বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযান ঘিরে এদিন কার্যক্ষেত্র রণক্ষেত্র শিলিগুড়ি। পুলিশ ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে মৃত্যু হয়েছে গেরুয়া দলের এক কর্মীর। আহত অনেক বিজেপি কর্মী, চোট পেয়েছেন বেশ কিছু পুলিশকর্মীও। এই ঘটনার জন্য বিজেপি কর্মীদের কার্যত দুষেছে রাজ্য পুলিশ। অন্যদিকে তাদের এই টুইটের জন্য তুলোধোনা করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
এদিন বিজেপি ও দলের ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা রাজ্যের উত্তরবঙ্গের সচিবালয় উত্তরকন্যা অভিযান নিয়েই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। ১৪৪ ধরা অমান্য করে বিজেপি কর্মীরা এগিয়ে যান। জবাবে টিয়ার গ্যাস ও জল কামান ছোঁড়ে পুলিশ। একটি গোলাপী ডাই মিশ্রিত জলও ছোঁড়া হয়। টিয়ার গ্যাসের প্রভাবে তেজস্বী সূর্য ও সৌমিত্র খান অসুস্থ হয়ে পড়েন। দিলীপ ঘোষ, কৈলাস বিজয়বর্গীয় সহ শীর্ষ নেতারা এই প্রতিবাদ বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন। দুর্ভাগ্যজনক উলেন রায় নামে এক বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়। কীভাবে বছর পঞ্চাশের এই কর্মীর মৃত্যু হয়েছে, সেই নিয়ে অবশ্য বিতর্ক চলছে। কেউ বলছে পুলিশের লাঠিতে আহত হয়েছিলেন জলপাইগুড়ির গজলদোবার এই বাসিন্দা। আবার অন্য বিজেপি নেতারা বলছেন পেলেটের অভিঘাতে মৃত্যু হয় তাঁর। এই মৃত্যুর প্রতিবাদে উত্তরবঙ্গে মঙ্গলবার বনধ ডেকেছে বিজেপি।
রাহুল সিনহা সহ অন্যান্য বিজেপি নেতারা রাজ্যপালের সঙ্গে গিয়ে দেখা করে তাঁকে পুরো ঘটনাটি খুলে বলেন। ততক্ষণে রাজ্য পুলিশের তরফ থেকে এদিনের পুরো ঘটনার দায় বিজেপির ওপর চাপানো হয়েছে। একই সঙ্গে পুলিশ যে সংযম দেখিয়েছে তাও টুইটারে বলেছে রাজ্য পুলিশ। উলেন রায়ের মৃত্যুর কারণ পোস্টমর্টেম না হলে যে বলা যাবে না, সেটাও জানিয়েছে পুলিশ।
কিন্তু এই টুইটের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বিভিন্ন ইস্যুতেই তিনি রাজ্যের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সোচ্চার। এদিনও তার অনথ্যা হল না। তিনি বলেন যে রাজ্য পুলিশের এরকম অবস্থানে তিনি স্তম্ভিত। আগে থেকেই এরকম অবস্থান নিলে তাহলে আর নিরপেক্ষ তদন্ত করা সম্ভব নয় বলে তিনি জানান। তাঁর অভিযোগ যে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য নিরপেক্ষতা শিকেয় তোলা হয়েছে। রাজ্যপাল বলেন যে রাজনৈতিক সংঘর্ষ গণতন্ত্রকে বিপন্ন করে তোলে। পুলিশকে পক্ষপাতিত্ব করা থেকে তিনি বিরত থাকতে বলেন ও একথাও বলেন যে বিরোধীদের কর্মসূচী করার সুযোগ পুলিশের মর্জির ওপর নির্ভর করতে পারে না।
এদিন উত্তরকন্যার দুই দিক দিয়ে মিছিল করে আসে বিজেপি ও বিওয়াইজেএমের কর্মীরা। তাদের আটকালে তারা পাথর বৃষ্টি করে বলে অভিযোগ। তিনবাত্তি মোর ও ফুলবাড়ি বাজার সহ চার জায়গায় সংঘর্ষ হয়। সায়ন্তন বসু বলেন যে তাদের ৫২ জায়গায় ব্যারিকেড দিয়ে আটকায় পুলিশ।
সৌগত রায় বলেন যে বিজেপি কর্মীরা চাইছিল পুলিশ গুলি চালাক কিন্তু অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পুলিশ পরিস্থিতিকে সামাল দিয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। এদিন বিজেপি যুব মোর্চার কর্মীরা ব্যারিকেড ভাঙেন বেশ কয়েক জায়গায়। একটি পুলিশ চৌকিও লণ্ডভণ্ড করা হয় বলে অভিযোগ। টুইটারে যদিও পুলিশি আক্রমণ নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন তেজস্বী সূর্য সহ একাধিক বিজেপি নেতা।