ওপেনিং জুটিকে নিয়ে চিন্তায় ছিল কলকাতা নাইট রাইডার্সের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক। শুভমান গিল ফর্মে থাকলেও সুনীল নারিন বারবার ব্যর্থ হচ্ছিলেন। বুধবার ম্যাকুলাম অ্যান্ড কোম্পানির কপালের সেই ভাঁজ অনেকখানি দূর করলেন দলের তরুণ তুর্কি রাহুল ত্রিপাঠি। মহেন্দ্র সিং ধোনির এই সুপারফ্যানের ব্যাটের উপর ভর করেই এদিন আবু ধাবিতে চেন্নাই সুপার কিংসের সামনে জয়ের জন্য ১৬৮ রানের লক্ষ্য রাখতে পেরেছিল নাইট রাইডার্সরা।
এদিনও নিজের টিমের সাপোর্টে মাঠে হাজির হয়েছিলেন শাহরুখ খান। আর প্রথমবার কেকেআরের হয়ে ওপেন করতে নেমে সুপারহিট রাহুলই এদিন নির্বাচিত হলেন ‘ম্যান অফ দ্য ম্যাচ’। করোনার জেরে প্রায় দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে নিজের তুরুণ তুর্কির জন্য গলা ফাটালেন শাহরুখ খান! এদিন রাহুলের সংগ্রহ ছিল মাত্র ৫১ বলে ৮১। যখন ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার নিচ্ছিলেন রাহুল ত্রিপাঠি, তখন গ্যালারি থেকে শাহরুখ খান চিত্কার করে বললেন- ‘রাহলু, নাম তো শুনা হি হোগা’। যা শুনে হাসিতে ফেটে পড়েন স্বয়ং রাহুল ত্রিপাঠি এবং উপস্থাপক হর্ষা ভোগলে।
এদিনের ম্যাচ শেষে টুইটারেও রাহুলের ভূয়সী প্রশংসা করলেন কিং খান। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে ১০ রানের এই জয় শেষে তিনি লেখেন- ‘আমাদের অল্প কিছু রান কম তোলা হয়েছিল, তবে বোলাররা আজ সেই খামতিটা ঢেকে দিল। ছেলেরা খুব ভালো খেলেছে। আর বলতেই হচ্ছে একজনের কথা, রাহুল ত্রিপাঠি… নাম তো শুনে ছিলাম…কাজটাও আজ ও কামাল করল। তোমরা সবাই সুস্থ থাকো, আরাম কর। ম্যাকুলাম তোমার সঙ্গে জলদি দেখা হচ্ছে'।
এ কথা কারুরই অজানা নয় রুপোলি পর্দায় নিজের প্রায় তিন দশক দীর্ঘ কেরিয়ারে সবচেয়ে বেশি যে দুটি নাম শাহরুখ ব্যবহার করেছেন তাঁর একটি 'রাহুল'। আর ‘রাহুল নাম তো শুনা হি হোগা’- বাদশার নব্বইয়ের দশকের সুপারহিট ছবি দিল তো পাগল হ্যায়ের জনপ্রিয় ডায়লগ। যশ চোপড়ার এই ছবি ছা়ড়াও কুছ কুছ হোতা হ্যায়, ইয়েস বস, ডর, কভি খুশি কভি গম থেকে চেন্নাই এক্সপ্রেস ছবিতে শাহরুখ অভিনীত চরিত্রের নাম ছিল রাহুল। তাই যে ছবিতে রাহুল থাকবে তা ফ্লপ হতে পারে না, তা একশব্দে মেনে নিলেন শাহরুখ খান।
তিন বছর আগে পুণে সানরাইজার্সের সঙ্গে আইপিএল সফর শুরু করেছিলেন রাহুল। ধোনির অনিনায়কত্বেই তাঁর অভিষেক, এরপর জার্সি বদল করে এখন তিনি নাইট বাহিনীর সদস্য। বুধবার নিজের প্রাক্তন সতীর্থ তথা ফ্যানকে ডাগ আউটে ফেরাতে চিন্তায় পড়তে হয়েছিল ধোনিকে। মাত্র ৩১ বলেই এদিন পঞ্চাশ হাঁকান রাহুল ত্রিপাঠি। এরপরেও থামনেনি তাঁর বিধ্বংসী ব্যাটিং। এর আগে দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে আট নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ভালো পারফর্ম করেছিলেন রাহুল। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া টিমের হার আটকাতে না পারলেও লজ্জাজনক হারের হাত থেকে অন্তত বাঁচিয়েছিলেন ত্রিপাঠী। সেদি তাঁর সংগ্রহ ছিল ১৬ বলে ৩৬ রান। সেই সুবাদেই চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে ওপেন করার সুযোগ আসে, রাহুলও দু'হাতে লুফে নিয়েছেন সেই ‘মোওকা’।
রাহুলের দুরন্ত ইনিংসই এদিন কলকাতাকে এনে দিল স্বস্তির জয়, অন্যদিকে তৃপ্তির হাসি ধরা থাকল রাহুল ত্রিপাঠির পাশাপাশি পর্দার রাহুলের ঠোঁটেও। দুজনেই এখন দারুণ খুশি।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।