সুযোগ তো অনেকের ক্ষেত্রেই আসে। কিন্তু সেই সুযোগটা কে কী ভাবে কাজে লাগাবেন, সেটাই আসল বিষয়। তবে হরিয়ানার মিডিয়াম পেসার মোহিত শর্মার উত্থানটা অনেকটা ফিনিক্স পাখির মতোই!
গুজরাট টাইটান্স বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্স ম্যাচে শেষ ওভারে যশ দয়ালকে পাঁচটি ছক্কা হাঁকান রিঙ্কু সিং। সেই ম্যাচ যেতে নাইটরা। আর তারপরই যশের বদলে ছিকে ছেঁড়ে মোহিতের। সুযোগ মিলতেই একটার একটা ম্যাচে নিজের জাদু দেখিয়ে গিয়েছেন মোহিত। আর তাঁর জাদুতে মোহিত হয়েছেন সকলেই। তিনিই হয়ে উঠেছিলেন হার্দিক পাণ্ডিয়ার তুরুপের তাস। ৫ উইকেট নিয়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে কচুকাটা করার পর, ফাইনালে চেন্নাই সুপার কিংসের ৩ উইকেট নিয়েছিলেন মোহিত। যদিও দলকে জেতাতে পারেননি। অনেকটা মহাভারতের কর্ণের মতোই ট্র্যাজিক হিরো হয়ে থাকতে হয়েছে মোহিত শর্মাকে।
আরও পড়ুন: জাদেজাকে কোলে তুলে ধোনির আনন্দশ্রু, ধুয়ে সাফ সব অভিমান- ভিডিয়ো
আইপিএল মানেই সাধারণত এক ঝাঁক তরুণের উত্থান। বড় মঞ্চে নিজেদেরকে প্রমাণ করেন তাঁরা। কেউ কেউ আইপিএলের হাত ধরে জাতীয় দলের দরজাও খুলে ফেলেন। তবে এই তরুণদের ভিড়ে কামব্যাক করেন এমন কিছু প্লেয়ার যাদের নামের সঙ্গে যুক্ত বুড়ো ঘোড়ার তকমা। তাদের মধ্যেই একজন ছিলেন মোহিত শর্মা। তাঁর এ বারের কামব্যাকটা সত্যিই নজর কাড়া।
২০২৩ আইপিএলে ১৪ ম্যাচে ২৭ উইকেট নিয়েছেন মোহিত। পার্পল ক্যাপজয়ী মহম্মদ শামির চেয়ে এক উইকেট কম। আর তাঁর সতীর্থ রশিদ খানের সমান উইকেট নিয়েছেন তিনি। তবে ইকোনমির দিক থেকে পার্পল ক্যাপের তালিকায় তিনি দ্বিতীয় স্থানে শেষ করলেন। শীর্ষ স্থান ধরে রাখলেন মহম্মদ শামিই।
শেষ বার মোহিত কবে জাতীয় দলে খেলেছিলেন, নিজেই হয়তো ভুলে গিয়েছেন। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট শেষ বার খেলেছিলেন ২০১৮ সালে।আইপিএলে যাও বা খেলতেন, সেটাও ২০২০ সালের পর বন্ধ হয়ে যায়। ২০২০ সালে দিল্লি ক্যাপিটালসে যোগ দেন মোহিত শর্মা। ৫০ লাখ টাকার বিনিময়ে দিল্লিতে যোগ দিয়ে রিজার্ভ বেঞ্চে সময় কাটানো ছাড়া আর কোনও কাজ ছিল না মোহিতের। মাত্র একটা ম্যাচ খেলেছিলেন। সেই ম্যাচে মাত্র একটি উইকেটই নিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: জাদেজা ম্যাচ জেতানোর পর ঘোমটা টেনে মাঠে হাজির স্ত্রী, মুগ্ধ নেটপাড়া
এর পর থেকে আর কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজি কিন্তু তাঁকে নিতে আগ্রহ দেখায়নি। নিলামে উঠলেও তাঁকে দলে নেয়নি কেউ। এর পর ২০২২ গুজরাট টাইটান্সের নেট বোলার হিসেবে তিনি আইপিএলের মঞ্চে ফিরলেও, সুযোগ আসে ২০২৩ সালে। এক বছর ধরে মোহিত শর্মাকে নাকি ২০২৩ সালের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছিলেন দলের কোচ আশিস নেহরা। তবে মোহিত যে নিজেকে তৈরি করেছেন, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। সেটা তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন।
তিন বছরের অপেক্ষার পর ২২ গজে ফিরে তিনি দেখিয়ে দিলেন, এখনও ফুরিয়ে যাননি। এ বার যে কোনও প্লেয়ারকে আউট করার হলে তাঁর হাতে বল তুলে দিয়েছেন হার্দিক। হতাশ করেননি মোহিত। প্রথম কোয়ালিফায়ারে ধোনিকে ফিরিয়েছিলেন তিনি। আবার ফাইনালেও সেই ধোনিকেই ফেরালেন আবার গোল্ডেন ডাকে ফেরান। সঙ্গে আরও ২ উইকেট নেন। তবে শেষ ওভারের শেষ দুই বলে মোহিতকে ছয় এবং চার হাঁকিয়ে ম্যাচ জিতিয়ে দেন রবীন্দ্র জাদেজা। তিন উইকেট নিয়েও তাই ট্র্যাজিক হিরো হয়েই থাকতে হল মোহিতকে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।