আজ রবীন্দ্র জয়ন্তী। এমন একটা সময় এই দিনটি পড়েছে যখন গোটা দেশ তথা রাজ্যজুড়ে করোনা ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ওয়েভে সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় উদ্বেগ বাড়ছে। তাই এবার বিশ্বভারতীতে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উদযাপন স্থগিত করা হল। যদিও গতবছর করোনার কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে গুরুদেবের জন্মজয়ন্তী উদযাপন করেছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এবার করোনার রক্তচক্ষুর কারণে কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হচ্ছে না বলে বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
কিন্তু গুরু অবশ্য লিখেছিলেন, ‘সংকটেরও বিহ্বলতায় হও না ম্রিয়মান। মুক্ত করো ভয়, আপনা মাঝে শক্তি ধরো নিজেরে করো জয়।’ যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকত তাহলে প্রতি বছরের মতো এবারও ২৫ বৈশাখ শান্তিনিকেতনের উপাসনা গৃহে উপাসনা ও রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়ে বিশ্বকবিকে স্মরণ করা যেত। সঙ্গে চলত রবীন্দ্রভবনে গুরুদেবের বিভিন্ন বিষয়ে চিত্র প্রদর্শনী, পুরনো ঘণ্টাতলায় রবীন্দ্রসঙ্গীত, গান ও কবিতার মাধ্যমে উৎসব উদযাপন করা হতো। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গুরুদেবকে স্মরণ করা এখানের রীতি। কিন্তু গতবছর মার্চ মাস থেকে বন্ধ বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাস। অনলাইনে পঠন–পাঠন হলেও দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্যাম্পাস পড়ুয়া শূন্য অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু এবার গত ১৭ এপ্রিল থেকে ৯ মে রবিবার পর্যন্ত বিশ্বভারতীর বিভিন্ন ভবন, সদন, সেন্টার, অফিস বন্ধ করা হয়েছে। তবে পানীয় জল, বিদ্যুৎ, হাসপাতাল ও স্যানিটাইজেশন প্রভৃতি জরুরি পরিষেবা চালু থাকবে বলে বিশ্বভারতীর বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, করোনাভাইরাসের প্রেক্ষিতে বিশ্বভারতীর অনেক কর্মী, অধ্যাপক করোনা আক্রান্ত হয়ে এখনও হাসপাতালে ভর্তি। এই অবস্থায় রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উদযাপন করা সম্ভব হবে না। তবে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী রবীন্দ্র ভবনের উদয়ন বাড়ির কবিকক্ষে কবির ব্যবহৃত চেয়ারে পুষ্পার্ঘ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন বলে খবর। যদিও এই ব্যাপারে বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।