সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ ও ধরণ অন্য সব নির্বাচনকে হার মানিয়ে দিয়েছে। মনোনয়ন থেকে গণনা, দফায় দফায় হয়েছে কারচুপি। এবার প্রধান নির্বাচনে জাতি শংসাপত্র কারচুপির অভিযোগ উঠল তাদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বাবার নাম বদলে তপশিলি জাতি শংসাপত্র করিয়েছেন তৃণমূলি প্রধান। এই নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। মুখে কুলুপ তৃণমূলের।
এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে হয়নি এমন কোনও কারচুপি নেই। মক্কা থেকে মনোনয়ন, প্রশাসনকে ব্যবহার করে বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল থেকে শুরু করে, বিরোধী সংখ্যাগরিষ্ঠ এমন পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে বোর্ড গঠন পিছিয়ে দেওয়া, সব কিছুতেই হাত পাকিয়েছে তারা। আর এবার আলিপুরদুয়ারের নবনির্বাচিত তৃণমূলি প্রধানের বিরুদ্ধে বাবার নাম বদলে তপশিলি জাতি শংসাপত্র তৈরির অভিযোগ উঠল।
আলিপুরদুয়ার ১ নম্বর ব্লকের বীরপাড়ার পররপার গ্রাম পঞ্চায়েতের সদ্য নির্বাচিত প্রধান শ্রীতা রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বাবার নাম বদলে জাতি শংসাপত্র বানিয়েছেন তিনি। বীরপাড়ার বাসিন্দা শ্রীতা ১২/৯৯ নম্বর বুথ থেকে তৃণমূলের টিকিটে জেতেন। ওই বুথে গত নির্বাচনে লড়েছিলেন তাঁর স্বামী। কাছেই অন্য একটি বুথে শ্রীতার বাবার বাড়ি। বিরোধীদের অভিযোগ, শ্রীতার বাবার নাম সুনীল মোদক। অথচ তাঁর জাতি শংসাপত্রে বাবার নাম রয়েছে নলেশ্বর রায়। জাতি শংসাপত্র হয় বাবার পদবির ওপর নির্ভর করে। কী করে মোদক পদবির কোনও ব্যক্তি জাতি শংসাপত্র পেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ২০২১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর জারি করা হয় ওই শংসাপত্র।
এই নিয়ে শ্রীতা রায় বলেন, ‘সুনীল মোদকই আমার বাবা। নলেশ্বর রায়কে চিনি না।’ ওদিকে শ্রীতার স্বামী টিংকু রায়ের দাবি, ‘আমরা পালিয়ে বিয়ে করেছিলাম। ও বাড়ি থেকে কোনও কাগজ আনতে পারেনি। তাই সব নতুন করে করতে হয়েছে।’ তবে স্ত্রীর বাবার নাম কী করে বদলে গেল তা বলতে পারেননি তিনি।
বিজেপির দাবি, পরিকল্পনা করে এই দুর্নীতি করেছে তৃণমূল। শ্রীতা প্রধান করা হবে বলে আগে থেকেই প্রশাসনকে ব্যবহার করে ভুয়ো তথ্য দিয়ে জাতি শংসাপত্র তৈরি করিয়েছে তারা। এভাবে সংবিধানে তপশিলি জাতি ও উপজাতির জন্য সংরক্ষিত অধিকার লুঠ করছে তারা।
এই নিয়ে মুখে কুলুপ তৃণমূলের। তাদের দাবি, জাতি শংসাপত্র ছিল বলেই টিকিট দেওয়া হয়েছে। কে কী ভাবে জাতি শংসাপত্র বানিয়েছে তা জানা সম্ভব নয়।