হুগলির পাণ্ডুয়ায় বোমা ফেটে মৃত্যু হল এক কিশোরে। এই ঘটনায় জখম আরও দুই কিশোর। আজ ওই এলাকাতেই সভা করার কথা রয়েছে তৃণমূলের বিদায়ী সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এক কিশোরের হাত উড়ে গিয়েছে। বোমায় পায়ে গুরুতর ক্ষত হয়েছে এক কিশোরের। হুগলির ইমামবাড়া হাসপাতালে ওই কিশোর চিকিৎসাধীন।
খেলতে গিয়ে বিপত্তি
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সোমবার সকালে পাড়ারই তিন ছেলে রাস্তায় একসঙ্গে ক্রিকেট খেলছিল। সেই সময় বল পুকুর পাড়ে গিয়ে পড়ে। পুকুর পাড়েই আবর্জনার স্তুপের মধ্যে একটি বালতি রাখা ছিল। বুঝতে না পেরে বল ভেবে তুলতে গিয়ে বালতির মধ্যে হাত ঢোকায় এক কিশোর। সেই সময় বোমা ফেটে যায়। বিকট শব্দে এলাকা কেঁপে ওঠে। ছিটকে পড়ে ওই কিশোর। তার কাছে থাকা আরও দুই কিশোর গুরুতর জখম হয়। হাত উড়ে যায় এক কিশোরের।
আরও পড়ুন। গেম খেলার নেশাই কাল, যুবককে শুঁড়ে করে তুলে নিয়ে গেল হাতি, ১ কিমি দূরে মিলল দেহ
তাদের আর্তনাদ শুনে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রক্তাক্ত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে বাসিন্দারা তাদের স্থানীয় ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা এক জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাকি দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। একজনের পা মারাত্মক ভাবে জখম হয়েছে। অন্যজনের হাত বাদ দিতে হতে পারে।
আরও পড়ুন। বিমানে ওঠা হল না, আচমকাই মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন যাত্রী, একী হল কলকাতা বিমানবন্দরে
হতবাক স্থানীয় বাসিন্দারা
এই ঘটনায় হতবাক স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা জানিয়েছেন, আপাতত শান্ত এলাকায় কীভাবে কারা বোমা রেখে গিয়েছিল, তাঁরা বুঝতে পারছেন না।
স্থানীয় বাসিন্দা নীলিমা ঘোষ সরকার বলেন,'সকাল নটা নাগাদ আমরা বিকট শব্দ শুনতে পাই। গিয়ে দেখি তিন বাচ্চা পড়ে রয়েছে। চারপাশের এলাকা ধোয়ায় ভরে গিয়েছে। বোমের যে এরকম শব্দ হয় তা আমরা জানতাম না।'
ভোটের আগে থেকেই একাধিবার বল ভেবে খেলতে গিয়ে আহত হয়েছে একাধিক শিশু। মুর্শিদাবাদেও একাধিক বিস্ফোরণের অভিযোগ উঠেছে। পাণ্ডুয়ায় বোমা ফেটে কিশোরের মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে । প্রশ্ন উঠছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে এই ঘটনা হল তা নিয়ে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
রাজনৈতিক চাপানউতোর
বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে তৃণমূলকে তোপ দেগেছেন হুগলি কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘আমি এলাকায় যাচ্ছি। অভিষেক আসছেন। তার আগে ওঁকে তৃণমূলের কর্মীরা দেখাচ্ছেন, কে কত বড় আসামি। গণতন্ত্রের উৎসবে গণতন্ত্রের মৃত্যু চলছে। যে ভাবে বিভিন্ন জায়গা থেকে বোমা উদ্ধার হচ্ছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে মানুষের উপর তৃণমূলের বিশ্বাস নেই। তারা বন্দুকের উপর, বোমার উপর বিশ্বাস করে।’
সিপিএম নেতা তথা দমদম কেন্দ্রের বাম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী সংবাদমাধ্যমে বলেন, 'ভয়ঙ্কর, মর্মান্তিক ঘটনা। পুকুরপাড়ে খেলতে গিয়ে বোমায় শিশুর মৃত্যু। প্রশাসন নিশ্চুপ। কারা এই বোমা মজুত করছে? পুলিশ কী করছে? দুষ্কৃতীরা যদি মনে করে আমাদের মাথায় পুলিশমন্ত্রীর হাত রয়েছে, তা হলে সর্বনাশ হয়ে যাবে।'
আরও পড়ুন। শিক্ষকদের আদর্শ আচারণ কেমন হওয়া উচিত, জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট