রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা এখন কেন্দ্রীয় সরকারি হারে ডিএ বা মহার্ঘভাতার দাবিতে অনড়। আর এই দাবিকে সামনে রেখে লাগাতার আন্দোলন করে যাচ্ছেন কলকাতার রাস্তায় মিছিল, মিটিং, ধরনা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এই বিষয়ে মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। তাই বিষয়টি বিচারাধীন। কারণ সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার এখনও কোনও ফয়সালা হয়নি। এই আবহে পূর্ব মেদিনীপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে অধ্যাপকদের বিমাতৃসুলভ আচরণ পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে। রাজ্য সরকার এখন মহার্ঘভাতা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ। ৩০ শতাংশ ডিএ দাবি করেছেন অধ্যাপকরা। আর তা না পেয়ে ছাত্রদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছেন অধ্যাপকরা বলে অভিযোগ উঠেছে। পূর্ব মেদিনীপুরে কোলাঘাট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যাপকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পড়ুয়ারা কলেজে ক্লাস করতে এলে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনকী চেষ্টা করেও অধ্যাপকদের কাজে ফেরাতে পারেনি কলেজ কর্তৃপক্ষ। অবশেষে এই অচলাবস্থা কাটাতে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তাঁরা।
এদিকে কোলাঘাট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বিদ্যাসাগর সোসাইটি ফর ইন্টিগ্রেটেড লার্নিং দ্বারা পরিচালিত। নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী এই সোসাইটির চেয়ারম্যান। এই কলেজে ১৩০০ জন পড়ুয়া আছে। এখানে ভর্তির সময় পড়ুয়াদের মোটা অঙ্কের বেতন দিতে হয়। এই কলেজে নতুন গভর্নিং বডি গঠনের দাবি জানানো হয়েছে। আর তা নিয়ে আন্দোলন করছেন কলেজের অধিকাংশ অধ্যাপকরা। কিন্তু দাবি পূরণ হয়নি। তাই ২২ সেপ্টেম্বর থেকে তাঁরা ছাত্রদের পঠনপাঠন বন্ধ করে দেন। এমনকী অন্যান্য অধ্যাপক যাঁরা ক্লাস নিচ্ছিলেন, তাঁদেরকে জোর করে ক্লাস নিতে দেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ। দুর্গাপুজোর পরও জারি রয়েছে অচলাবস্থা।
আরও পড়ুন: বোলপুর ছাড়লেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, বিশ্বভারতী থেকে গাড়ি চালিয়ে নিজেই বেরলেন
ঠিক কে, কী বলছেন? এই দাবি আ মিটলে আন্দোলন চলবে বলে আওয়াজ তোলা হয়েছে। আন্দোলনকারীদের পক্ষে অধ্যাপক সত্যজিৎ ভুঁইয়া বলেন, ‘রেজিস্ট্রারের অপসারণ, ডিএ এবং নয়া গভর্নিং বডি গঠনের দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলছে। আমরা চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেও পাইনি।’ কোলাঘাট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর শৈবাল কুমার প্রধানের কথায়, ‘তিনটি দাবি নিয়ে কলেজের বেশিরভাগ শিক্ষক ক্লাস বন্ধ রেখেছেন। তাঁদের পঠনপাঠন চালু রাখতে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু তাঁরা নিজেদের দাবিতে অনড়। কয়েকজন শিক্ষক ক্লাস নিতে চাইলেও বিক্ষুব্ধরা ক্লাস নিতে দিচ্ছেন না। সোসাইটির চেয়ারম্যান বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে জানিয়েছি।’ কোলাঘাট ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অসীম মাজি বলেন, ‘ওঁরা যা করছেন তা শিক্ষক সুলভ আচরণ নয়। ডিএ মামলা এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন।’