ইতি পড়ল না নবান্ন-রাজভবন তরজায়। রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের চিঠির পালটা জবাব দিল রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর। স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে জানানো হয়, ধনখড় যেসব দাবি করেছেন, তার সঙ্গে সত্যের কোনও যোগ নেই। পুরোপুরি মনগড়া কাহিনি। তার পালটাও দিলেন ধনখড়।
মঙ্গলবার রাতের দিকে স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে পাঁচটি টুইট করা হয়। সাফ জানানো হয়, ধনখড়ের অভিযোগ পুরোপুরি অসত্য এবং হতাশাজনক। সেইসঙ্গে যেভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠানো হয়েছে, তা যাবতীয় নীতি লঙ্ঘন করেছে। মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠি সংবাদমাধ্যমে দেওয়ার পাশাপাশি টুইটারে প্রকাশ করে দেওয়া হয়েছে। যা এই ধরনের কথাবার্তার ‘পবিত্রতাকে’ নষ্ট করেছে। প্রশাসনিক চিঠিকে ধনখড় যেভাবে প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছেন, তাতে হতবাক হয়ে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তার উপর আবার চিঠিতে যা বলা হয়েছে, তা পুরোপুরি মনগড়া বলে দাবি করেছে স্বরাষ্ট্র দফতর।
তৃতীয় দফায় তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার শপথগ্রহণের আগে থেকেই মমতার সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছেন ধনখড়। ভোট-পরবর্তী হিংসার জন্য মমতার বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। মমতার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানেও দু'জনে কার্যত বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলেন। পরেও একাধিকবার মমতা দাবি করেছেন, ভোটের ফলাফল প্রকাশের সময় প্রশাসন তাঁর হাতে ছিল না। নির্বাচন কমিশনের হাতে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ছিল। তাই ভোট-পরবর্তী হিংসার দায় কমিশনের। নয়া সরকার ক্ষমতায় আসার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এখন পরিবেশ শান্ত হয়েছে। কিন্তু সেই ব্যাখ্যা মানতে নারাজ ধনখড়। মঙ্গলবার দিল্লি যাওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রীকে তোপ দেগে চিঠি লেখেন। অভিযোগ করেন, ভোট-পরবর্তী হিংসার ঘটনা মমতা নীরব এবং নিষ্ক্রিয় হয়ে আছেন।
যদিও স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, যখন রাজ্যে ভোট-পরবর্তী হিংসা লাগামছাড়া হয়েছিল, তখন আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্বে ছিল নির্বাচন কমিশন। নয়া সরকারের শপথগ্রহণের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। দমিয়ে দেওয়া হয়েছে সমাজবিরোধীদের। সমস্ত সমাজবিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাজ্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে রাজ্য সরকার বদ্ধপরিকর বলে স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র দফতরের সেই জবাবের আবার পালটা দিয়েছেন ধনখড়। দিল্লি গিয়ে ধনখড় বলেন, ‘আমি হতবাক যে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর আমার চিঠির প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। স্বরাষ্ট্র দফতরের এরকম প্রতিক্রিয়া দুর্ভাগ্যজনক। পুলিশ এবং প্রশাসন নিজেদের আইনি সীমাবদ্ধতা ভুলে গিয়েছে।’