দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক বিবাদ। আর তার জেরে মা, দাদা, বৌদি এবং ১৩ বছরের ভাইজিকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে খুন করল যুবক। এমনই হাড়হিম করা ঘটনা ঘটল হাওড়া থানা এলাকার এমসি ঘোষ লেনে। কেউ যে নিজের পরিবারের লোককে এরকম নৃশংসভাবে খুন করতে পারে তা দেখে হতবাক স্থানীয় থেকে শুরু করে পুলিশ। এই ঘটনায় গৃহবধ পল্লবী ঘোষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গৃহবধূর অভিযুক্ত স্বামী দেবরাজ ঘোষ এখনও পলাতক রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম মাধবী ঘোষ, তার বড় ছেলে দেবাশিস ঘোষ, বৌমা রেখা ঘোষ এবং নাতনি কৃষ্ণা ঘোষ। ঘটনায় অভিযুক্ত মাধবীর ছোট ছেলে দেবরাজ ঘোষ পলাতক রয়েছেন। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সম্পত্তি নিয়ে তাদের বিবাদ দীর্ঘদিনের। মাঝেমধ্যেই তাদের বাড়িতে অশান্তি হত। চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজ প্রায়ই তাদের বাড়ি শুনতে পেতেন স্থানীয়রা। তবে তাতে বিশেষ গুরুত্ব দিতেন না তারা। প্রতিবেশীরা একাধিবার তাদের সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তারপরেও সমস্যার সমাধান হয়নি।
গতকাল সম্পত্তি নিয়ে সকাল থেকেই ওই বাড়িতে চিৎকার চেঁচামেচি চলে। তবে দুপুরবেলাতে তাদের সেই অশান্তি ঠিক হয়ে যায়। পরে সন্ধ্যার সময় আবার তাদের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। তখনই ঘটে চরম পরিণতি। প্রতিবেশীরা চিৎকার চেঁচামেচি আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলেন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে সবাইকে চুপচাপ থাকতে দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। এরপর তারা বাড়িতে ঢুকে দেখেন চারজনের রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। কারও দেহ পড়ে রয়েছে মেঝেতে আবার কারও দেহ পড়ে রয়েছে ঘরের মধ্যে। বাড়িটি যেন রক্তে ভেসে যাচ্ছে।
এ ঘটনার পরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে দেহগুলি উদ্ধার করে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। দেবরাজের স্ত্রী পল্লবী বাড়িতেই ছিলেন। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। তবে ঘটনার পরে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় দেবরাজ। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান সম্পত্তিগত বিবাদে জেরে দেবরাজ এবং তার স্ত্রী পল্লবী দুজনে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন।পল্লবীকে আজ আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানাবে পুলিশ।