সোমবার বিকেলে আচমকা বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে পশ্চিম মেদিনীপুর দাঁতনের রসুলপুর গ্রাম। ঘটনায় অন্তত পাঁচজন গুরুতর জখম হয়েছেন। পুলিশের অনুমান, যে ঘরে বিস্ফোরণ ঘটে তাতে বোমা বাঁধার কাজ চলছিল। বিজেপি–র অভিযোগ, ঘরটি এক তৃণমূলকর্মীর। এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করতেই বোমা বাঁধার কাজ চলছিল ওই ঘরে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের দাবি, ওই ঘরটির ওপর বোমা নিয়ে হামলা চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা।
পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, এ ঘটনায় পাঁচজন জখম হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে কিছু নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। মনে হচ্ছে, বোমা বিস্ফোরণ হয়েই ঘটনাটি ঘটেছে। তদন্ত চলছে। এদিন বিস্ফোরণের তীব্রতা এতাই ছিল যে রসুলপুরের ওই ঘরের চাল উড়ে যায়। গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, ঘরটি রেয়াজেট মল্লিক ওরফে টিঙ্কু নামে এক তৃণমূলকর্মীর। অভিযোগ, ওই ঘরেই চলছিল বোমা বাঁধার কাজ। টিঙ্কু মল্লিক–সহ ৫ তৃণমূলকর্মীকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে গ্রামবাসীরা। তাদের মধ্যে চারজনকে স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে পাঠানো হয় মেদিনীপুর মেজিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহত এক তৃণমূলকর্মীর হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
এদিকে, ঘটনাকে ঘিরে তৃণমূল–বিজেপি চাপানউতোর শুরু হয়েছে। জেলা সভাপতি অজিত মাইতির অভিযোগ, ‘বিজেপি রীতিমতো ভয় পেয়ে গিয়েছে। কারণ, দাঁতন বিধানসভা সম্মেলনে খুব ভাল সাড়া পেয়েছে তৃণমূল, জনসমাগম হয়েছে। এটা দেখে ওরা আক্রমণ করেছে।’ দাঁতন ২ নম্বর ব্লকের বিজেপি পশ্চিম মণ্ডলের সভাপতি মানস ভুঁইয়ার পাল্টা অভিযোগ, ‘তৃণমূলের কাজই হচ্ছে এখানে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করা। ওরা বোমা বাঁধবে, সন্ত্রাস করবে, কিন্তু দোষ দেবে বিজেপি–র ওপর। আর আমাদের নামে মিথ্যা কেস দেবে।’
সোমবারই বিস্ফোরণস্থল খতিয়ে দেখেন দাঁতন থানার আইসি সুব্রত মজুমদার। ওই ঘরে বোমা বাঁধা হচ্ছিল নাকি কেউ হামলা চালিয়েছে— সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার।
২০২১–এ পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। আর তার আগে এ নিয়ে রাজ্যে এমন বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সেপ্টেম্বর মাসেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় অভিযোগ করেন, বেআইনি বোমা তৈরির কারখানা হয়ে উঠেছে এই রাজ্য। অক্টোবর মাসে কলকাতার বুকে বেলেঘাটায় স্থানীয় একটি ক্লাবে বিস্ফোণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে শহরে। এমনকী বিজেপি তাতে এনআইএ তদন্তের দাবি করে।