যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় এখনও তেতে আছে রাজ্য। এই ঘটনার নেপথ্যে র্যাগিং আছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এবার আলিপুরদুয়ার জেলার বারোবিশা জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের হস্টেলে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠল। নবম শ্রেণির এক ছাত্রকে মারধর পর্যন্ত করা হল। তাকে চোর বদনাম দেওয়া হল। পরে ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তিন অভিযুক্ত ছাত্রকে চিহ্নিত করে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে খবর। এমনকী পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, ওই স্কুল হস্টেলে সিসিটিভি বসানোর দাবিতে সরব হয়েছেন অভিভাবকরা। বিষয়টি নিয়ে আলোড়ন পড়ে যাওয়ায় তৈরি হচ্ছে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? বারোবিশার জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের বেশ নাম রয়েছে। তাই এখানে ছেলেকে পাঠিয়ে নিশ্চিন্ত হন অভিভাবকরা। সেখানে এমন অত্যাচারের ঘটনা সামনে আসায় শিউরে উঠেছেন অভিভাবকরা। কেন্দ্রীয় বোর্ডের এই বিদ্যালয়ে দূর থেকে ছাত্ররা পড়তে আসে। আবাসিক এই স্কুলে হস্টেলে থেকেই পড়ুয়াদের পড়াশোনা করতে হয়। সেখানেইই এবার উঠল র্যাগিংয়ের অভিযোগ। গত ৮ অগস্ট এই স্কুলের হস্টেলে একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রের মানি ব্যাগ হারিয়ে যায় বলে অভিযোগ। তখন নবম শ্রেণির এক ছাত্রকে সন্দেহ করে বেধড়ক মারধর করা হয়। একাদশ শ্রেণির তিন ছাত্র একসঙ্গে এই মারধর করেছে বলে অভিযোগ।
তারপর ঠিক কী ঘটল? এই মারধর এবং অত্যাচারে নবম শ্রেণির ওই ছাত্রটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন তাকে বাইরের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করতে হয়। তখন গোটা ঘটনা নজরে আসে স্কুল কর্তৃপক্ষের। আর তৎক্ষণাৎ তিন ছাত্রকে সাসপেন্ড করে বাড়িতে পাঠানো হয়। এই সিদ্ধান্ত নিতে কমিটিও গড়া হয়েছিল। পরে যদিও হারিয়ে যাওয়া মানিব্যাগ খুঁজে পায় একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্র। কিন্তু ততক্ষণে সরি বলারও জায়গা ছিল না। একদিকে সাসপেন্ড অন্যদিকে এই অত্যাচারের পর নবম শ্রেণির ওই ছাত্র আর স্কুলে ফিরতে চাইছে না। ওই ছাত্রের কাকা সুজয় সাহা বলেন, ‘আমরা ১১ অগস্ট স্কুলে এসে এই অভিযোগ জানাই। রবিবার স্কুলে এসে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করি। স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানান, অভিযুক্ত তিন ছাত্রকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের ছেলে খুব আতঙ্কিত। আর স্কুলে আসতে চাইছে না। আতঙ্কে ভুগছে।’
আরও পড়ুন: ‘তোমরা মিলেমিশে চলো বললেই অভিভাবক হওয়া যায় না’, কুণালের নিশানায় কে?
আর কী জানা যাচ্ছে? এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় অনেক অভিভাবকই খোঁজ নেওয়া শুরু করেছেন। আর এই ঘটনা নিয়ে জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের টিচার ইনচার্জ অরুণকুমার সূত্রধর সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘এটা একেবারেই ঠিক কাজ হয়নি। অভিযুক্ত তিন একাদশ শ্রেণির ছাত্রকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। হস্টেল থেকে সরাসরি বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা নবম শ্রেণির ছাত্রের উপর অত্যাচার করার কথা স্বীকার করেছে। নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছে বলে তারা জানিয়েছে। তবে তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী কী পদক্ষেপ করা হবে সেটা স্কুল কমিটির বৈঠকে ঠিক হবে। কোনওভাবেই বিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।’