পূর্ব মেদিনীপুরের শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে যখন রাজ্য–রাজনীতি তোলপাড় হয়েছিল, তখন নাম না করে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘কোথায় যাবি যা না। কত দাদার অনুগামী আছে দেখে নেব। প্রয়োজন হলে তাঁরাও যেতে পারেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়া না থাকলে পুরসভার বাইরে আলু বিক্রি করতিস রে, আলু বিক্রি করতিস।’ তারইমধ্যে ‘দাদা’ দল বদলে বিজেপিতে ভিড়েছেন। সেই দাদার সঙ্গে দেখা করছেন পাঁশকুড়ার এক সময়ের বিরোধী নেতারা। কিন্তু দাদার ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতাদের এখনও পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না।
তৃণমূল শিবিরের মতে, ‘দাদার অনুগামী’-রা এখন বুঝে গিয়েছেন যে গেরুয়া শিবিরে তাঁদের মূল্য নেই। তাই ঘরের ছেলের মতো তাঁরা ঘরেই রয়েছেন। অবশ্য ‘দাদা’-র সঙ্গে থাকার ইচ্ছে প্রবল। কিন্তু পরিস্থিতি তা হতে দিচ্ছে না। শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে সম্প্রতি দেখা করেছেন পাঁশকুড়ার বিজেপি নেতা সিন্টু সেনাপতি এবং পাঁশকুড়ার বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার যুব মোর্চার সভাপতি প্রতীক পাখিরা। সূত্রের খবর, বিধানসভা নির্বাচনের আগে পাঁশকুড়া এলাকায় বিজেপি’র সংগঠনকে মজবুত করতে ওই দুই নেতার সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ বৈঠক করেন শুভেন্দু। এই বিষয়ে বিজেপি’র রাজ্য যুব মোর্চার সম্পাদক তথা পাঁশকুড়া পুরসভার বিরোধী কাউন্সিলর সিন্টু বলেন, ‘এলাকার সমস্ত বিজেপি নেতা, কর্মীরা শুভেন্দুদাকে চাইছেন। এই বার্তা নিয়ে আমি ওঁর সঙ্গে বৈঠক করেছি। তিনি পাঁশকুড়ায় আসার সম্মতি জানিয়েছেন।’
রাজনৈতিক মহলের মতে, এই পরিস্থিতিতে পাঁশকুড়ায় শুভেন্দুর তৃণমূলে থাকাকালীন অনুগামীরা কার্যত চুপচাপই রয়েছেন। ২০১১ এবং ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন, ২০১২ এবং ২০১৭ সালের পাঁশকুড়া পুরসভার নির্বাচনে তৃণমূলের সাফল্যের কারিগর ছিলেন শুভেন্দু। এমনকী ২০১৭ সালে সদ্য নিযুক্ত আনিসুর রহমানকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে নন্দ মিশ্রকে পাঁশকুড়ার পুরপ্রধান পদে বসানোর পিছনেও ভূমিকা ছিল শুভেন্দুর। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক অনুগামীর দাবি, শুভেন্দু দল বদল করায় পাঁশকুড়ার কোনও তৃণমূল নেতা ওঁর পাশে নেই। উনি পাঁশকুড়াতে বিজেপির কর্মসূচিতে এলেও তাঁর পাশে একদা ঘনিষ্ঠ কেউই থাকবেন না।