একেবারে গাড়ি থেকে নেমে পুলিশ আধিকারিককে কড়া ধমক রাজ্যপালের। কোচবিহারের দিনহাটার এই ঘটনাকে ঘিরে শোরগোল বিভিন্ন মহলে। কিন্তু কোন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জল এতদূর গড়াল? বিভিন্ন সূত্রে খবর,ভোট পরবর্তী হিংসার একাধিক ঘটনার অভিযোগ উঠেছে কোচবিহারে। সেই আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলতে বৃহস্পতিবার কোচবিহারে যান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এদিকে তাঁর এই সফরকে ঘিরে রাজ্যের সঙ্গে ফের সংঘাত চরমে উঠেছে। এসবের মধ্যেই একেবারে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা কোচবিহারের দিনহাটায়। এদিন দিনহাটার রাস্তা ধরে যাচ্ছিল রাজ্যপালের কনভয়। বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকও অন্য গাড়িতে ছিলেন। এদিকে দিনহাটায় রাস্তার ধারেই দাঁড়িয়ে কয়েকজন তৃণমূল কর্মী হাতে পোস্টার নিয়ে কার্যত রাজ্যপালকে নিশানা করে গো ব্যাক স্লোগান দিচ্ছিলেন।
এই দৃশ্য দেখে প্রথমে গাড়ির ভেতর থেকেই বিষয়টি জানতে চান রাজ্যপাল। এরপরই গাড়ি থেকে সটান নেমে পড়েন তিনি। রাজ্যপালকে সামনে দেখে কিছুটা থমকে যান বিক্ষোভকারীরা। রাজ্যপাল প্রশ্ন করেন, এটা কী হচ্ছে? একজন বিক্ষোভকারী বলেন, ওরাও আমাদের উপরেও হামলা চালিয়েছে। এনিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তে থাকে ক্রমশ। পুলিশ কোনওরকমে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এরপরই রাস্তায় দাঁড়িয়ে আইসির খোঁজ শুরু করেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন,' রাজ্যপালের সামনে এমন হতে পারে? বার বার বলছি আইসি কোথায়? আপনি আইসি? এটা কী হচ্ছে? এরকম হতে পারে?' রাজ্যপালের প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ আধিকারিক বলেন, 'আপনি কোচবিহারের দিকে যাবেন বলে খবর ছিল।' এরপর রাজ্যপাল বলেন, ‘আপনার কাছে এত অজুহাত রয়েছে। অথচ আইন শৃঙ্খলা কেন মানা হচ্ছে না সেব্যাপারে কোনও অজুহাত নেই। পুলিশ ব্যর্থ। আমার গাড়ি কোথায় যাচ্ছে আপনাদেরও জানা দরকার। গভর্নরের গাড়ি এভাবে আটকানো যায়? আমি মর্মাহত। আইন ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। আমি ভাবতে পারছি না,এমন হতে পারে। এটা পরিকল্পিত। আটজন লোকের এত ক্ষমতা? তারা আইন ভাঙছে।’ এরপর পুলিশ কোনওরকমে বিক্ষোভকারীদের তাড়া করে সরিয়ে দেয়। নিশীথ প্রামাণিককে আঙুল উঁচিয়ে বিক্ষোভকারীদের দিকে তেড়ে যেতে দেখা যায়।
গোটা ঘটনায় প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ রাজ্যপাল আইসিকে ধমকাচ্ছেন। উসকানিমূলক কথাবার্তা বলছেন। আবার অশান্ত হতে পারে কোচবিহার।’ বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী বলেন, ‘এভাবে রাজ্যপালকে আটকানো যায়না। বিষয়টি বুঝতেই পারছেন না ওরা।’