প্রশাসনিক বৈঠক বলে কথা। যাবতীয় অভাব-অভিযোগ শুনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন। কোনও পান থেকে চুন খসলেই জেলাশাসকের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন। কিন্তু জেলাশাসকের কাজে যে তিনি পুরোপুরি ‘সন্তষ্ট’ নন, তা ঘুরিয়ে বুঝিয়েও দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার খড়্গপুরে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে জেলার পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের মতো স্বভাবতই হাজির ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল। জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনিক মহলের বিভিন্ন কথা শুনেছেন। প্রয়োজন মতো জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন।
তারইমধ্যে বিদ্যাসাগর শিল্পতালুকে স্টেডিয়ামের মাঠে সেই বৈঠকে শবর প্রসঙ্গ উঠলে লোধা-শবর কল্যাণ সমিতির সভাপতি বলাই নায়েককে ডেকে নেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কী কী বিষয় তুলে ধরার আছে, তা জানতে চান। বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্য সরকারের প্রশংসা করেন সমিতির সভাপতি। তবে শেষ লগ্নে অনুযোগ করে মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, 'আমাদের সব রেশন কার্ডগুলি অন্ত্যদয় ছিল। সেখানে আরকেএস-১ এবং আরকেএস-২ হয়ে গিয়েছে। সেজন্য তাঁরা সঠিকভাবে ৩৫ কেজি খাদ্য শস্য পাচ্ছেন না।'
বলাই জানান, দাঁতন ব্লকের প্রায ৩০ জনের আরকেএস-২ কার্ড থাকা সত্ত্বেও তাঁরা খাদ্যশস্য পাননি। তবে বিষয়টি জেলাশাসকের কানে তুলতেই পরদিন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়। বিষয়টি স্থায়ীভাবে সমস্যা সমাধানের আর্জিও জানান তিনি।লোধা-শবর কল্যাণ সমিতির
সভাপতির সেই আর্জি শুনে খাদ্য দফতরকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে হাসতে হাসতে বলেন, ‘ডিএম ম্যাডাম তো নিজেও ডাক্তার। আর ডিএম ম্যাডাম একটু ফেসবুক কম করে একটু ছোটাছুটি করতে করলে অনেক কাজ করতে পারে। মহিলা ভালো কাজ করতে পারে। তুমি আর একটু ভালো করে একটু এলাকায় এলাকায় ঘোরো।’
খোদ মুখ্যমন্ত্রীর সেই ‘পরামর্শ’-এ মাথা নেড়ে সম্মতি জানান জেলাশাসক। তবে প্রশাসনিক মহলের মতে, ‘পরামর্শ’ দিয়ে আদতে মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিলেন যে জেলাশাসকের কাজে তিনি ‘সন্তষ্ট’ নন।