মধ্যমগ্রামের নির্যাতিতার কায়দায় কোচবিহারের ধর্ষিতার দেহ ছিনতাইয়ের চেষ্টার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বুধবার কোচবিহারের গণধর্ষিতা নাবালিকার মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে বার করার সময় দেহ দখল করতে ঝাঁপিয়ে পড়ে তৃণমূল। এর জেরে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এমনকী সদ্য সন্তানহারা বাবাকে নিয়ে টানাটানি শুরু করে দুুপক্ষ।
২০১৩ সালের বর্ষবরণের রাতে পুলিশের মদতে মধ্যমগ্রামে ধর্ষণের শিকার এক তরুণীর দেহ ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ফের একবার একই রকম অভিযোগ উঠল শাসকদলের বিরুদ্ধে। এবার কোচবিহার। অভিযোগ কোচবিহারের নির্যাতিতার দেহ বুধবার দুপুরে মহারাজা জিতেন্দ্র নারায়ণ হাসপাতাল থেকে বের করতেই জেলা তৃণমূল সভাপতির নেতৃত্বে ঝাঁপিয়ে পড়ে দলের কর্মীরা। যে কোনও উপায়ে দেহ দখলে মরিয়ে হয়ে ওঠে তারা। আগে থেকেই সেখানে হাজির ছিলেন বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা সহ দলের অন্যান্য কর্মীরা। তাঁদের সঙ্গে সংঘর্ষ বেঁধে যায় তৃণমূল কর্মীদের। এর পর দুপক্ষই নিহত কিশোরীর বাবাকে নিজেদের সমর্থক বলে দাবি করতে থাকে। বেশ কিছুক্ষণ হাসপাতাল চত্বর রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। এর পর ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে তারা ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে।
এই ঘটনা নিয়ে জেলার তৃণমূল নেতা পার্থপ্রতীম রায় বলেন, ‘নির্যাতিতার কাকিমা তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য। নির্যাতিতার বাবা অরাজনৈতিক ব্যক্তি। তাঁকে বিজেপি প্রভাবিত করার চেষ্টা করছিল। আমাদের ছেলেরা তার প্রতিবাদ করেছে।’ পালটা বিজেপি জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, ‘যারা গ্রেফতার হয়েছে তাদের পরিচয় কী? কেন ২ দিন ধরে নির্যাতিতাকে হাসপাতালে ভর্তি না করে ফেলে রাখা হল? নির্যাতিতাকে ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে দিতে হবে এই প্রস্তাব নিয়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছিলেন কারা? আমরাই মেয়েটিকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। আমাদের চাপেই পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে। তখন কোথায় ছিল তৃণমূল।’
২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর মধ্যমগ্রামের এক তরুণীর মৃত্যু হয় কলকাতার হাসপাতালে। অভিযোগ ছিল, তরুণীকে ধর্ষণ করে স্থানীয় এক যুবক। গ্রেফতারির জামিনে মুক্ত হয়ে ফের তরুণীকে ধর্ষণ করে সে। অপমানে গায়ে আগুন দেন তরুণী। কিন্তু মৃত্যুর পর তাঁর দেহ বাড়িতে আনতে দেয়নি পুলিশ ও তৃণমূল। নিমতলা শ্মশানে দেহ সৎকারে তাদের বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ।