এবছর আইপিএল-এর প্রথম কোয়ালিফায়ারে ফের দেখা গেল ধোনির 'তীক্ষ্ণ বুদ্ধি'র নিদর্শন। মাঠে ৪ মিনিট ধরে গল্প করে বা কথা বলে সময় নষ্ট করেই ম্যাচের রাশ নিজের হাতে ধরে রাখেন সিএসকে অধিনায়ক। উল্লেখ্য, গতকালকের ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬তম ওভারের আগে বেশ কিছুক্ষণ 'সময় নষ্ট' করেন ধোনি। কারণ তিনি মথিশ পাথিরানাকে দিয়ে বল করাতে চাইলেও আইসিসি-র নিয়মের জটে তা করতে দিচ্ছিলেন না আম্পায়াররা। প্রসঙ্গত, সেই ওভরে বল করার আগে প্রায় ৯ মিনিট মাঠের বাইরে ছিলেন পাথিরানা। তাই নিয়ম অনুযায়ী, তাঁকে 'পেনাল্টি টাইমে'র পরই বল করার অনুমতি দেওয়া হত। এই আবহে সেই 'পেনাল্টি টাইম' নষ্ট করে মহিশ পাথিরানাকে দিয়েই বল করান ধোনি। যা নিয়ে শুর হয়েছে বিতর্ক। (আরও পড়ুন: 'সম্মান দিলে তবে তা পাবে', CSK অনুগত রবিনের 'ছক্কা' KKR-কে, ঝরে পড়ল অভিমান)
প্রসঙ্গত, আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, কোনও খেলোয়াড় যদি ৮ মিনিটের বেশি মাঠের বাইরে থাকেন, তাহলে মাঠে ফেরার পর সঙ্গে সঙ্গে ব্যাট বা বল করতে দেওয়া হবে না তাঁকে। বোলিংয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড় যতক্ষণ মাঠের বাইরে থেকেছেন, ততক্ষণ ফিল্ডিং করতে হবে তাঁকে। ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে প্রথম ইনিংসের শেষে যতক্ষণ সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটার মাঠের বাইরে থাকবেন, তাঁর দলের ব্যাটিং ইনিংসে ততক্ষণ অতিক্রান্ত হওয়ার পর তিনি মাঠে নামতে পারবেন। অর্থাৎ, কোনও ব্যাটার যদি ৩ নম্বরে নামেন। তবে প্রথম ইনিংসে ফিল্ডিংয়ের সময় শেষ ১০ মিনিট তিনি মাঠে ছিলেন না। এদিকে তাঁর দলের ব্যাটিংয়ের সময় প্রথম বলেই একজন ওপেনার আউট হন, তাহলে তিন নম্বরে নামতে পারবেন না সেই খেলোয়াড়। তাঁর দলের ব্যাটিং ইনিংসের ১০ মিনিট পার হওয়ার পর যদি কোনও ব্যাটার আউট হন, তখন তিনি নামতে পারবেন।
তবে গতকাল এই নিয়মকে পাশ কাটিয়ে যান ধোনি। পাথিরানাকে দিয়ে বল করানোর জন্য, পেনাল্টি সময়ের চার মিনিট আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলেই কাটিয়ে দেন তিনি। তাতে শেষ ওভারে 'ফিল্ডিং পেনাল্টি' হজম করতেও রাজি ছিলেন ধোনি। তবে সেই সময় টিভির ধারাভাষ্যকাররা ধোনির এই 'ছল' নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এমনকি সুনীল গাভাসকরও এই নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। পরে বিজয় শংকর নিশ্চিত করেন যে পাথিরানাকে দিয়ে বল করানোর জন্যই ধোনি মাঠে ৪ মিনিট সময় নষ্ট করেন। এই আবহে প্রাক্তন ক্রিকেটারদের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, সময় নষ্ট করে এবাবে নিয়মের পার পাওয়ার বিষয়টি আটকানো উচিত ছিল আম্পায়ারদের। এদিকে ৪ মিনিট অপেক্ষা করেও ১৬তম ওভারে পাথিরানাকে দিয়ে বল করানো যে ধোনির মাস্টারস্ট্রোক ছিল, তা মানছেন সবাই। কারণ সেই সময় ৫ ওভারে ৫৭ রান প্রয়োজন ছিল জিটি-র। এদিকে ধোনির বোলারদের মধ্যে তখন ৩ ওভার বাকি ছিল পাথিরানার এবং দুই ওভার বাকি ছিল তুষার দেশপাণ্ডের। যদি ১৬তম ওভার পাথিরানাকে না করিয়ে তুষারকে দিয়ে করাতে হত, তাহলে ১৯তম ওভারে হয়ত মইন আলিকে দিয়ে বল করাতে হত ধোনিকে। অথবা ১৬তম ওভারেই মইন আলিকে দিয়ে বল করাতে হত তাঁকে। কারণ ততক্ষণে দীপক চাহার, রবীন্দ্র জাদেজা এবং মহিশ তীক্ষণার ওভার শেষ করে দিয়েছিলেন ধোনি। এদিকে এক ওভারও না করা মইনকে চালিয়ে খেলে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারতেন গুজরাটের ব্যাটাররা। তবে নৈতিক হোক কি অনৈতিক, ধোনির সময় নষ্টের ফলে ম্যাচে সিএসকে-র অঙ্ক মিলে যায়।