একুশের নির্বাচনের পর থেকেই বিজেপিতে ভাঙন শুরু হয়েছে। যাঁরা বিরাট আশা নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা এখন পাততাড়ি গোটাচ্ছেন। নির্বাচনের আগে দমবন্ধ হয়ে আসছিল যাঁদের তাঁরা সেফ হোম হিসাবে গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন। কিন্তু এখন তাঁরা হতাশ। তাই গেরুয়া সংস্রব ছাড়তে পারলে বাঁচেন তাঁরা। এমনই এক বিজেপি নেতার নাম নীলাঞ্জন রায়। তিনি লোকসভার পর বিধানসভা নির্বাচনেও প্রার্থী হন। কিন্তু দু’টিতেই হেরে তিনি হতাশ। এমনকী দলের প্রতি তাঁর ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাই সম্প্রতি দলের নানা কর্মসূচি বয়কট করে জেলা নেতৃত্বকে ক্ষোভের বার্তা দিচ্ছেন তিনি।
নীলাঞ্জন রায় বালুরঘাটে উপস্থিত থেকেও যোগ দেননি রাজ্যের সাংগঠনিক সম্পাদকের নেতৃত্বে জেলা কার্যকারিনী বৈঠকে। এমনকী ভুয়ো টিকা নিয়ে বালুরঘাটে অবস্থান আন্দোলনেও যোগ দেননি। বৈঠকে যোগ না দেওয়ার পাশাপাশি নীলাঞ্জন বেসুরো হতে শুরু করেছেন। আর তা দেখে দলে ভাঙনের আঁচ করছেন জেলা বিজেপির অনেকে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তবে এখনও সেখান থেকে কোনও সবুজ সংকেত মেলেনি।
যদিও নীলাঞ্জন অনুগামীরা অভিযোগ করেন, দক্ষিণ দিনাজপুরে বিজেপির কিছু নেতা তাঁকে পছন্দের বালুরঘাট আসনে প্রার্থী হতে দেননি। নীলাঞ্জন জেলা কংগ্রেস সভাপতি থাকাকালীন ৩৬ জন পদাধিকারীদের নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁর অনুগামীদের মধ্যে সিপিআইএমের তপন জোনাল সম্পাদক নীরোদ দাস থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের আইএনটিটিইউসি জেলা সভাপতি বিপ্লব মণ্ডলও ছিলেন। কিন্তু এখন পরিস্থিতি পাল্টে গিয়েছে। তাই তিনি বেসুরো হয়ে পড়েছেন। এই বিষয়টি লক্ষ্য করে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে নীলাঞ্জনের বিরুদ্ধে নালিশ ঠোকা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বালুরঘাট কেন্দ্রে প্রার্থী এবং বিজেপির জেলার শীর্ষ পদে দায়িত্বের শর্তে নীলাঞ্জন বিজেপিতে যোগ দেন। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে বালুরঘাট থেকে তিনি টিকিট পাননি। টিকিট পেয়েছিলেন সুকান্ত মজুমদার। আর তাঁকে তৃণমূল কংগ্রেসের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপরীতে ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্রে দাঁড় করানো হয়। যথারীতি তিনি হেরে যান। ২০১৮ সালে বালুরঘাটে মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে আসেন নীলাঞ্জন। এখন মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরেছেন। তাই এবার তাঁর হাত ধরেই ২১ জুলাই তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরতে চান তিনি বলে সূত্রের খবর।