মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) মামলার রিভিউ পিটিশনের রায় তাঁদের পক্ষে যাবে। তা নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। তাঁদের বক্তব্য, সর্বভারতীয় মূল্যবৃদ্ধির সূচকের ভিত্তিতে মহার্ঘ ভাতা (ডিয়ারনেস অ্যালোওয়েন্স) পাওয়া সরকারি কর্মচারীদের অধিকার। ফলে রিভিউ পিটিশনে রাজ্যের কোনও লাভ হবে না।
শুক্রবার ডিএ মামলার শুনানিতে কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য সওয়াল করেন, সরকারি কর্মচারীদের মৌলিক অধিকারের বিষয়টি বিবেচনা করে অত্যন্ত সচেতনভাবেই তিন মাসের মধ্যে বকেয়া ৩১ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। সেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ডিএ মিটিয়ে না দিয়ে রাজ্য সরকার অকারণে সময় নষ্ট করেছে।
রাজ্যের যুক্তির পালটা কনফেডারেশনের আইনজীবী আরও সওয়াল করেন যে নিয়ম অনুযায়ী, সর্বভারতীয় মূল্যবৃদ্ধির সূচকের ভিত্তিতে ডিএ পাওয়া রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের অধিকার। দিল্লির বঙ্গভবনে কর্মরত রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পান। সেক্ষেত্রে রাজ্যের অন্যান্য কর্মচারীরাও একই হারে মহার্ঘ ভাতা পাওয়ার অধিকারী বলে সওয়াল করেন কনফেডারেশনের আইনজীবী। একইসুরে সরকারি কর্মীদের আইনজীবী কল্লোল ভট্টাচার্য সওয়াল করেন, ডিএ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের অধিকার।
আরও পড়ুন: DA Review Petition Hearing: শুরু হল কাউন্টডাউন, শেষ বকেয়া ৩১% DA মামলার রিভিউ পিটিশনের শুনানি
সবপক্ষের বক্তব্য শোনার পর ডিএ মামলার রায়দান স্থগিত রেখেছে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ। কবে রায়দান করা হবে, তা জানানো হয়নি। তবে রিভিউ পিটিশনে রাজ্যের কোনও লাভ হবে না বলে আশাবাদী সরকারি কর্মচারীরা। তাঁদের বক্তব্য, কলকাতা হাইকোর্টে আগেই জানিয়ে দিয়েছে যে ডিএ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মৌলিক অধিকার। ফলে আবারও ডিএ মামলার রায় তাঁদের পক্ষে যাবে।
বিষয়টি নিয়ে কনফেডারেশনে আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, 'নির্দেশ পুনর্বিবেচনা করার কোনও জায়গা নেই। আদালত ইতিমধ্যে বলে দিয়েছে যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ পাওয়া মৌলিক অধিকার। রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা নিজেদের পাওনা-গণ্ডা আজ না হয় কাল পাবেন। রাজ্য সরকারকে কর্মচারীদের হকের পাওনা দিতে হবে।' সেইসঙ্গে কনফেডারেশনের সাধারণ মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, 'রায় আমাদের পক্ষে যাবে বলে আমাদের আস্থা আছে। আমাদের জয় নিশ্চিত বলেই মনে করছি।'
২০ মে'তে হাইকোর্টের রায়
গত ২০ মে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারকে বকেয়া ৩১ শতাংশ ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে। অর্থাৎ ১৯ অগস্টের মধ্যে বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হত। কিন্তু সেই সময়সীমা শেষের আগে ১২ অগস্ট রিভিউ পিটিশন দাখিল করে রাজ্য। তারইমধ্যে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করে ইউনিটি ফোরাম, কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ এবং সরকারি কর্মচারী পরিষদ।