এ বছর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে শিক্ষারত্ন সম্মানে ভূষিত হতে চলেছেন পূর্ব বর্ধমানের ৩ বিদ্যালয়েক ৩ প্রধান শিক্ষক। কালনা মহারাজা হাইস্কুলের শ্রীমন্ত ঘোষ, রায়নার মুসলিম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রামসহায় মুখোপাধ্যায় ও কেতুগ্রাম ১ ব্লকের আরগন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পৃথ্বীরাজ সিংহ। স্কুলছুট পড়ুয়াদের স্কুলে ফিরিয়ে আনা, স্কুলের সার্বিক উন্নয়ন ও করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধির পাঠ— এই সব ক্ষেত্রে নিজেদের অবদানের নিরিখে তাঁদের সর্বাগ্রে রেখেছে স্কুল শিক্ষা দফতর।
৩২ বছরের শিক্ষকতা জীবনের গত ৯ বছর ধরে কালনা মহারাজা হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন শ্রীমন্ত ঘোষ। ২০১১ সালে তিনি এই স্কুলে কাজে যোগ দেওয়ার পর নতুন ১৫টি শ্রেণিকক্ষ, প্রতিটি ক্লাসের নিজস্ব গ্রন্থাগার তৈরি হয়েছে। স্কুলছুট কমাতে তাঁর উদ্যোগেই গরিব ছাত্রদের সহায়তায় বিশেষ তহবিল গড়া হয়েছে। শেষ কয়েকটি বছর মাধ্যমিকে ১০০ শতাংশ পাশ করে নজির গড়েছে এই স্কুল। তাঁর হাত ধরেই স্কুল জেনেছে দেওয়াল পত্রিকার মর্ম।
তাঁর পরিবারের দান করা জমিতে তৈরি রায়না মুসলিম প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক রামসহায় মুখোপাধ্যায় জোড় দিয়েছেন মূলত স্কুলছুট কমাতে। শিশুশ্রম বন্ধ করতেও বিশেষ ভূমিকা নিয়েছেন তিনি। এলাকায় প্রচার করেছেন স্কুলছুট ও শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে। সামাজিক বার্তা দিতে স্কুলে একাধিকবার রক্তদান শিবিরের আয়জনও করা হয়। করোনা সচেতনতা প্রচারের অঙ্গ হিসেবে মাস্কও বিলি করা হয়েছে স্কুলের তরফ থেকে। এ সব কর্মকাণ্ডের জন্য শিক্ষারত্ন পাচ্ছেন রামসহায় মুখোপাধ্যায়।
২০০৪ সাল থেকে কেতুগ্রাম ১ ব্লকের আরগন স্কুলে রয়েছেন বীরভূম জেলার নানুরের বাসিন্দা পৃথ্বীরাজ সিংহ। প্রান্তিক গ্রামের এই স্কুলে তিনি প্রজেক্টর ব্যবহার করে শিক্ষা দানের ব্যবস্থা করেছেন। ২০০৭ সালে তিনি প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে আসার পর থেকে নির্মল বিদ্যালয়, শিশুমিত্রের মতো একাধিক পুরস্কার পেয়েছে এই স্কুল। গ্রামে ডেঙ্গি ও করোনা সচেতনতা বাড়াতে দেওয়াল লিখন, লিফলেট বিলি করেছেন পৃথ্বীরাজবাবু। তাঁর উদ্যোগে গ্রামের মানুষদের মাস্ক ও স্যানিটাইজারও বিলি করা হয়েছে।