হাতে বন্দুক নিয়ে মহিলাদের দিকে তেড়ে যাচ্ছেন তৃণমূলশাসিত পঞ্চায়েতের প্রধানের দাদা। আতঙ্কে এদিক–সেদিক ছুটে পালাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। রবিবার এমনই একটি ভিডিও ভাইরাল হল। আর তাতেই ফের প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। রবিবার সকালে দেগঙ্গার চাঁপাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের গোঁসাইপুর গ্রামের ঘটনা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, অঞ্চল সভাপতি আবদুল রাজ্জাকের সঙ্গে পঞ্চায়েত প্রধান হুমায়ুন রেজা চৌধুরীর দ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাকে ঘিরে রীতিমতো উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে চাঁপাতলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ওই গ্রামে।
গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, এদিন সকালে গোঁসাইপুর গ্রামে সইদুল ইসলামের বাড়ির ওপর চড়ায় হন তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান হুমায়ুন রেজা চৌধুরীর অনুগামীরা। তাঁদের নেতৃত্বে ছিলেন হুমায়ুন রেজা চৌধুরীর দাদা হাসান রেজা চৌধুরী। সেখানে মহিলাদের হুমকিও দেওয়া হয়। হুমায়ুন রেজা চৌধুরীর দাদা হাসান একটি এয়ারগান নিয়ে মহিলাদের দিকে তেড়ে যান বলে অভিযোগ। পাশাপাশি ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতেও তেমনটাই দেখা গিয়েছে।
স্থানীয় তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, সইদুল ইসলাম আসলে তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি আবদুল রাজ্জাকের অনুগামী। এই এলাকায় চাঁপাতলা গ্রাম পঞ্চায়েত হুমায়ুন রেজা চৌধুরীর সঙ্গে আবদুল রাজ্জাকের দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা চলছে। রবিবার সকালে সইদুল ইসলামের বাড়িতে চড়াও হন হুমায়ুন রেজা চৌধুরীর অনুগামীরা। পঞ্চায়েত প্রধানের দাদা হাসানের হাতে ছিল একটি বন্দুক। এ নিয়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ানোর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দেগঙ্গা থানার পুলিশ।
যদিও দাদা হাসানের বিরুদ্ধে বন্দুক হাতে হামলা চালানোর ঘটনায় হুমায়ুন রেজা চৌধুরীর সাফাই, কাছেই একটি ভেড়ি এলাকায় পাখি শিকার করছিলেন তাঁর দাদা হাসান। গন্ডগোলের খবর পেয়ে সেখান থেকে তিনি চলে আসেন ঘটনাস্থলে। পঞ্চায়েত প্রধানের দাবি, বন্দুক দেখিয়ে কাউকে হুমকি দেওয়ার চেষ্টা করেননি হাসান। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, শনিবার রাতে সইদুল ইসলামের জামাই শেখ মহিদুল্লা এলাকার এক ভ্যানচালকের ওপর চড়াও হন। ওই ভ্যানচালককে গালিগালাজ, মারধর করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এ ঘটনার প্রতিবাদেই এদিন গোঁসাইপুর গ্রামে সইদুল ইসলামের বাড়িতে চড়াও হন ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। এতে দলীয় কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই।
এদিকে, এ ঘটনার ব্যাপারে পুলিশ জানিয়েছে, পুরনো বিবাদের জেরেই ঘটনাটি ঘটেছে। তবে দু’পক্ষের কেউই কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি বলে দাবি পুলিশের। অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পুলিশ এদিন জানিয়েছে। এদিকে, স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, তৃণমূলের এই দুই গোষ্ঠীর সঙ্ঘর্ষের ঘটনা নতুন নয়। এর আগে প্রকাশ্য রাস্তায় এই দুই গোষ্ঠীর লোকজন মারামারিতে লিপ্ত ছিল, এখন বোমাবাজি করছে। আর এখন বন্দুক নিয়ে তাদেরই দলের লোকজন অপর পক্ষের ওপর হামলা চালাচ্ছে।