আগে কোথায় লেগেছে? তা নিয়ে চলছে কাটাছেঁড়া। বিরাটের আউট নিয়ে স্পষ্টতই দ্বিধা রয়েছে। কিং কোহলি নিজেও তাঁর আউটের সিদ্ধান্তে একেবারেই খুশি নন। নিজের ক্ষোভও উগরেছেন তিনি।
ভারতীয় ইনিংসের ৪৫তম ওভারের তৃতীয় ডেলিভারিতে ঘটে ঘটনাটি। দিল্লি টেস্টে অভিষেক হওয়া ম্যাথিউ কুনম্যানের বলে এলবিডব্লিউয়ের জোরালো আবেদন করে অজি শিবির। আউটও দিয়ে দেন ফিল্ড আম্পায়ার নীতিন মেনন। কিন্তু কোহলি নিশ্চিত ছিলেন, তিনি আউট হননি। রিভিউ নেন তিনি।
আরও পড়ুন: এটাও সম্ভব! চিলের মতোন ছোঁ মেরে ক্যাচ ধরলেন হ্যান্ডসকম্ব,দেখে হাঁ শ্রেয়স- ভিডিয়ো
কোহলির যেটা ছোট্ট সমস্যা হয়, সেটা হল তিনি বলের লাইন থেকে প্যাড সরাতে ব্যর্থ হন। তবে বলটি আগে ব্যাটে না প্যাডে লেগেছে, সেটা কিন্তু পরিষ্কার হয়নি। নীতিন মেনন তো প্রথমে প্যাডে লেগেছে ভেবে নিয়েই আউট দেন। এবং বলটি কিন্তু সোজা গিয়ে স্টাম্পেও আঘাত করছিল। যে কারণে ফিল্ড আম্পায়ার আউট দেন।
তবে কোহলি দ্রুত রিভিউ নেন সম্ভবত দু'টি কারণে - ১) তিনি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে, বলটি প্য়াডের আগে ব্যাটে লেগেছে। ২) বলটি নীচ দিয়ে বের হয় যাচ্ছিল।
আরও পড়ুন: বলের গুঁতোয় ছিটকেই গেলেন ওয়ার্নার, কনকাশনের নিয়মে টিমে ঢুকলেন রেনশ
থার্ড আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওয়ার্থও দ্বিধায় পড়ে যান। বলটি আগে প্যাডে লেগেছে, নাকি ব্যাটে- সেটা সিদ্ধান্ত নিতে অনেক সময় নেন। আর এটি সময় নিয়ে বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে ছিল যে, মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে বাতিল করার জন্য তাঁর কাছে চূড়ান্ত প্রমাণ থাকতে হবে। কিন্তু সেটা তিনি খুঁজে পাননি। রিপ্লেতে দেখা গিয়েছে যে, বলটি একই সময়ে কোহলির ব্যাটের ভিতরের প্রান্তে এবং তার সামনের প্যাডে লেগেছে।
বল ট্র্যাকিং-এ দেখা যায় যে, এটি লেগ স্টাম্পও ভেঙে দিচ্ছিল, তাই ইলিংওয়ার্থও আউটের সিদ্ধান্তই দেন। বলা বাহুল্য, কোহলি এই সিদ্ধান্তে মোটেও খুশি ছিলেন না। তিনি আশা করেছিলেন যে, বিতর্কিত এই সিদ্ধান্ত তাঁর পক্ষে যাবে। স্বাভাবিক ভাবে মাঠ ছাড়ার আগে তিনি প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগরে দেন। ভারতীয় ড্রেসিংরুমও এই সিদ্ধান্তে একেবারেই সন্তুষ্ট নন। ড্রেসিংরুমে ফিরেও কোহলিকে রাগে গজগজ করতে দেখা যায়।
বিশেষজ্ঞরাও সম্মত হয়েছেন যে, এটি একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ছিল এবং সম্ভবত ব্যাটারের পক্ষেঅ যাওয়া উচিত ছিল। মার্ক ওয়া যেমন এ ক্ষেত্রে বলেছেন, ‘দশ বারের মধ্যে ন'টিই আপনি নট আউট দেবেন।’ ওয়াসিম জাফর বলেন, ‘এটা আমার কাছে আউট নয়। খুবই দ্বিধা রয়েছে।’ অভিনব মুকুন্দও আউট নয় বলেই দাবি করেছেন।
যদিও অস্ট্রেলিয়ানদের এই নিয়ে হেলদোল থাকার কথা নয়। বরং অভিষেক ম্যাচেই কোহলির উইকেট পেয়ে উচ্ছ্বসিত কুনম্যান। মজার ব্যাপার হল, কোহলি নাগপুরে প্রথম টেস্টে অভিষেক হওয়া আর এক প্লেয়ার টড মার্ফির বলে আউট হয়েছিলেন।
দিল্লিতে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনেই যখন ভারত ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল। সেই সময়ে দলের হাল ধরেছিলেন বিরাট কোহলি। এমন কী রবীন্দ্র জাদেজাও আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে যাওয়ার পরেও কোহলি স্কোরবোর্ডে রান যোগ করতে থাকেন। কোহলিকে বেশ আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছিল। সব মিলিয়ে, তিনি একটি বড় ইনিংসের জন্য প্রস্তুত ছিলেন এবং প্রথম সারির ৫ ব্যাটারকে হারানোর পর, কোহলির একটি বড় ইনিংস ভারতের জন্যও খুব দরকারী ছিল। তবে বিতর্কিত আউট হওয়ায় কোহলি ৪৪ করেই সাজঘরে ফেরেন। নিজের ঘরের মাঠে হাফসেঞ্চুরিও পূরণ করতে পারলেন না বিরাট।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।