২০২৪ সালের শুরুতেই আবার ঝোড়ো অভিযানে নামল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। রেশন দুর্নীতি কাণ্ডের জাল গোটাতে বনগাঁর শিমুলতলায় এজেন্সি হানা দিয়েছে। ভোরের আলো ফুটতেই আজ, শুক্রবার প্রাক্তন পুরপ্রধানের শ্বশুরবাড়িতে হানা দেয় কেন্দ্রীয় সংস্থা। এর আগেও শঙ্কর আঢ্যকে তলব করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তবে তিনি গরহাজির ছিলেন। এবার সাঁড়াশি চাপ শুরু হয়েছে। বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যর শ্বশুর বিনয় কুমার ঘোষের বাড়িতে পৌঁছন ইডি অফিসাররা। একই সময়ে আর একটি তদন্তকারী দল সন্দেশখালির এক তৃণমূল কংগ্রেস নেতার বাড়ির কাছে পৌঁছয়। ওই তৃণমূল কংগ্রেস নেতার নাম শাহজাহান শেখ।
এদিকে এই শঙ্কর এবং শাহজাহান দু’জনেই প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে জানতে পেরেছে ইডি। ইডি সূত্রে খবর, রেশন দুর্নীতির মামলাকে কেন্দ্র করেই ওই দুই জায়গায় হানা দেওয়া হয়েছে। জেলবন্দি আছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এবার ইডি র্যাডারে শাহাজাহান শেখ এসে গিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস নেতার বাড়িতে হানা দেন তদন্তকারীরা। কেন্দ্রীয় বাহিনীতে ছয়লাপ হয়েছে এলাকা। তবে রেশন দুর্নীতির শিকড় আরও গভীরে গিয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। মন্ত্রীকে জালে আগেই তুলেছে ইডি। এবার স্ক্যানারে শাগরেদরাও। সাতসকালেই পরপর গাড়ি এসে হাজির। দুই ২৪ পরগনায় আজ অভিযানে নেমেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। দক্ষিণ ২৪ পরগণা সরবেড়িয়া থেকে বনগাঁ—কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপেই খানাতল্লাশি করছে ইডি।
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে খবর, লোকসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে ততই এইসব ধরপাকড় বাড়বে। দাপট দেখাবে ইডি–সিবিআই–আয়কর দফতর। বনগাঁর শিমুলতলায় শঙ্কর আঢ্যর শ্বশুরবাড়িতে হানা দেয় ইডি। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সেখানে তল্লাশি অভিযান চলছে। জ্যোতিপ্রিয়র হাত ধরেই রাজনীতির ময়দানে প্রবেশ করেন শঙ্কর। ২০০৫ সালে প্রথম বনগাঁ পুরসভার কাউন্সিলর হন। পরে বনগাঁ পুরসভার পুরপ্রধান হন। শঙ্কর আঢ্যর স্ত্রী জ্যোৎস্না আঢ্যও পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। দুটি টিম গিয়েছে উত্তর পরগনার বনগাঁর দিকে, কলকাতায় আছে চারটি টিম। এছাড়া বাসন্তী হাইওয়ে ধরে এগিয়ে গিয়েছে ৯টি টিম।
আরও পড়ুন: আবার নতুন বছরে আর্থিক বঞ্চনা কেন্দ্রের, স্বাস্থ্য মিশনে ১৩০০ কোটি দিল রাজ্য সরকার
এছাড়া ইডির তদন্তকারীরা সেখানে পৌঁছলে বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। ইডি অফিসারদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা। কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। জওয়ানদের উপর আক্রমণ করা হয়। স্থানীয় মানুষজন ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান। ইডির গাড়ি ঘেরাও করেন তাঁরা। অকুস্থল থেকে ফিরে যেতে চাপ বাড়ান তাঁরা। রেশন দুর্নীতি মামলায় এই দুই তৃণমূল কংগ্রেস নেতার যোগ থাকলেও থাকতে পারে। সেটা খতিয়ে দেখতেই দুই তৃণমূল কংগ্রেস নেতার বাড়িতে ইডি হানা দিয়েছে বলে সূত্রের খবর। ভোরের আলো ফোটার আগেই একে একে ইডির ১৫টি টিম রওনা দেয়। গাড়িগুলি পৌঁছে যায় কলকাতা বিমানবন্দরের পার্কিংয়ের কাছে। সেখানে সবকটি টিম একত্রিত হওয়ার পর রওনা হয় নানা দিকে। সঙ্গে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।