১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়ে বাংলা রাজনৈতিক চাপানউতোর বেশ কয়েকদিন ধরেই চলছে। কেন্দ্রকে এই নিয়ে দুষছে রাজ্যের শাসকদল। আবার বিরোধী দল বিজেপির অভিযোগ, দুর্নীতির কারণেই কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না রাজ্যকে। এই সবের মাঝেই ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তদন্তে নামল ইডি। আর মঙ্গলবার সকাল থেকেই বাংলার ৪ জেলায় অভিযান চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। সল্টলেকের একটি আবাসন, ঝাড়গ্রামের এক সরকারি আধিকারিকের কোয়ার্টারে, হুগলির চুঁচুড়ায় এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে এবং মুর্শিদাবাদের একটি জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছেন ইডি আধিকারিকরা।
এর মধ্যে ঝাড়গ্রামে যাঁর বাড়িতে হানা দেওয়া হয়েছে, তিনি ডাব্লুবিসিএস অফিসার বলে জানা গিয়েছে। নাম শুভ্রাংশু মণ্ডল। তিনি জেলার সংখ্যালঘু দফতরের কর্তব্যরত আধিকারিক। ঝাড়গ্রাম শহরের বাছুরডোবা এলাকায় একটি সরকারি আবাসনে তিনি থাকেন। আজ সকাল থেকেই ওই আবাসন ঘিরে ফেলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। পরে ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশের কাছে খবর যায়। পুলিশ আধিকারিকরা অবশ্য ঘটনাস্থলে গেলেও তাঁদের আবাসনে ঢুকতে দেয়নি কেন্দ্রীয় বাহিনী। রাজ্যে ১০০ দিনের কাজে জাতিগত শংসাপত্র নিয়ে কারচুপির বিষয়ে তদন্ত করতেই শুভ্রাংশুর বাড়িতে ইডি হানা দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এছাড়া সল্টলেকের যে আবাসনে ইডি অভিযান চালাচ্ছে, সেখানে ধনেখালির প্রাক্তন বিডিও এসকে পান থাকেন বলে জানা গিয়েছে। এদিকে মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরে এক বহিষ্কৃত পঞ্চায়েতকর্মী রথীন দে-র বাড়িতে হানা দিয়েছে ইডি। চুঁচুড়ার ময়নাডাঙায় সন্দীপ সাধুখাঁ নামে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে গিয়েছেন ইডি আধিকারিকরা।
জানা গিয়েছে, ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ এর আগে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা থানায় দু’টি এবং হুগলির ধনেখালি থানা সহ রাজ্যে আরও দুই থানায় এফআইআর দায়ের হয়েছিল। সেই পাঁচটি এফআইআর-এর ভিত্তিতে ইসিআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে ইডি।
এদিকে এসবের মাঝেই আজ আবার বর্তমান পত্রিকায় একটি খবর প্রকাশ করে দাবি করা হয়েছে, মমতা জমানায় রাজ্য সরকার সব ইউটাইজেশন সার্টিফিকেট দিয়েছে কেন্দ্রকে। এই আবহে মনরেগা প্রকল্পের ডিরেক্টর ধরমবীর ঝাঁর তিনটি চিঠি উদ্ধৃত করে সেই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ২০২১ সালের ২২ জুন একটি এবং ২০২১ সালেরই ১৪ ডিসেম্বর দু'টি চিঠি লিখে মনরেগা প্রকল্পের ডিরেক্টর দাবি করেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের সব ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট জমা পেড়েছে। এই সংক্রান্ত কোনও কাজ বাকি নেই। এই আবহে রাজ্য বিধানসভায় বাজেট অধিবেশন চলাকালীন তৃণমূল কংগ্রেস এই তিনটি চিঠিকে হাতিয়ার করে ১০০ দিনের কাজের টাকার বঞ্চনা নিয়ে সরব হবে বলে জানা যাচ্ছে।