একুশের বিধানসভা নির্বাচনে নজরকাড়া কেন্দ্র ছিল নন্দীগ্রাম। সেখানেই ২৭ মার্চ প্রথম দফার নির্বাচনে তিন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর বাড়িতে হামলা চালায় বিজেপি বলে অভিযোগ। ওইদিনের হামলায় গুরুতর জখম হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের একনিষ্ঠ কর্মী রবীন মান্না। তাঁকে নন্দীগ্রাম থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তারপর মারা যান রবীন। রবীনের মৃত্যুতে শুধু শোকপ্রকাশ করেননি তৃণমূল নেত্রী, বরং ক্ষমতায় সিআইডি এই ‘খুনের’ তদন্ত করবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। সেই কথাই রাখলেন তিনি। সিআইডি কাঁথি মহকুমার হেড়িয়া থেকে রাধাকান্ত দাস নামে এক বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করল। এই ঘটনার সঙ্গে সে জড়িত বলে প্রমাণ পেয়েছেন তদন্তকারীরা।
অভিযুক্ত বিজেপি কর্মী রাধাকান্ত দাসকে হলদিয়া আদালতে পেশ করা হয়। এমনকী অভিযুক্তকে ১০ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে রাখবে সিআইডি। সিআইডি সূত্রে খবর, রবীন মান্না–সহ সেদিন আরও যে দুই তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী হামলার শিকার হন, তাঁদের সঙ্গেও কথা বলা হবে। এই ঘটনায় আরও এক বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জেরা করেই আসল তথ্য প্রকাশ্যে আনতে চায় সিআইডি। তাই সমস্ত তথ্য জোগাড় করা হয়েছে।
এই বিষয়ে বিজেপি তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ–সভাপতি প্রলয় পাল বলেন, ‘ওরা তো যাকে পারে তাকে গ্রেফতার করে। আমাদের সংগঠনকে দুর্বল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ২৭ মার্চ থেকে এমন ধরপাকড় শুরু হয়েছে। প্রায় আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এফআইআরে নাম নেই, নাম জুড়ে দিচ্ছে। যা ইচ্ছে তাই করছে।’
জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কো–অর্ডিনেটর মামুদ হোসেন পাল্টা বলেন, ‘রাজ্যের এজেন্সি হলে তদন্ত ভুল আর কেন্দ্রের এজেন্সি হলে তা সঠিক—এটা কেমন যুক্তি। বিজেপির অভিযোগ করা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সিআইডির তদন্তে আস্থা রাখা উচিত।’ উল্লেখ্য, রবীন মান্না এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন রোজ তাঁর শারীরিক অবস্থা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রবীন মান্নার বাড়িতেও গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি বিজেপিকে নিশানা করে জানিয়েছিলেন এই ঘটনার তদন্ত হবে। হলোও তাই।