বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়ি রাজ্য–রাজনীতিতে বিশেষ মাত্রা যোগ করেছিল কিছুদিন আগে। কারণ এই দোতলা বাড়ি থেকে অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্টকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এখন তিনি তিহাড় জেলে বন্দি। তবে শুক্রবার রাতে আবার প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল এই বাড়ি। কারণ এখানে জেলার নেতাদের ভিড় দেখা গেল। তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় একাধিক নেতা–কর্মী এসেছেন অনুব্রত মণ্ডলের এই বাড়িতে। আর তারপরই তাঁদের নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।
হঠাৎ এমন ভিড়ের কারণ কী? কয়েকদিন আগে গরুপাচার মামলায় সুকন্যাকে দিল্লির সদর দফতরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সুকন্যা ইডির ডাকে সাড়া দেননি। আর তখন থেকেই সুকন্যা মণ্ডল কোথায় আছেন? তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়। তবে সূত্রের খবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় কেষ্টর মেয়ে সুকন্যা নিচুপট্টির বাড়িতে ফিরেছেন। আর ফিরেই তিহাড় জেলে তাঁর বাবা অনুব্রত মণ্ডলকে নানারকম ‘হেনস্থা’ এবং ‘নির্যাতন’ করা হচ্ছে শুনে তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন সুকন্যা। জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন বাড়িতে। এই তোলপাড় করা শব্দ শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে ভিড় জমে যায়।
তারপর ঠিক কী ঘটল? এই ঘটনার পরই সুকন্যা মণ্ডল তড়িঘড়ি ডেকে পাঠান বোলপুরের অনুব্রত ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতা–কর্মীকে। এঁদের মধ্যে অনেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলা সভাপতির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছেন। আর বাকিরা নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করতেন। তাঁদেরই বাড়িতে ডেকে পাঠানো হয়েছিল বলে খবর। সূত্রের খবর, এই নেতাদের সামনে সুকন্যা কার্যত ভেঙে পড়েন। আর চোখের জল ফেলে তিনি বলতে থাকেন, বাবা যখন এখানে ছিলেন, তখন তাঁর পাশে সবাই ছিলেন। আজ বাবা জেলে। এমন কঠিন সময়ে সবাই তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। এই জিনিস চলতে পারে না বলে জানিয়েছেন তিনি নেতাদের।
আর কী জানা যাচ্ছে? কয়েকদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, মেয়েটার বাবা এখন জেলে। তাই এমন দুঃসময়ে ওর পাশে সবাইকে থাকতে বলেছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি সুকন্যার মনে হয়েছে তিনি একদম একা। কেউ নেই তাঁর চারপাশে। বাবার অনুপস্থিতিতে কেউ তাঁকে সাহায্য করতে পাশে আসেনি। আর তাতেই রেগে গিয়ে এমন ভাঙচুর করা এবং জেলার নেতাদের ডেকে ক্ষোভ উগড়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে সুকন্যার এই মেজাজ দেখে উপস্থিত তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা–কর্মীরা চমকে যান। তখন সকলে তাঁর পাশে থাকার বার্তা দেন। যদিও এই নিয়ে কেউ মুখ খুলতে চাননি।