যে ভাবে একের পর এক বল ওভার বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে এসেছেন। ঠিক সেই ভাবেই বিজেপি-কে ভোটের ময়দান থেকে ওভার বাউন্ডারি মেরে বাইরে পাঠাতে চান মনোজ তিওয়ারি। তাঁর মতে, ‘যারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে, মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ তৈরি করে, তাঁদের বিরুদ্ধেই আমার লড়াই। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি হয় না। আমরা ধর্মনিরপেক্ষ দল। সব মানুষের সঙ্গে রয়েছি। সবার জন্য কাজ করতে চাই।’
২০২১ বিধানসভা ভোটে শিবপুরের তৃণমূল প্রার্থী মনোজ। কিন্তু হঠাৎ করে ক্রিকেট ছেড়ে রাজনীতিতে কেন? মনোজের দাবি, ‘রাজনীতি নিয়ে আমার বরাবর একটা আগ্রহ ছিল। তবে কখনও ভাবিনি রাজনীতি করব। কিন্তু মানুষের জন্য কিছু করতে গেলে, বা কোনও অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে গেলে, রাজনীতি একটা বড় মঞ্চ। মমতাদি আমাকে সেই মঞ্চে আসার সুযোগ করে দিয়েছেন। আমি যদি জিততে পারি, অনেক কিছু করতে চাই। তবে কথায় নয়, কাজে করে দেখাতে চাই।’
তৃণমূলের আগে তিনি বিজেপি-র থেকে প্রস্তাব পেয়েছিলেন। কিন্তু সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে সাড়া দেন। মনোজ নিজেই বলছিলেন, ‘আমার সঙ্গে বিজেপি-র আদর্শে কোনও মিল নেই। আবারও বলছি, ওরা ধর্ম নিয়ে যে রাজনীতি করে, সেটা আমার ব্যক্তিগত ভাবে পছন্দ নয়। রাজনীতির সঙ্গে ধর্মকে গুলিয়ে ফেলা কখনও উচিত নয়। তা ছাড়া কেন্দ্রে যে স্বেচ্ছাচারিতা চলছে, সেটা মানা যায় না। জিনিসপত্রের দাম হুহু করে বাড়ছে। তেল, গ্যাস, বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম এখন লাগামছাড়া। এ সবের বিরুদ্ধেই তো আমার লড়াই।’
চোটের জন্য বিজয় হাজারে খেলতে পারেননি। এমন কী চোট সারিয়ে এই মুহূর্তে তাঁর মাঠে ফেরার কোনও সম্ভাবনা নেই। কবে মাঠে ফিরতে পারবেন, সেই নিয়েও পরিষ্কার করে কিছু বলতে পারছেন না মনোজ। তবে কি ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন তিনি? কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর মনোজ বললেন, ‘আসলে চোট সারিয়ে কবে মাঠে ফিরতে পারব বুঝতে পারছি না। তবে ক্রিকেট ছেড়ে দেব, এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার এই মুহূর্তে প্রশ্ন নেই। এখন ভোট নিয়ে একটু ব্যস্ত ঠিকই। তবে মানুষের জন্য কাজ করতে গেলে ক্রিকেটকে সরিয়ে দিতে হবে জীবন থেকে, এমনটাও নয়।’
এর পরেই তিনি যোগ করেন, ‘আমি শিবপুরের এখানে প্রায় সব ক’টা ওয়ার্ড এই কয়েক দিনে ঘুরে দেখেছি, মানুষের জন্য এখনও কত কাজ করার রয়েছে। রাস্তাঘাট ঠিক করা থেকে, সবার সুরক্ষা এবং সুবিধের জন্য গলি গলিতে স্ট্রিট লাইট তৈরি করা, ড্রেনেজ সিস্টেম ঠিক করা। আরও অনেক পরিকল্পনা রয়েছে।’ পুরো প্রসঙ্গটাই মনোজ পাল্টে দিতে চাইলেন বলে মনে হল। যেন ক্রিকেটের বিযয়টা এড়িয়েই যেতে চাইলেন তিনি। সূত্রের খবর, মনোজ বাংলার অধিনায়ক হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। প্রথমে অভিমন্যু ঈশ্বরণকে অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে অনুষ্টুপ মজুমদার বাংলার অধিনায়ক হন। অনেকেই মনে করছেন, এই অভিমানের কারণেই তিনি ক্রিকেট থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছেন।
তবে রাজনীতিতে এখন যে ভাবে অশ্লীল ভাষার প্রয়োগ হচ্ছে। যে ভাবে কদর্য পন্থায় একে অপরকে আক্রমণ করে চলেছে, এটার সঙ্গে কী ভাবে মনোজের মতো ক্রিকেটার মানিয়ে নিচ্ছেন? মনোজ নিজেও এই বিষয়টি ভাল ভাবে দেখছেন না। তিনি মনে করেন, ‘রাজনীতিতে আদর্শগত পার্থক্য থাকতেই পারে। তা বলে নোংরা ভাষায় আক্রমণ কখনওই করা উচিত নয়। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যেই রাজনৈতিক দল বা নির্দিষ্ট ব্যক্তি সম্পর্কে একটা খারাপ ধারণা তৈরি হয়।’ রবিবার থেকেই মনোজ ‘ডোর টু ডোর’ প্রচার শুরু করলেন। এ দিন বেলগাছিয়া ছাত্র মিলন সংঘ থেকে পদযাত্রা করেন তিনি। পুরো ৮ নম্বর ওয়ার্ড তিনি ঘুরে দেখেন।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।